সরকারের সঙ্গে সমঝোতা প্রস্তাবে রাজি খালেদা জিয়া
সরকারের সঙ্গে সমঝোতা প্রস্তাবে রাজি হলেন খালেদা জিয়া
সরকারের সঙ্গে খসড়া সমঝোতা প্রস্তাবে সংশোধন সাপেক্ষে রাজি হলেন বেগম খালেদা জিয়া। আজ বুধবার বিকেলে কেন্দ্রীয় কারাগারে দলের আট সিনিয়র নেতার সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি এই সম্মতি জানান। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কারা অভ্যন্তরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নজিরবিহীন বৈঠকের অনুমতি দেয়। এর আগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের সঙ্গে এরকম বৈঠকের ব্যবস্থা করেছিল ১৯৯১ এর বিএনপি সরকার।
বুধবার বিকেল ২টা ৫০ মিনিটে কারাগারে পৌঁছান বিএনপি নেতারা। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে সাক্ষাতকারী অন্যান্য নেতারা হলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, মির্জা আব্বাস, আমির খসরু মাহমুদ, ড. মঈন খান এবং বেগম জিয়ার একান্ত মহাসচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার।
সমঝোতা নিয়ে আলোচনা
বেগম জিয়ার মুক্তির বিষয়ে চলমান সমঝোতা বজায় নিয়ে আলোচনার জন্যই বিএনপির এই আট নেতা কারাগারে যান। বেগম জিয়া ৫ দফা সমঝোতার ব্যাপারে নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। এই পাঁচ দফার প্রথম দফায় ছিল বেগম জিয়ার জামিন এবং জামিন নিয়ে লন্ডন যাওয়া, আগামী নির্বাচনে অংশ না নেওয়া, বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণ, বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা স্থগিত, মামলা ও হয়রানি বন্ধ করা এবং বেগম জিয়ার জন্য ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা।
৫ দফা সমঝেতার ব্যাাপারে বিএনপি নেতাদের মতামত
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, বেগম জিয়া ৫ দফা সমঝেতার ব্যাাপারে বিএনপি নেতাদের মতামত জানতে চান। সবার পক্ষ থেকে মির্জা ফখরুল বলেছেন,‘আপনি আমাদের নেতা, আপনি যেভাবে বলবেন, সেভাবেই হবে।’ এরপর বেগম জিয়া খসড়া সমঝোতা প্রস্তাবের দ্বিতীয় ধারায় সংশোধনীর প্রস্তাব করেন, দ্বিতীয় দফায় ছিল,‘ বেগম জিয়া বা জিয়া পরিবারের কেউ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবেন না।’ বেগম জিয়া ওই ধারায় বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমাকে যদি হাইকোর্ট অযোগ্য না করে, তাহলে বিদেশে থেকেই আমি নির্বাচন করতে চাই।’ বিএনপি নেতারা এ ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব দেখান। বেগম জিয়া তাঁর একান্ত সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন এই বিষয়টি যেন শামীম ইস্কান্দারকে জানানো হয়। সরকার এবং বিএনপির সমঝোতা হলে, জামিন পাওয়ার পরই বেগম জিয়া মুক্ত হবেন। মুক্ত হয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য জন্য লন্ডনে যাবেন।
বেগম জিয়াকে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ জানান, ‘রোববার নাগাদ নিন্ম আদালতের নথি হাইকোর্টে পৌছাবে। এরপরেই তাঁর জামিনের প্রক্রিয়া শুরু হবে। বেগম জিয়া বলেন, ‘আমি জানি, সমঝোতা না হলে অন্য মামলায় ওরা আমাকে গ্রেপ্তার দেখাবে।’ বেগম জিয়া কারও নাম উল্লেখ না করে, তাঁর পুত্র তারেক জিয়াকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘কারও উস্কানিতে পা দেবেন না, এখন হঠকারিতার সময় নয়। কর্মসূচি যেন হয় শান্তিপূর্ণ।’
সাক্ষাৎ শেষে বেরিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বেগম জিয়া সুস্থ আছেন। তিনি দেশ ও জনগণের স্বার্থে যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত।’মির্জা ফখরুল এটাও বলেছেন, ‘বেগম জিয়া শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যেতে বলেছেন। কারও উস্কানিতে পা না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।’