স্কুলছাত্রীকে চাকায় পিষ্ট করে মোটরসাইকেলসহ তার মামাকে সামনের বাম্পারে করে টেনে নিয়ে গেল বেপরোয়া বাস
মামাকে ছেঁচড়ে নিল বাস, ভাগ্নিকে চাকায় পিষ্টকরে
ভাগ্নির মৃত্যু এবং মামাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার
দশম শ্রেণি পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীকে চাকায় পিষ্ট করে মোটরসাইকেলসহ তার মামাকে সামনের বাম্পারে করে টেনে নিয়ে গেল বেপরোয়া বাস। পরে ১০০ গজ দূরে কয়েকজন মোটরসাইকেলচালক বাসটিকে থামাতে সক্ষম হন। এর মধ্যে ঘটনাস্থলেই ভাগ্নির মৃত্যু এবং মামাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জনতা বাসচালককে পুলিশে সোপর্দ করেছে।গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর খিলক্ষেত থানা এলাকার শেওড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এয়ারপোর্ট রোডে এ ঘটনা ঘটে। নিহত স্কুলছাত্রীর নাম ইসরাত জাহান রিপ্তি (১৫)। তার আহত মামার নাম লিটন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। প্রাইভেট পড়া শেষে সে মামার মোটরসাইকেলে করে নিকুঞ্জের বাসায় ফিরছিল। রিপ্তি ঢাকা সেনানিবাস এলাকার রমিজ উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়ঃ
সেনানিবাস এলাকার দিক থেকে মামা লিটনের মোটরসাইকেলে করে নিকুঞ্জের বাসায় ফিরছিল রিপ্তি। শেওড়া এলাকায় যাওয়ার পর মোটরসাইকেলচালক লিটন একটি সিএনজি অটোরিকশাকে ওভারটেক করেন। এ সময় বলাকা পরিবহনের একটি বাস পেছন থেকে মোটরসাইকেলটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়লে বাসটি রিপ্তিকে চাপা দেয়। আর তার মামা লিটন মোটরসাইকেলসহ বাসের সামনের বাম্পারে আটকে যান। চাকায় পিষ্ট হওয়ায় রিপ্তি ঘটনাস্থলেই মারা যায়। আর মোটরসাইকেলসহ বাম্পারে আটকে থাকা লিটনকে ১০০ গজের মতো সামনের দিকে নিয়ে যায় বাসটি। এ সময় পথচারীরা চিৎকার করতে থাকে। কয়েকজন মোটরসাইকেলচালক বাসটির সামনে গিয়ে বাসটি থামাতে সক্ষম হন। পরে লিটনকে রক্তাক্ত অবস্থায় বের করা হয়। পরে পথচারীরা তাঁকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। তাঁর অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় ক্ষুব্ধ জনতা বাসের চালক তাজুল ইসলামকে (৪০) উত্তমমাধ্যম দিয়ে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে কুর্মিটোলা হাসপাতালে ছুটে আসে রিপ্তির স্বজনরা।
রিপ্তির মামা রাজু সাংবাদিকদের জানান, কচুক্ষেত এলাকায় প্রাইভেট পড়তে গিয়েছিল রিপ্তি। পড়া শেষে মামার সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে নিকুঞ্জের বাসায় ফিরছিল। রিপ্তির বাবার নাম জহুরুল হক। নিকুঞ্জ এলাকায় তাদের বাসা।খিলক্ষেত থানার ওসি শহীদুল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বাসের চালককে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানিয়েছে, বাসকে ওভারটেক করতে গেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। চালক দাবি করে, সে ব্রেক করতে চেয়েছিল। কিন্তু ব্রেক ছিঁড়ে যাওয়ার কারণে সে বাস থামাতে পারেনি বলে জানায়।এ ঘটনায় থানায় মামলা হবে। মামলা প্রক্রিয়াধীন। দুর্ঘটনার বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।