fbpx

ক্ষুদার তাড়নায়

মৃত মায়ের আঙ্গুল চুষে ০৩ দিন কাটাল শিশু নাহিদ

দেড় বছরের শিশু নাহিদ। তিনদিন ধরে তালাবদ্ধ ঘরে কান্না করতে করতে যেন চোখের পানিও শুকিয়ে গেছে শিশুটির।

কোনো খাবার না পেয়ে মৃত মায়ের আঙ্গুল চুষে খাচ্ছিল শিশুটি। দুর্গন্ধে ভরে গেছে পুরো ঘর। ঘরের বিশ্রী গন্ধ আর ক্ষুধার তাড়নায় অনবরত কান্না করতে থাকে শিশুটি। অবশেষে কান্নার শব্দ শুনতে পেয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রতিবেশীরা।

রোমহর্ষক এ ঘটনাটি ঘটেছে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার কোতালেরবাগ বৌবাজার এলাকায়।

ধারণা করা হচ্ছে- স্ত্রী রিমা আক্তারকে (২২) হত্যা করে মরদেহের পাশে শিশু সন্তান নাহিদকে রেখে পালিয়ে যায় ঘাতক স্বামী আল-আমিন। সে ওই এলাকার আছিল্লা সর্দারের ছেলে।

প্রতিবেশী গৃহবধূ নাছিমা আক্তার বলেন, আমি বাসা-বাড়িতে গিয়ে ছেলেমেয়েদের পড়াই। বুধবার (২৮ মার্চ) বিকালে বাসায় ফিরে আল-আমিনের ঘরে তার দেড় বছরের শিশুপুত্র নাহিদের কান্নার শব্দ শুনি।

তিনি বলেন, বেশ কিছুক্ষণ কান্নার শব্দ শুনে টিনের একচালা ঘরের কাছে গিয়ে দেখি বাইর থেকে ঘরের দরজায় তালা দেয়া। এরপর টিনের ফুটো দিয়ে তাকিয়ে দেখি আল-আমিনের স্ত্রী রিমা খাটের উপর দু’হাত ছড়িয়ে নিথর হয়ে পড়ে আছে। শিশুটি বুকের কাছে বসে রিমার হাতের আঙ্গুল চুষছে।

নাছিমা আক্তার বলেন, ওইসময় ঘর থেকে মারাত্মক পঁচা দুর্গন্ধ পেয়ে আশপাশের লোকজনদের ডেকে নিয়ে আসি। এরপর ঘরের তালা ভেঙে শিশুটিকে উদ্ধার করে থানায় খবর দেই।

খবর পেয়ে সন্ধ্যা ৬টার দিকে ওই বাড়ি থেকে রিমার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ।

এলাকাবাসীর তথ্যমতে

এলাকাবাসী জানান, আল-আমিন এর আগে এক গার্মেন্টকর্মীকে বিয়ে করে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। এতে ওই মেয়ে কয়েক মাস সংসার করে পালিয়ে যায়। তার নাম জানাতে পারেনি কেউ।

পরে প্রায় আড়াই বছর আগে গার্মেন্টকর্মী রিমাকে বিয়ে করে আলআমিন। বিয়ের পর থেকে রিমাকেও কারণে-অকারণে মারধর করত। কয়েক মাস আগে রিমাকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেয় আল-আমিন।

এরপর এক সপ্তাহ আগে আল-আমিন এক আত্মীয়র বাসা থেকে রিমাকে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। সর্বশেষ সোমবার সকালে বাড়ির আশপাশের লোকজন রিমাকে ঘরের সামনে বসে থাকতে দেখেছেন।

এলাকাবাসী আরো জানান, আল-আমিন ও তার বড় ভাই বাবু এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। সম্প্রতি বাবুকে মাদকসহ পুলিশ গ্রেফতার করে।

ঘটনাস্থলে যাওয়া ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহজালাল জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

তিনি জানান, নিহত রিমার স্বামী আল-আমিনসহ তাদের পরিবারের কেউ বাড়িতে নেই। সবাই আত্মগোপন করেছে। আল-আমিনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *