পাবনা ডিসির মোবাইল ক্লোন করে চাঁদাবাজি!
এবার পাবনা ডিসির মোবাইল ক্লোন করে চাঁদাবাজি!
‘আমি পাবনার ডিসি বলছি, অফিসের প্রয়োজনে এবং নানা কর্মসূচি পালনে অনেক টাকার দরকার, চাহিদা মতো টাকা পাঠিয়ে দেবেন।’
এ ছাড়া রয়েছে বিভিন্ন ধরনের তদবির। খোদ জেলা প্রশাসকের (ডিসি) সরকারি মোবাইল নম্বর থেকে এ ধরনের ফোন। অনেকে দেখে হতভম্ব। বিষয়টি কেউ কাউকে বলতেও পারছে না, আবার সহ্যও করতে পারছে না।
সম্প্রতি বেশ কয়েকদিন ধরে পাবনার জেলা প্রশাসকের সরকারি মোবাইল নম্বর থেকে পাবনার বিভিন্ন ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক ব্যক্তি ও সরকারি অফিসে ফোন করে চাঁদা দাবি করা হচ্ছিল। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সবাই বিব্রত।
পাবনার জেলা প্রশাসক ফেসবুক ওয়ালে বিষয়টি স্পষ্ট করেন
পাবনার জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন আজ বৃহস্পতিবার তাঁর নিজস্ব ফেসবুক ওয়ালে বিষয়টি স্পষ্ট করেন। তিনি তাঁর ফেসবুকে লিখেন, ‘সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে একটি জালিয়াত চক্র ডিসি পাবনার সরকারি মোবাইল ফোন নাম্বার ক্লোন করে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদা চেয়ে ফোন কল করছে। এ ধরনের ফোন কলের প্রেক্ষিতে কোনো টাকা পয়সা প্রদান কিংবা অন্য কোনো চুক্তি না করতে অনুরোধ করা হলো। কেউ এই চক্রের কারো সন্ধান পেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোর অনুরোধ করা হলো।’
ওই স্ট্যাটাসে মন্তব্য করেন পাবনার ফরিদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তোফায়েল হোসেন। তিনি ফেসবুকে লিখেন, ‘এটা প্রায় সব ইউএনও এর ক্ষেত্রেই ঘটেছে স্যার। রোধ করা যাচ্ছে না। থানায় জিডিও করা হয়েছে। কাজ হচ্ছে না। কিছু একটা করা দরকার। সরকারি আইটি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করে স্থায়ী সমাধান করা জরুরি। কিছু মানুষ প্রতারিত হচ্ছে এবং আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সবচেয়ে বড় বিষয় মোবাইলে কথা বলা নিরাপদ মনে হচ্ছে না।’
যোগাযোগ করা হলে ইউএনও তোফায়েল হোসেন বলেন, তাঁর সামনেই তাঁর সরকারি নম্বর দিয়ে এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানকে ফোন করা হয়েছে। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলেও তারা কোনো সুরাহা করতে পারেনি।
একই পরিস্থিতিতে পড়ার কথা স্বীকার করে চাটমোহরের ইউএনও সরকার অসীম কুমার বলেন, ‘গত জানুয়ারি মাসে আমার সরকারি মোবাইল ব্যবহার করে একই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এসবের আশু স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন।’
পাবনার জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিনের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি এসএমএস করে জানান, পরে ফোন ব্যাক করবেন। কিন্তু আর করেননি।
এ ব্যাপারে পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. শাফিউল আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা চিন্তিত। তবে এ বিষয়ে এখনো থানায় কোনো সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়নি বলেও তিনি জানান।