fbpx

আইলো আইলো আইলোরে….. উৎসবে ভরা বৈশাখ আমার আইলোরে….

মোঃ মাহবুবুর আলম , আক্কেলপুর: দিনটি বাংলাদেশে  নববর্ষ হিসেবে বিশেষ উৎসবের সাথে পালিত হয়। এটি বাঙালিদের একটি সর্বজনীন লোকউৎসব হিসাবে বিবেচিত। গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে ১৪ই এপ্রিল অথবা ১৫ই এপ্রিল পহেলা বৈশাখ পালিত হয়। আধুনিক বা প্রাচীন যে কোন পঞ্জিকাতেই এই বিষয়ে মিল রয়েছে। বাংলাদেশের প্রতি বছর ১৪ই এপ্রিল এই উৎসব পালিত হয়। বাংলা একাডেমী কর্তৃক নির্ধারিত আধুনিক পঞ্জিকা অনুসারে এই দিন নির্দিষ্ট করা হয়েছে। এছাড়াও দিনটি বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের সরকারি ছুটির দিন হিসেবে গৃহীত। বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা দিনটি নতুনভাবে ব্যবসা শুরু করার উপলক্ষ হিসেবে বরণ করে নেয়।

 

নতুন বছরের উৎসবের সঙ্গে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কৃষ্টি ও সংস্কৃতির নিবিড় যোগাযোগ। গ্রামে মানুষ ভোরে ঘুম থেকে ওঠে, নতুন জামাকাপড় পরে এবং আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের বাড়িতে বেড়াতে যায়। বাড়িঘর পরিষ্কার করা হয় এবং মোটামুটি সুন্দর করে সাজানো হয়। বিশেষ খাবারের ব্যবস্থাও থাকে। কয়েকটি গ্রামের মিলিত এলাকায়, কোন খোলা মাঠে আয়োজন করা হয় বৈশাখী মেলার। মেলাতে থাকে নানা রকম কুটির শিল্পজাত সামগ্রীর বিপণন, থাকে নানারকম পিঠা পুলির আয়োজন। অনেক স্থানে ইলিশ মাছ দিয়ে পান্তা ভাত খাওয়ার ব্যবস্থা থাকে। এই দিনের একটি পুরনো সংস্কৃতি হলো গ্রামীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন। এর মধ্যে নৌকাবাইচ, লাঠি খেলা কিংবা কুস্তি একসময় প্রচলিত ছিল।

মঙ্গল শোভাযাত্রা

এই শোভাযাত্রায় গ্রামীণ জীবন এবং আবহমান বাংলাকে ফুটিয়ে তোলা হয়। শোভাযাত্রায় সকল শ্রেণী-পেশার বিভিন্ন বয়সের মানুষ অংশগ্রহণ করে। শোভাযাত্রার জন্য বানানো হয় বিভিন্ন রঙের মুখোশ ও বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিকৃতি। ১৯৮৯ সাল থেকে এই মঙ্গল শোভাযাত্রা পহেলা বৈশাখ উৎসবের একটি অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুরে ও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে ১লা বৈশাখ পালিত হচ্ছে। এই দিন সকেলে মঙ্গল শোভাযাত্রা মধ্যদিয়ে দিনটির কার্যক্রম শুরু হয়। মঙ্গল শোভাযাত্রাটি শহরের বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিন করে।

 

আক্কেলপুর উপজেলায় দ: কানুপুর (নওদুয়ারী) নওদুয়ারী সূর্যদয় ক্লাব এর পক্ষ থেকে ১৯৯১ সাল হতে  বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে।

বৈশাখী মেলা উপলক্ষে এই দিন সকালে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী র‌্যালী (মংঙ্গল শোভাযাত্রা) বের করা হয়ে থাকে। র‌্যালী আক্কেলপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রদক্ষিন করে।

র‌্যালীতে গ্রামীন ঐতিহ্য বাহী বিভিন্ন লোক শিল্প প্রদর্শন করা হয়। এলাকার বিভিন্ন স্থানে আলপনা আঁকানো হয়।

 

র‌্যালী শেষে বিকেলে গ্রামবাংলা থেকে হরিয়ে যাওয়া লাঠি খেলা অনুষ্ঠিত হয়। এর পাতা খেলা, যাদু খেলা, ঢেকি খেলা আর ও অনেক খেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলায় বিভিন্ন ধরনের দোকানিরা তাদের জিনিষপত্র বিক্রি করে। এখানে মাটির তৈরি থালা-বাসন, হাড়ি-পাতিল, মাটির তৈরি পুতুল, হরেক রকমের বেলুন। মেলায় অনেক রকমের মিষ্টান্য ভান্ডার এর আসর বসে।

দিন শেষে রাতে শুরু হয় গ্রামবাংলা থেকে হরিয়ে যাওয়া পালাগান। সারারাত ব্যাপি এ পালাগান চলে। বৈশাখী মেলা উপলক্ষে গ্রমে বেড়াতে আসে তাদের আত্বিয়-স্বজন। এলাকাতে তখন যেন আনন্দের রোল পরে।

বাংলাদেশ এবং ভারত ছাড়াও পৃথিবীর আরো নানান দেশে পহেলা বৈশাখ উদযাপিত হয়ে থাকে। মূলত প্রবাসী বাঙ্গালীরা সেসব দেশে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করে থাকেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *