এবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যানসহ তিন জন গ্রেফতার
বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে আরব-বাংলাদেশ (এবি) ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হকসহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) রাজধানীর গুলশান ও মৎস্যভবন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার অন্য দুজন হলেন— ব্যাংকের ফিনান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন অ্যান্ড ট্রেজারি শাখার প্রধান আবু হেনা মোস্তফা কামাল ও ব্যবসায়ী সাইফুল হক। সাইফুল হক এবি ব্যাংকের প্রথম চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপি নেতা এম. মোরশেদ খানের জামাতা।
দুদকের জনসংযোগ শাখার উপ-পরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার মতিঝিল থানায় এই তিন জনসহ আট জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা (নম্বর ৩০ ) দায়ের করা হয়। মামলার বাদী হয়েছেন দুদকের সহকারী পরিচালক গুলশান আনোয়ার খান। মামলার অন্য আসামিরা হলেন— এবি ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম আহমেদ চৌধুরী, ফজলুর রহমান, চট্টগ্রাম ইপিজেড শাখার হেড অব ওবিইউ (অফসোর ব্যাংকিং ইউনিট)মোহাম্মদ লোকমান, হেড অব করপোরেট ট্রেজারি অ্যান্ড এএলএম ও ভিপি মোহাম্মদ মাহফুজ উল আলম এবং সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নূরুল আজিম।
দুদক সূত্র জানায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভুয়া অফসোর কোম্পানিতে বিনিয়োগের আড়ালে ২০ মিলিয়ন ডলার ও কনসালটেন্সি ফি বাবদ ২৫ হাজার মার্কিন ডলার আত্মসাৎ করেন। বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ ১৬৫ কোটি টাকা। এসব অর্থ চট্টগ্রামের অফসোর ব্যাংকিং ইউনিট (ওবিইউ) শাখা থেকে দুবাইয়ে পাচার করা হয়।
সূত্র জানায়, অফশোর ইউনিটের মাধ্যমে চার বিদেশি কোম্পানির নামে ২০ মিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া তিন জনসহ এবি ব্যাংকের অন্তত একডজন কর্মকর্তাকে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক। প্রাথমিকভাবে অর্থ পাচারের বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় গত ২৮ ডিসেম্বর ওয়াহিদুল হকসহ ১২ জনের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।
দুদক সূত্রে জানা যায়, পিজিএফ নামের দুবাইভিত্তিক একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে ২০ মিলিয়ন ডলার ঋণ হিসেবে দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তবে ওই কোম্পানির কোনও কর্মকর্তার নাম বা পরিচয় কাগজপত্রে দেখাতে পারেনি এবি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। বরং ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ওই টাকা ব্যক্তিগত হিসাবে স্থানান্তর করেছে। তিন কিস্তিতে ওই টাকা দুবাইয়ে পৌঁছানোর পর ব্যাংক হিসাব বন্ধ করে দেয় প্রতারক চক্র। এর পরের কোনও তথ্য এবি ব্যাংকের কাছে নেই।
দুদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে খুররাম ও আবদুস সামাদ নামের দুই ব্যক্তি মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া, দুদক ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ও ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তার একাধিকবার দুবাই যাতায়াতেরও প্রমাণ পেয়েছে।