দিনটা পুরোপুরিই দক্ষিণ আফ্রিকার
দিনটা পুরোপুরিই দক্ষিণ আফ্রিকার ছিল। কে জানে আতিথেয়তার দায় মেটাতেই কি না, ভারতকে ম্যাচে ফেরানোর দায়িত্ব বুঝে নিল স্বাগতিক দল। মাত্র ৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বসল প্রোটিয়ারা। ৬ উইকেটে ২৬৯ রান করে প্রথম দিন শেষ করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। টসে জিতে ব্যাটিং বেছে নেওয়ার সময় এমন কিছু নিশ্চয় মাথায় ছিল না ফাফ ডু প্লেসির।
টসের মুহূর্তেই চমকে দিয়েছেন বিরাট কোহলি। আগের ম্যাচের সেরা তিন পারফরমারের দুজনকে ছাড়াই সেঞ্চুরিয়নে নেমেছে ভারত। সে সিদ্ধান্ত ভুল কি না সেটা প্রথম দিনেই বলা ঠিক না, তবে আজ অন্তত সঠিক মনে হচ্ছে না। কেপটাউনে ৬ উইকেট পেয়েছেন ভুবনেশ্বর কুমার। দলের সেরা বোলারও এই সুইং বোলার। কিন্তু সেঞ্চুরিয়নের পিচে ভুবিকে মনে ধরেনি টিম ম্যানেজমেন্টের। তাঁর জায়গায় ঢুকেছেন ইশান্ত শর্মা। কপালগুণে এবি ডি ভিলিয়ার্সকে আউটও করেছেন ইশান্ত। কিন্তু যে উদ্দেশ্যে তাঁকে নেওয়া, সেই গতি কিংবা বাউন্স কোনোটাই দেখা যায়নি ইশান্তের কাছ থেকে।
প্রথম টেস্টে ১০টি ক্যাচ ধরে পেসারদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছেন ঋদ্ধিমান সাহা। কিন্তু ব্যাট হাতে ব্যর্থতা তাঁকে দল থেকে ছিটকে দিয়েছে। তাঁর বদলি হিসেবে এক বছর পর টেস্ট খেলতে নামলেন পার্থিব প্যাটেল। সেঞ্চুরির অপেক্ষায় থাকা মার্করামের ক্যাচটাও ধরেছেন। তবে ভারতকে পোড়াবে তাঁর ক্যাচ ফেলা। ফর্মের জন্য লড়তে থাকা হাশিম আমলাকে ৩০ রানেই ফিরে যেতে হতো। কিন্তু ইশান্তের বলে লেগ সাইডের ক্যাচটা হাতে জমাতে পারেননি প্যাটেল।
প্যাটেলের উপহার কাজে লাগিয়ে ৮২ রান করেছেন আমলা। আউট হওয়ার দায়টা অবশ্য ডু প্লেসির কাঁধে ফেলতে পারেন আমলা। হার্দিক পান্ডিয়ার একটি শর্ট বল ব্যাকফুটে খেলেছিলেন। ডু প্লেসির ডাক শুনে দৌড় দিয়েছিলেন। কিন্তু পান্ডিয়ার দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে আর অন্য প্রান্তে সময়মতো পৌঁছাতে পারেননি। খানিক পরেই আরেকটি শর্ট বলে অমনই এক পাগুলে দৌড়ে রান আউট হয়েছেন ফিল্যান্ডার। এবার অবশ্য ডু প্লেসির কোনো দায় ছিল না। এর মাঝেই মাত্র এক বল খেলেই অশ্বিনের বলে আউট হয়েছেন ডি কক। ৩ উইকেটে ২৪৬ রান থেকে মুহূর্তেই ৬ উইকেটে ২৫১ রান! দলের একমাত্র ভরসা হয়ে ২৪ রানে অপরাজিত অধিনায়ক ডু প্লেসি।
এর আগে ভারতের ওপর অত্যাচার করার দায়িত্ব বুঝে নিয়েছিলেন দুই ওপেনার। ডিন এলগার ও এইডান মার্করামের জুটিটা ভাঙে ৮৫ রানে। বিস্ময়করভাবে উদ্বোধনী জুটি ভাঙার কাজটা করেছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। মার্করামকে টেস্টে দ্বিতীয় নার্ভাস নাইনটিজের (৯৪) স্বাদ দেওয়াটাও ছিল তাঁর। তবে এর চেয়েও বিস্ময় জাগিয়েছে, প্রথম বলেই অশ্বিনের বলের দুর্দান্ত টার্ন। অথচ উইকেটে স্পিনারদের জন্য কিছু ছিল না বলে আগের ম্যাচেই মাত্র ৮ ওভার বল করেছিলেন এই অফ স্পিনার। সেঞ্চুরিয়নের উইকেট আরও বেশি পেস-বান্ধব করার কথাই শোনা গিয়েছিল। অশ্বিনের ৩ উইকেট প্রাপ্তি অবশ্য অন্য কিছু বলছে।
সেটা কি ভারতীয়দের বিভ্রান্তিতে ফেলার জন্য বলা নাকি শামি-ইশান্তরা ব্যর্থ, সেটা দক্ষিণ আফ্রিকার বোলিংয়ের আগে বলা যাচ্ছে না। তবে কোহলি আশা করবেন, তাঁর তৃতীয় পরিবর্তন অন্তত হতাশ করবেন না তাঁকে। পরিবর্তনের ঢেউয়ে পাল ওড়ানো ভারত যে শিখর ধাওয়ানের পরিবর্তে লোকেশ রাহুলকে নিয়ে নেমেছে এ টেস্টে।