fbpx

রায়পুরে গ্রাম পুলিশের মানবেতর জীবন যাপন

রায়পুরে গ্রাম পুলিশের মানবেতর জীবন যাপন স্বল্প আয়ের বেতনে থমকে যাচ্ছে সংসারের চাকা

দেলোয়ার হোসেন মৃধা, লক্ষ্মীপুরঃ দিনের পর দিন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য বৃদ্ধি হলেও দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে বেতন বাড়েনি গ্রামাঞ্চলে আইনশৃঙ্খলার কাজে নিয়োজিত গ্রাম পুলিশদের। মাত্র ১৯শ’ টাকা বেতনের চাকরি করে সংসারে চাকা থমকে যাচ্ছে তাদের। দ্রব্যমূল্যের বাজারে অর্থের অভাবে জীবন প্রদীপ নিভে যাচ্ছে জেলার ৫টি থানার ৫০ ইউনিয়নের ৫ শতাধিক চৌকিদার দফাদারের। দীর্ঘ চাকুরী জীবনের শেষে কোন অর্থ-কড়ি না পেয়ে রোগে শোকে ভুগে মারা যাচ্ছে। অনেকেই জীবন বাঁচাতে পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় যোগ দিচ্ছে।

gram police

গ্রামীণ জনপদে আইনশৃঙ্খলার কাজেকাজেই নিয়োজিত অতন্দ্র প্রহরী এ গ্রামপুলিশ। গ্রামাঞ্চলে এদেরকে কেউ চৌকিদার বলে, কেউ বলে দফাদার ও মহলাদার। লক্ষ্মীপুরে ৫০ টি ইউনিয়নের ৭৬৫ টি গ্রামে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে প্রায় ৫ শতাধিক জন মহল্লাদার ও দফাদার। একজন গ্রামপুলিশকে দিনের বেলায় গ্রামের একাধিক দেন-দরবারে উপস্থিতি থেকে শুরু করে বাদী-বিবাদীকে বাড়ি থেকে ডেকে আনাসহ ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারদের অসংখ্য আদেশ-নির্দেশ পালনের পাশাপাশি রাতে সমাজ বিরোধী আর চোর-ডাকাতের হাত থেকে গ্রামবাসীকে রা করার দায়িত্বে নিয়োজিত থাকতে হয়। এছাড়া তাদের ওপর প্রতি সপ্তাহে উপজেলায় এসে পুলিশের কাছে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিশদ রিপোর্ট করতে হয়। অথচ এত কঠোর দায়িত্ব পালনের পরও মাস শেষে একজন গ্রামপুলিশ (মহল্লাদার) বেতন পায় ১৯শ’ টাকা আর দফাদার বেতন পায় ২১শ’ টাকা। অনেক আন্দোলন-সংগ্রামের পর তাদের এ বেতন শুরু হয়েছে।

তাও আবার অর্ধেক দেয় সরকার আর অর্ধেক দেয় ইউনিয়ন পরিষদ। বর্তমান দব্যমূল্যের বাজারে একটি পরিবারের ভরণ-পোষণ করা যেখানে সম্ভব হচ্ছে না, সেখানে এ স্বল্প পরিমাণ বেতনের টাকাও বকেয়া পড়ে রয়েছে অনেকের। এ অবস্থায় তাদের জীবনযাপন করা অত্যান্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে গ্রামীণ হাটবাজার ইজারা ও হোল্ডিং ট্যাক্সের টাকা থেকে মহল্লাদার ও দফাদারদের বেতন ভাতা পরিশোধ করার কথা। কিন্তু এ বছর হাট-বাজার ইজারা দেয়া হলেও ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মহল্লাদার ও দফাদারগণ মাসিক বেতন-ভাতাদি পাচ্ছে না। দিনের পর দিন ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে ধরনা দিয়েও বকেয়া বেতনের টাকা আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না।

এ ছাড়া প্রতিবছর ইউনিফর্ম, জুতা, মোজা, ক্যাপ ও বেজ দেয়ার কথা থাকলেও তা সঠিক সময়ে সরবরাহ করা হয় না। ফলে মহল্লাদার ও দফাদারগণ মলিন ইউনিফর্ম ছেঁড়া-ফাটা জুতা, ছাতা ও টর্চ লাইটবিহীন অবস্থায় গ্রামীণ জনপদে কাজ করতে হচ্ছে। তাদের স্বল্প বেতন পরিবারের জন্য আরো বোঝা হয়ে দাড়িয়েছে। এ স্বল্প বেতন দিয়ে তারা না পারছে সংসার চালাতে না পারছে সন্তান-সন্ততিদের লেখাপড়াসহ ভরণ-পোষণ দিতে। এ অবস্থায় তাদের জীবনযাপন করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। কয়েক দফা আন্দোলনের পর তাদের বেতন হয়েছে এখন ১৯শ’ টাকা।

আরো বাড়াবে সরকার এ আশায় এখনও হাল ধরে আছে অনেক গ্রাম পুলিশ। তাদের চাকরি ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের মতো অন্তর্ভুক্ত হবে এ আশায় অনেকেই কাজ করে চলেছে। গ্রাম পুলিশের বর্তমান অসহায় অবস্থার কথা বিবেচনায় এনে তাদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ মাস শেষে সরকারি-বেসরকারি অংশের বেতন-ভাতা নিয়মিত পরিশোধ করে তাদের জীবন মান উন্নয়নে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন এ দাবি রায়পুরের গ্রাম পুলিশদের।

 

currentbdnews24.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *