fbpx

কাঁচের টুকরোর সমুদ্র সৈকত

মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, ষ্টাফ রির্পোটার:  এই কাঁচের টুকরোর সমুদ্র সৈকত নাকি একদিনে তৈরি হয়নি। এর শুরু হয়েছিল একশত বছরেরও বেশি আগে ১৯০৬ সাল হতে। ফোর্ট ব্রাগের বাসিন্দারা তাদের নিত্য ব্যবহার্য বাতিল জিনিসপত্র এই সৈকতে ফেলা শুরু করে দেয়। বাতিল জিনিসের বেশির ভাগই ছিলো অপ্রয়োজনীয় কাঁচের টুকরো এবং বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। কিছুদিন পর পর বাতিল জিনিস খুব বেশি পরিমাণে জমে যাওয়ার পর, দাহ্য জাতীয় বাতিল জিনিসগুলো পুড়িয়ে ফেলা হতো।

তারপর দেখা যায় অন্য এক দৃশ্য। ১৯৪৩ সালের কথা। সৈকতের একটি অংশ কাঁচের ভাঙ্গা টুকরো এবং বর্জ্যে একেবারে ভরে ওঠে। যে কারণে সৈকতের অন্য পাশে তৈরি করা হলো আবর্জনা ফেলার নির্ধারিত স্থান। এরপর ১৯৪৯ সালের এসে এই সৈকতটিও আবর্জনায় ভরে গেলো। এরপর বর্জ্য ফেলার স্থানটি আরও উত্তরে সরিয়ে নেওয়া হয়। তারপর ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত সেটিই ব্যবহৃত হয়।

এরপর এক সময় এসে সমুদ্র সৈকত কাঁচ ও আবর্জনায় ভরে উঠলে ক্যালিফোর্নিয়ার ‘পানি সম্পদ নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর’ এবং শহরের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সৈকতে আবর্জনা ফেলা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করেন। তারপর এই সৈকতটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

সে সময় পুনর্ব্যবহারযোগ্য যন্ত্রাংশগুলো বিক্রি করে দেওয়া হয়। আর বাকি থেকে যাওয়া জিনিসগুলো বছরের পর বছর সৈকতে আছড়ে পড়া ঢেউয়ের সঙ্গে ঘষা লেগে ক্রমেই মসৃণ হতে মসৃণতর ও এক সময় আরও বেশি দ্যুতিময় হয়। এ যেনো এক একটি মহামূল্যবান পাথরে পরিণত হয়।

এর সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ১৯৯৮ সালে গ্লাস বিচ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এর আগের ৫ বছর এক বিরাট সংস্কারকর্ম চালানো হয় এই বিচে। ২০০২ সালে এই সৈকতটিকে ম্যাক্যারিচার স্টেট পার্কের অধীনে আনা হয়। এখন এখানে প্রতিবছর প্রায় ১০ হাজার দর্শনার্থীর আগমন ঘটে থাকে।

কিন্তু দর্শনার্থীরা সংগ্রহে রাখার জন্য কাঁচ তুলে নেওয়ায় আর ঢেউয়ের সঙ্গে ভেসে যাওয়ার কারণে ক্রমাগত কমছে নয়নাভিরাম এই কাঁচ-পাথরের সংখ্যাও। তাই বাধ্য হয়ে কর্তৃপক্ষ দর্শনার্থীদের জন্য কাঁচ সংগ্রহ নিষিদ্ধ করেছে। প্রতিবছর এই সমুদ্র সৈকতে আয়োজন করা হয় গ্লাস ফেস্টিভালের। যেখানে বহু পর্যটক অংশগ্রহণ করেন। পর্যটকরা গ্লাস ফেস্টিভালে অংশ নেন এবং এই নয়নাভিরাম বিচ উপভোগ করেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *