টাঙ্গাইল থেকে শুরু
প্রথমবারের মতো বন্দিদের ফোনালাপের সুযোগ
প্রথমবারের মতো বন্দিদের ফোনালাপের সুযোগ
দেশে এই প্রথম বন্দিরা কারাগার থেকে তাদের স্বজনদের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে পারবেন। টাঙ্গাইল জেলা কারাগারের বন্দিরা স্বজনদের সঙ্গে ফোনে কথা বলার মধ্য দিয়েই এই কর্মসূচি শুরু হচ্ছে।
প্রথমবারের মতো ফোনালাপের কার্যক্রম বুধবার দুপুর ১২টায় উদ্বোধন করবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। ‘স্বজনের সাথে সংশোধনের পথে’ শ্লোগনকে সামনে নিয়ে টেলিফোনে কথা বলা এই কার্যক্রমের নামকরণ করা হয়েছে ‘ স্বজন পরিবারের বন্ধন।’
জেলা কারাগার সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) এর সার্ভিস ইনোভেশন ফান্ড ও বাংলাদেশ জেল এর সহায়তায় এ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এই কার্যক্রমের আওয়তায় বন্দিরা (হাজতি ও কয়েদি) কারাগারে আসার পর তাদের কাছ থেকে তাদের স্বজনদের দুটি মোবাইলফোন নম্বর রাখা হবে। মাসে একজন বন্দি দুইবার ১০ মিনিট করে কথা বলার সুযোগ পাবেন। কথা বলার ক্ষেত্রে নারী, বৃদ্ধ ও বন্দিদের সঙ্গে আসা শিশুদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
মঙ্গলবার দুপুরে টাঙ্গাইল কারাগারে গিয়ে দেখা যায়, কারাগারের ভেতর একটি কক্ষে চারটি ফোন বুথ তৈরি করা হয়েছে।
কারাগারের জেলার আবুল বাশার জানান
কারাগারের জেলার আবুল বাশার জানান, কোনো বন্দি সরাসরি বুথে গিয়ে কথা বলতে পারবেন না। নির্ধারিত সময়ে বন্দিরা বুথে ঢুকে এক বা দুই চাপলে সফটওয়্যার থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অভিষ্ট নম্বরে সংযোগ পাওয়া যাবে। নির্ধারিত সময় ১০মিনিট পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে কল কেটে যাবে। সময় শেষ হওয়ার তিন মিনিট আগে সতর্কসূচক ‘বিপ’ শব্দ হবে।
নির্ধারিত সময়ের পূর্বে বা পরে কল ডায়াল হবে না। শুধুমাত্র নির্ধারিত সময়েই কল করতে হবে। বন্দিদের স্বজনরা নির্ধারিত সময়ে যাতে কথা বলার জন্য প্রস্তুত থাকতে পারেন, সেজন্য আগের দিন তাদের মোবাইলফোনে ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়ে সময় জানিয়ে দেয়া হবে।
এটুআই প্রকল্পের পরামর্শক তানভীর কাদেরের নেতৃত্বে কারাগারে ফোন বুথ ও এর সফটওয়্যার প্রস্তুত করা হয়েছে। বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উদ্বোধনের পর একজন বন্দি তার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলার মধ্য দিয়েই এ কার্যক্রম শুরু হবে।
তানভীর কাদের জানান, ইতিমধ্যেই ফোনে কথা বলার ও এর সফটওয়্যার কার্যক্ষম হয়েছে। মন্ত্রীর উদ্বোধনের মধ্য দিয়েই যা কার্যকর হবে। কারাগারের যে সব কর্মী এই কার্যক্রমে যুক্ত থাকবেন। তাদের প্রত্যেককে পরিচালনার প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
টাঙ্গাইলের জেল সুপার মঞ্জুর হোসেন জানান, বন্দিরা কারাগার থেকে আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে কথা বলতে পারলে তাদের পারিবারিক যোগাযোগ অক্ষুণ্ন থাকবে।
তিনি জানান, বন্দিদের মধ্যে শীর্ষ সন্ত্রাসী, জঙ্গি, নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের সদস্য এবং অপহরণ ও চাঁদাবাজির মামলায় অভিযুক্ত বন্দিরা ফোনে কথা বলার সুযোগ পাবেন না। নিরাপত্তার স্বার্থে বন্দিদের প্রতিটি কল রেকর্ড করা হবে। বুথে সার্বক্ষনিক কারারক্ষী নিয়োজিত থাকবে। এছাড়া বন্দিদের স্বজনরা কোনো এসএমএস পাঠালে তা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে প্রিন্ট করে তা বন্দিদের দেয়া হবে।
গাজীপুর জেলা কারাগারের জেলার ফোরকান ওয়াহিদ এই প্রকল্প বাস্তবায়নে টাঙ্গাইলের জেল সুপারকে সহায়তা করছে।
ঢাকা থেকে টাঙ্গাইল যাওয়ার পথে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সকাল ১১টায় মহেড়া পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে ছয় তলা ভবনের উদ্বোধন করবেন। সাড়ে ১২টায় পুলিশ লাইন হাসপাতাল ভবন ও মহিলা কনস্টেবল ব্যারাকের উদ্বোধন করবেন। বিকাল ৩টায় টাঙ্গাইল শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে জঙ্গি ও মাদক বিরোধী নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।