প্রথম ম্যাচই নায়ক হওয়ার সুযোগ ছিল মোস্তাফিজের !
একে তো দল দিয়েছে মাত্র ১৬৬ রানের লক্ষ্য, তার উপর আসর ও নিজের প্রথম ম্যাচ। মোস্তাফিজুর রহমান ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই যখন বল হাতে পেলেন, একটু নার্ভাস হয়ত ছিলেন। তবে অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে হতাশ করলেন না। দিলেন কেবল ৯ রান। শেষ পর্যন্ত অবশ্য রোহিত, মোস্তাফিজ, মুম্বাই; সবাইকেই হতাশ হতে হয়েছে।
মোস্তাফিজের শেষ ওভারের খানিক ঝলকের পর চেন্নাই এক উইকেটে হারিয়েছে ইন্ডিয়ান্সদের, সেও এক বল বাকি থাকতে।
শনিবার ওয়াংখেড়েতে উদ্বোধনী ম্যাচে টসে হেরে ব্যাটে এসে নির্ধারিত ওভারে ৪ উইকেটে ১৬৫ রান তোলে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। জবাবে ৯ উইকেট হারিয়ে জয়ে নোঙর ফেলে চেন্নাই সুপার কিংস।
নিজের প্রথম ওভারটিতে ৯ রান দেন মোস্তাফিজ। ওভারের প্রথম বলে ওয়াটসন ও শেষ বলে রাইড়ু চার হাঁকান। চতুর্থ বলে অজি অলরাউন্ডার একটি এক বের করেন। তার আগের বলে স্লোয়ার কাটারে ওয়াটসনকে যেভাবে খাবি খাওয়ালেন, সেটির জন্যই তিনি কাটার মাস্টার ফিজ।
মোস্তাফিজ আবার বল হাতে পান ১২তম ওভারে। তার আগে পান্ডিয়া ও মার্কান্দে ২টি করে উইকেট তুলে নিয়ে চেন্নাইকে চাপে ফেলেছেন। ফিজ এসে সেটা আরেকধাপ বাড়িয়ে দেন।
এক লেগবাই, তিন সিঙ্গেল ও জাদেজার এক চারে প্রথম পাঁচ বলে ৮ রান খরচ হয়ে গেছে। শেষ বলে সেটি পুষিয়ে নিতে ভুললেন না টাইগার তারকা। ওয়াইডঅফে সেই চেনা অস্ত্র, কাটার, জাদেজার বোকা বনে যাওয়া সময়, বাতাসে ভাসা বল লংঅফ থেকে অনেকটা দৌড়ে তালুবন্দি করেন সুরিয়াকুমার। ফিজের প্রথম উইকেট নতুন আসরে, ইন্ডিয়ান্সদের উল্লাসে ফেটে পড়া।
ফিজ ১৪তম ওভারে এসে অবশ্য ভাল করতে পারেননি। ১৩ রান খরচ করে বসেন। চতুর্থ ও ষষ্ঠ বলে একটি করে চার হাঁকান ব্রাভো এবং হরভজন।
শেষ দুই ওভারে ২৭ দরকার হয় চেন্নাইয়ের
শেষ দুই ওভারে ২৭ দরকার হয় চেন্নাইয়ের। বুমরাহ এসে প্রথম দুই বলেই ছক্কা হজম করেন ব্রাভোর ব্যাটে। পরে আরেক ছয়ে ওই ওভারে খরচ ২০ রান। শেষ বলে অবশ্য ব্রাভোকে সাজঘরেও পাঠান বুমরাহ।
শেষ ওভারে তখন ৬ বলে ৭ দরকার। গুরুদায়িত্ব মোস্তাফিজের কাঁধে। প্রথম দুই বলে ফুললেন্থ আর স্লোয়ার কাটারের সামনে রান নিতে ব্যর্থ জাদব। তৃতীয় বলটি গুডলেন্থে, ম্যাজিক অব্যাহত, কোন রান নিতে পারেননি জাদব। কিন্তু চতুর্থ বলটি শর্টফাইন লেগ দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে সব শেষ করে দেন তিনি। পরের বলে চার মেরে ম্যাচই শেষ করে দেন।
কেদার জাদবের এক চার ও ২ ছক্কায় ২২ বলে অপরাজিত ২৪, রাইড়ুর ২২, আর ডোয়াইন ব্রাভোর ৬৮, ৩ চার ৭ ছয়ে ৩০ বলে সাজানো ঝড়। ম্যাচটাই চেন্নাইয়ের ঘরে টেনে নেয়।
পান্ডিয়া ও মার্কান্দে ৩টি করে উইকেটই নেননি কেবল, দিয়েছেন মাত্র ২৩ ও ২৪ রান করে; ৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে। মোস্তাফিজের সেখানে ৩.৫ ওভারে ৩৯ রানে এক উইকেট। ৪ ওভরে ৪৪ দেয়া ম্যাকক্লেনেঘান, ৩৭ দেয়া বুমরাহ একটি করে উইকেট পেলেও খরুচে থেকে ম্যাচ হাতছাড়া করেছেন।
এর আগে ইশান কিষাণের ২৯ বলে ৪০, সুরিয়াকুমার যাদবের ২৯ বলে ৪৩, হার্দিক পান্ডিয়ার ২০ বলে অপরাজিত ২২ এবং ক্রুনাল পান্ডিয়ার ২২ বলে অপরাজিত ৪১ রান লড়াইয়ের পুঁজি দেয় মুম্বাইকে। ক্রুনাল ৫ চার ও ২ ছক্কায় ঝড়ো ইনিংসটি সাজান।