fbpx

ঢাকা উত্তরে বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল

সোমবার রাতে খালেদার সভাপতিত্বে বিএনপির মনোনয়ন বোর্ড আগ্রহীদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার পর দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই সিদ্ধান্ত সাংবাদিকদের জানান।

তাবিথকে বেছে নেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে ফখরুল বলেন, যে পাঁচজন প্রার্থী হতে আবেদন করেছিলেন, তাদের মধ্যে ভোটে জয়ী হয়ে আসার মতো প্রার্থী হিসেবে তাবিথকেই দেখছেন তারা।

“আমরা মনে করেছি, হি ইজ দ্য বেস্ট ক্যান্ডিডেট, সবচেয়ে ভালো ক্যান্ডিডেট, ফিটেস্ট ক্যান্ডিডেট। অন্যরাও যোগ্য ছিলে। তার মধ্যে তাবিথকে মনে হয়েছে, এই নির্বাচনে জয়লাভ করার জন্য সবচেয়ে যোগ্য ক্যান্ডিডেট।”

দলীয় সিদ্ধান্ত জানার আগে অন্য প্রার্থীদের সঙ্গে মনোনয়ন বোর্ডে সাক্ষাৎকারে হাজির হয়েছিলেন তাবিথ।

বিএনপি নেত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তাবিথ সাংবাদিকদের বলেন, “দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অনেক আগেই বলেছিলেন যে, আগামীর বাংলাদেশ হবে তরুণদের বাংলাদেশ, আধুনিক বাংলাদেশ। আমরা দেখতে পাচ্ছি, উনি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করলেন।”

তিনি বলেন, নির্বাচনী আইন মেনে তিনি এখনও কোনো ধরনের প্রচার চালাননি। শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমের সামনে আসবেন।

দলে প্রার্থী হতে তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসা অন্য চারজনকে ধন্যবাদও জানান বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাবিথ।

এ সময়ে তিনি নিজে দাঁড়িয়ে পাশে বসা সাবেক সংসদ সদস্য আখতারুজ্জামান রঞ্জনকে চাচা সম্বোধন করে তার সঙ্গে করমর্দন করেন।

আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় এই ভোটে ধানের শীষ প্রতীকে লড়তে আগ্রহী ছিলেন বিএনপির বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন, সাবেক সংসদ সদস্য অবসরপ্রাপ্ত মেজর আখতারুজ্জামান রঞ্জন, ঢাকা উত্তর বিএনপির সভাপতি এম এ কাইয়ুম ও কেন্দ্রীয় সহ প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক শাকিল ওয়াহেদ।

রোববার মনোনয়ন ফরম নেওয়ার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি তাবিথ আওয়াল

গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তাবিথের প্রার্থী হওয়ার অভিজ্ঞতাও বিবেচনায় নেয় বিএনপির মনোনয়ন বোর্ড।

ফখরুল বলেন, “সে গতবার নির্বাচন করেছে, প্রচুর ভোট পেয়েছে। দ্বিতীয়ত, সে হচ্ছে ইয়াং, সে বাইরে বহু দিন ছিল, পড়াশোনা করেছে, অভিজ্ঞতাও হয়েছে।”

২০১৫ সালে ঢাকা উত্তর সিটির প্রথম নির্বাচনে বিএনপির সমর্থন নিয়ে মেয়র প্রার্থী হয়েছিলেন রাজনীতিতে নবিশ তাবিথ। ভোটগ্রহণের মাঝপথে তিনি অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেও ৩ লাখের বেশি ভোট পান।

নির্দলীয় ওই নির্বাচনে তাবিথের চেয়ে ১ লাখ ৩৫ হাজার ভোট বেশি পেয়ে মেয়র হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত আনিসুল হক। তার মৃত্যুতে মেয়র পদে উপ-নির্বাচন হতে যাচ্ছে। ১৮ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন।

তার চার দিন আগে বিএনপি তাদের প্রার্থী ঠিক করল ব্যবসায়ী নেতা মিন্টুর ছেলে তাবিথকে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে আরেক ব্যবসায়ী নেতা আতিকুল ইসলামের নাম বেশি শোনা গেলেও আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত আসবে মঙ্গলবার।

সংসদ নির্বাচনের বছর রাজধানীর এই সিটি নির্বাচনকে গুরুত্বের সঙ্গেই নিচ্ছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। উভয় দলই নিজ নিজ জোট নিয়ে ভোটের লড়াইয়ে নামার ঘোষণা দিয়েছে।

ফখরুল বলেন, “আন্দোলনের অংশ হিসেবেই আমরা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি।”

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দল জোটগতভাবে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিলেও জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মুহাম্মদ সেলিমউদ্দিনও প্রচার চালাচ্ছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহও করেছেন তিনি।

তবে বিএনপি নেতারা আশাবাদী, জামায়াত শেষ পর্যন্ত জোটের সিদ্ধান্ত মেনে বিএনপির প্রার্থীকে মেনে নেবে।

তাবিথের শ্বশুর ইঞ্জিনিয়ার ইস্কান্দার আলী জামায়াতঘেঁষা ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তাবিথ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সহসভাপতি। সম্প্রতি প্যারাডাইস পেপার্সে তাবিথদের পুরো পরিবারের নাম এসেছিল।

গুলশানে খালেদার কার্যালয়ে তাবিথকে বেছে নেওয়ার এই বৈঠকে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মাহবুবুর রহমান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং নির্বাহী এলাকা উত্তর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু ও সাধারণ সম্পাদক আহসানউল্লাহ হাসান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *