fbpx

চৌদ্দগ্রামে জনবহুল এলাকায় পোড়ানো হচ্ছে সড়ক নির্মাণের পিচ!

জনবহুল এলাকায় পোড়ানো হচ্ছে সড়ক নির্মাণের পিচ

কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মুন্সীরহাট ইউনিয়নের দেড়কোটায় বসতবাড়ির পাশের খোলা মাঠ ব্যবহার করে দীর্ঘ ১ মাসেরও অধিক সময় ধরে ক্ষতিকর প্লাস্টিক ও কাপড় পুড়িয়ে রাস্তার কাজে ব্যবহৃত পিচ্ পোড়ানো হচ্ছে। নির্মাণাধীন সড়কটি অনেক দূরে হলেও স্থানীয় জনগণের বাধাকে উপেক্ষা করে চৌদ্দগ্রাম-লাকসাম সড়কের দেড়কোটা নামক স্থানে পিচ্ পুড়িয়ে পরিবেশ দূষণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ক্ষতিকর দ্রব্য পোড়ানোর ফলে বাতাসে কার্বন ডাই-অক্সাইড মিশে মানুষের শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগ সৃষ্টি ও পরিবেশের বিভিন্ন ক্ষতির আশংকা দেখা দিয়েছে। চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার আক্তারুন নাহার আঁখি জানান, ক্ষতিকর প্লাস্টিক পোড়ানোয় সৃষ্ট কার্বন ডাই-অক্সাইডের ফলে মানুষের শ্বাসকষ্ট, এ্যাজমা এমনকি লাঞ্চ ক্যান্সারও হতে পারে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মুন্সীরহাট বাজারের ব্যবসায়ী অলি আহম্মদের মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘ফাতেমা ট্রেডার্স’ টেন্ডার এর মাধ্যমে লাকসাম ও নাঙ্গলকোট উপজেলার কয়েকটি ছোট-বড় সড়কের রাস্তা পাকা করণ ও মেরামতের কাজ করছে। কিন্তু যেখানে রাস্তার কাজ চলছে সেখানে পিচ্ না পুড়িয়ে উপজেলার মুন্সীরহাটের দেড়কোটা ও ছাতিয়ানী গ্রামের মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত তারই মালিকানাধীন “মেসার্স ফাতেমা ব্রিক্স এন্ড ম্যানুফ্যাকচারার” এর পাশে খোলা স্থানে প্লাস্টিক ও গার্মেন্টস্ জুটসহ বিভিন্ন জ্বালানী ব্যবহার করে পিচ্ পোড়াচ্ছে দীর্ঘ এক মাসেরও অধিক সময় ধরে। ফলে পরিবেশের নানা প্রকার দূষণের পাশাপাশি বায়ু দূষণ হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত। যার কারণে পাশ্ববর্তী দুই গ্রামের মানুষের জীবন হয়ে উঠেছে দূর্বিসহ।

চরম ক্ষতি

এতে চরম ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। এ ব্যাপারে দেড়কোটা গ্রামের বাসিন্দা সোলায়মান মিয়াজী, জনি মিয়াজী, জামাল মিয়াজী সহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরো অনেকে জানান, পরিবেশ ও বায়ু দূষণের ফলে এই এলাকায় এখন বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়েছে। স্থানীয় গ্রামবাসীরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘ফাতেমা ট্রেডার্সের’ মালিক অলি আহম্মদের কাছে অভিযোগ করেও এর থেকে কোনো পরিত্রাণ পায়নি। ঘটনার ব্যাপারে সরেজমিন তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া যায়। স্থানীয় ইউপি সদস্য মাহফুজ মজুমদারের সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি বলেন, আমি গ্রামবাসীসহ কয়েকবার অলি আহম্মদের কাছে গিয়ে কাজটি বন্ধ রাখতে অথবা অন্যত্র সরিয়ে নিতে অনুরোধ করেছি। কিন্তু সে এখন পর্যন্ত কোন বাস্তব সম্মত ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। বরং অলি আহম্মদ এখান থেকে পিচ্ পোড়ানোর কাজটি সরিয়ে নেয়ার আশ্বাস দিয়েও তা সরিয়ে নেয়নি এবং বন্ধও করেনি।

এ বিষয়ে মুন্সিরহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহফুজ আলম জানান, পরিবেশ ও মানুষের ক্ষতি করে এবং উন্নয়নের নীতিমালা না মেনে কেউ কাজ করলে অভিযোগের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক অলি আহম্মদের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, বর্তমানে একটি সড়কের কাজ পাশ্ববর্তী মিতল্লা থেকে শ্যামপুর (নাঙ্গলকোট) এলাকায় চলছে। একমাস কিংবা এর বেশি সময় ধরে পিচ্ পোড়ানোর বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন, মাত্র ৬-৭দিন ধরে রাস্তার এসব নির্মাণ সামগ্রী দেড়কোটা এলাকায় পোড়ানো হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *