fbpx

বাহুবলী-দঙ্গলর চেয়ে এগিয়ে ‘পদ্মাবত’

সঞ্জয় লীলা বানসালির ছবি ‘পদ্মাবত’ চাপা উৎকণ্ঠা ও আতঙ্কে বৃহস্পতিবার ভারতজুড়ে মুক্তি পেয়েছে। নানা সমস্যার মধ্য দিয়ে ছবিটি পর্দায় মুক্তি পেয়েছে। হয়েছে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এমনকি প্রাণহানিও। গুরগাঁও আর দিল্লির বেশ কয়েকটি স্কুলও আতঙ্কে বন্ধ ছিল। সিনেমা মুক্তির পর থেকেই বানসালি, দীপিকা পাডুকোনদের পোস্টার পুড়িয়ে গাড়ি জ্বালিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেছেকরনি সেনারা। বিক্ষোভ ও হুমকির মধ্যে বানসালিকে খুনের হুমকিও আছে। এত সব খবরের মধ্যেই দীপিকা-বানসালিরা একটি সুখবর পেলেন। মুক্তির প্রথম দিনে দক্ষিণের অন্যতম জনপ্রিয় তারকা প্রভাসের ‘বাহুবলী টু’র রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে ‘পদ্মাবত’।

ভারতজুড়ে শ্রী রাজপুত করনি সেনার তুমুল বিরোধিতা সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে সঞ্জয় লীলা বানসালির ‘পদ্মাবত’। এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় মাল্টিপ্লেক্সগুলোতে ছিল ‘পেড প্রিভিউ’। হামলার ভয় থাকার পরও সেই প্রিভিউ থেকে প্রায় পাঁচ কোটি রুপি আয় হয়েছে। বলিউডের বাণিজ্য বিশেষজ্ঞদের হিসাব অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার ছবি মুক্তির প্রথম দিনে বক্স অফিস থেকে প্রায় ২০ কোটি রুপি আয় করেছে। ১০ লক্ষাধিক দর্শক এরই মধ্যে ছবিটি দেখেছেন। আর ভারতে চার হাজারের বেশি স্ক্রিনে ছবিটা প্রদর্শন করা হচ্ছে। ‘পদ্মাবত’ কোনো কাটাছেঁড়া ছাড়াই মুক্তি পেতে যাচ্ছে পাকিস্তানেও।

‘পদ্মাবত’-এর পরিচালকের মাথা কেটে আনতে পারলে ৫১ লাখ রুপি নগদ পুরস্কার দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এসবের মধ্যেই রেকর্ডও গড়ে ফেলল দীপিকার এই বহুল আলোচিত সিনেমা। মুক্তির প্রথম দিনই প্রভাসের ‘বাহুবলী টু’-এর রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে ‘পদ্মাবত’। প্রথম দিন থেকেই আন্তর্জাতিক বাজারে ভালো ব্যবসা শুরু করেছে সিনেমাটি।

ভারতের ট্রেড অ্যানালিস্ট তরণ আদর্শের বরাত দিয়ে জি নিউজের খবরে বলা হয়েছে, প্রথম দিনে অস্ট্রেলিয়ায় ১ কোটি ৮৮ লাখের ব্যবসা করেছে ‘পদ্মাবত’। নিউজিল্যান্ডে করেছে ২৯ লাখ ৯৯ হাজার রুপির ব্যবসা। এর পাশাপাশি যুক্তরাজ্য এ সিনেমা ব্যবসা করেছে ৮৮ রাখ ৮ হাজার ডলার। ‘বাহুবলী টু’ এবং আমির খানের ‘দঙ্গল’-এর তুলনায় প্রথম দিনে এ আয় অনেক বেশি। সবকিছু মিলিয়ে মুক্তির প্রথম দিন থেকে বক্স অফিসে দুর্দান্ত শুরু ‘পদ্মাবত’-এর।

১৯০ কোটি রুপি বাজেটের এই ছবি মুক্তি দেওয়ার ফলে দুর্বৃত্তদের হাতে ধ্বংস হচ্ছে কোটি টাকার সম্পদ। ইতিহাস ও কল্পনার মিশেলে তৈরি এই ছবিতে দেখা যাবে দীপিকা পাড়ুকোন, শহীদ কাপুর, রণবীর সিং ও অদিতি রাও হায়দারিকে।

২ ঘণ্টা ৪৪ মিনিটের এ ছবির চরিত্র নির্বাচনের জন্য সঞ্জয় লীলা বানসালিকে বাহবা দিতে হয়। আলাউদ্দিনের মতো উন্মাদ এক সুলতানের চরিত্র রণবীর সিং ছাড়া আর কেউ করতে পারতেন বলে মনে হয় না। এরপর অবশ্যই বলতে হয় দীপিকা পাড়ুকোনের কথা। মেওয়ারের মহারানির আভিজাত্য, গাম্ভীর্য, হাঁটাচলা খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন এ অভিনেত্রী। ছবিতে তাঁর সংলাপ কম ছিল। একটা কথা বলতেই হয়, এই ছবি দীপিকার সেরা কাজ নয়।

শহীদ কাপুর রাজা রাওয়াল রতন সিংয়ের চরিত্রে একদম উপযুক্ত। রণবীরের দাপটের কাছে তাঁকে একটু ম্লান লাগতে পারে। কিন্তু এখানে কিছু করার ছিল না শহীদের। ছবির চিত্রনাট্য তাই। দীপিকা ও শহীদের পর্দার রসায়নও দুর্দান্ত। কোথাও কোথাও অদিতি রাও হায়দারির সৌন্দর্যের কাছে হার মানতে হয়েছে দীপিকাকে। অদিতি যে হায়দরাবাদের রাজঘরানার মেয়ে, সেটা ফুটে উঠেছে পর্দায়। জিম সর্বের অভিনয়ও যথাযথ।

সঞ্জয় লীলা বানসালির মতো করে এভাবে ঐতিহাসিক গল্পকে যথাযথ পর্দায় উপস্থাপনা করার ক্ষমতা এ মুহূর্তে বলিউডের আর কোনো পরিচালকের নেই বলা যায়। ‘পদ্মাবত’ গৌরবময় করবে ভারতের রাজপুত সম্প্রদায়কে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *