fbpx

১৪ দলীয় জোটের আসন ভাগাভাগি

ভোটের উত্তাপে ১৪ দলীয় জোট

মাঠে নামার আগেই চান আসন ভাগাভাগি

শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের অপেক্ষায় শরিকরা * আগের চেয়ে বেশি আসনে ছাড় চাইবেন নেতারা * ছাড় চাওয়া আসনের তালিকা প্রস্তুত

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাঠে নামার আগেই আসন ভাগাভাগির ফয়সালা চান ১৪ দলীয় জোটের শরিকরা। জোট নেতারা আগের চেয়ে এবার বেশি আসনে ছাড় চাইবেন। আওয়ামী লীগ তাদের কোন কোন আসনে ছাড় দেবে তাও আগে থেকেই নিশ্চিত হতে চান তারা। এজন্য প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকেরও অপেক্ষায় আছেন। শিগগিরই এ বৈঠক হবে বলে তারা জানিয়েছেন। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, নবম ও দশমের মতো ১৪ দলের শরিকরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট বেঁধেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে। এ লক্ষ্যে তারা মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে দলের নিজস্ব প্রস্তুতির পাশাপাশি জোটগতভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতিও আগে থেকেই শুরু করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন এই জোটের শীর্ষ নেতারা। বিশেষ করে নির্বাচনী কৌশল, আসন সমঝোতাসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আগে থেকে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত চান তারা।

ওয়ার্কার্স পার্টি

জানতে চাইলে এ বিষয়ে ১৪ দলের অন্যতম প্রধান শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি এবং সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন রোববার যুগান্তরকে বলেন, নির্বাচনের কৌশল, প্রস্তুতি, আসন সমঝোতা কোনো বিষয়েই ১৪ দলীয় জোটে আলোচনা হয়নি। এসব বিষয়ে জোটের প্রধান আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা হওয়া দরকার। তিনি আরও বলেন, গত নির্বাচনে আমাদের যে আসন ছেড়ে দেয়া হয়েছিল এবার তার চেয়ে অবশ্যই বেশি আসন ছাড়তে হবে। মাঠে নামার আগেই আসন ভাগাভাগির বিষয়টি ফয়সালা হওয়া দরকার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতবারের চেয়ে এবারের নির্বাচনের প্রেক্ষাপট আলাদা করে দেখছেন ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর নেতাকর্মীরা। গত দশমের চেয়ে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটের শরিক দলগুলোর আসন চাহিদা বাড়বে। বিশেষ করে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলো বাড়তি আসনের দাবি জানাবে। তাই সার্বিক বিষয়গুলো নিয়ে আগে থেকেই একটা সিদ্ধান্তে আসতে চান জোটের শরিকরা। এ কারণেই তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের অপেক্ষায় আছেন।

১৪ দলীয় জোটের শরিকরা

সূত্র জানায়, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের একাংশের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, জাতীয় পার্টি-জেপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান আলহাজ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, দলটির মহাসচিব এমএ আউয়াল, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, জাসদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার, জাসদের আরেক অংশের কার্যকরী সভাপতি মাঈনউদ্দিন খান বাদল, জাসদের এই অংশের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধানসহ ১৪ দলীয় জোটের ন্যূনতম ১০ জন শীর্ষ নেতাকে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ছাড় দেবে আওয়ামী লীগ। ইতিমধ্যে তাদের পুরোদমে নির্বাচনী প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। কিন্তু শরিক দলের দাবি কমপক্ষে ৭০টি আসন। ইতিমধ্যে তারা কোন কোন আসনে ছাড় চায়- তার একটি তালিকাও তৈরি করে রেখেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এই তালিকা তুলে দেয়া হবে।

জোটের নেতাদের মতে, ১৪ দলের বৈঠক নিয়মিত অনুষ্ঠিত হলেও দীর্ঘদিন জোটের প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক হয় না। এছাড়া ১৪ দলের গতানুগতিক বৈঠকেও এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্তে আসাও সম্ভব নয় বলে মনে করেন তারা। বিশেষ করে নির্বাচনী কৌশল, আসন সমঝোতাসহ নির্বাচন সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকেই আসবে। এ কারণে জোটের শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের ওপরই গুরুত্ব দিচ্ছেন।

জানতে চাইলে এ প্রসঙ্গে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার যুগান্তরকে বলেন, ‘আমরা ১৪ দলগতভাবেই আগামী নির্বাচনে অংশ নেব। ইতিমধ্যে নিজেদের দলের প্রস্তুতি শুরু করেছি। তবে জোটগত প্রস্তুতি, আসন সমঝোতা- এসব বিষয়ে এখনও আলোচনা হয়নি। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একটা বৈঠকের প্রয়োজন। আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জোটের বৈঠকের কথা বলেছি। তিনি সময় দিলে বৈঠক হবে। তখন এসব বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হবে।’

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের আরেক অংশের সভাপতি শরিফ নুরুল আম্বিয়া এ প্রসঙ্গে যুগান্তরকে বলেন, ‘আমরা আমাদের মতো করে নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছি। এখনই কে কতটি আসন পাবে এটা বলা যাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে ১৪ দলে কোনো আলোচনাও হয়নি। এসব বিষয়ে সিদ্ধান্তের আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জোটের বৈঠব হবে। সেখান থেকেই একটা সিদ্ধান্ত আসবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *