তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ
তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ । ২০১৪ সালে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ও ২০১৫ সালে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের পর এবার তাদের তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করল মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। টেস্টেও জিম্বাবুয়েকে সর্বশেষ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ।
শুক্রবার তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ জয় পায় সাত উইকেটে। জিম্বাবুয়ের দেয়া ২৮৭ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে সৌম্য সরকার ও ইমরুল কায়েসের সেঞ্চুরির সুবাদে ৪২.১ ওভারে সাত উইকেট হাতে রেখে ম্যাচ জিতে নেয় টাইগাররা। এর আগে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ২৮ রানে ও দ্বিতীয় ম্যাচে সাত উইকেটে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ।
সৌম্য সরকার দলে সুযোগ পেয়েই আজ দুর্দান্ত একটি ইনিংস খেলেছেন। ৯২ বলে ১১৭ রান করে আউট হন তিনি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। এই রান করার পথে তিনি নয়টি চার মারেন ও ছয়টি ছক্কা হাঁকান। সাড়ে তিন বছরেরও বেশি সময় পর সেঞ্চুরি দেখা পেলেন এই টাইগার ক্রিকেটার। এর আগে ২০১৫ সালের এপ্রিলে পাকিস্তানের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করেছিলেন সৌম্য সরকার। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই সিরিজে প্রথমে দলে ছিলেন না সৌম্য। কিন্তু প্রস্তুতি ম্যাচে সেঞ্চুরি করায় ও জাতীয় লিগে ভালো করায় সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচে তাকে দলে ডাকেন নির্বাচকরা।
গত দুই ম্যাচে ভালো খেলা ইমরুল কায়েস আজ ১১৫ রান করে আউট হন। ওয়ানডেতে এটি তার চতুর্থ সেঞ্চুরি। এই সিরিজের প্রথম ম্যাচেও ইমরুল কায়েস সেঞ্চুরি করেছিলেন। ওই ম্যাচে ১৪৪ রান করেছিলেন তিনি। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে ৯০ রান করে আউট হন কায়েস।ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। কাইল জারভিসের বলে এলবিডব্লিউ হন লিটন দাস। এরপর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ইমরুল কায়েস ও সৌম্য সরকার ২২০ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। ইনিংসের ৩০তম ওভারে হ্যামিলটন মাসাকাদজার বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ডোনাল্ড তিরিপানোর হাতে ক্যাচ হন সৌম্য সরকার।
বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে ওয়ানডেতে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ইমরুল-সৌম্যর এই জুটিই এখন সেরা। এর আগে ওয়ানডে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের ২০৭ রানের জুটি সেরা ছিল। যেকোনো জুটিতে ইমরুল-সৌম্যর এই জুটি দ্বিতীয় অবস্থানে আছে। প্রথম অবস্থানে আছে সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ২২৪ রানের জুটি।
সৌম্য সরকার ফিরে যাওয়ার পর ইমরুল কায়েস ও মুশফিকুর রহিম ৫৪ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। ইনিংসের ৪০তম ওভারে ওয়েলিংটন মাসাকাদজার বলে এলটন চিগুম্বুরার হাতে ক্যাচ হন ইমরুল কায়েস। এরপর মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ মিথুন দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে পাঁচ উইকেটে ২৮৬ রান সংগ্রহ করে জিম্বাবুয়ে। সফরকারীদের পক্ষে সেঞ্চুরি করেন শন উইলিয়ামস। ১২৯ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি।
অন্যদের মধ্যে ব্রেন্ডন টেইলর করেন ৭৫ রান। ওয়ানডেতে এটি তার ৩৬তম অর্ধশত। এছাড়া সিকান্দার রাজা ৪০ ও পিটার মুর ২৮ রান করেন। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে নাজমুল ইসলাম অপু ২টি, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ১টি ও আবু হায়দার রনি ১টি করে উইকেট শিকার করেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: সাত উইকেটে জয়ী বাংলাদেশ।
জিম্বাবুয়ে ইনিংস: ২৮৬/৫ (৫০ ওভার)
(হ্যামিলটন মাসাকাদজা ২, চেফাস ঝুওয়াও ০, ব্রেন্ডন টেইলর ৭৫, সিকান্দার রাজা ৪০, শন উইলিয়ামস ১২৯, পিটার মুর ২৮, এলটন চিগাম্বুরা ১; আবু হায়দার রনি ১/৩৯, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ১/৫১, আরিফুল হক ০/১৭, মাশরাফি বিন মুর্তজা ০/৫৬, সৌম্য সরকার ০/১৬, নাজমুল ইসলাম অপু ২/৫৮, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ০/৪০)।
বাংলাদেশ ইনিংস: ২৮৮/৩ (৪২.১ ওভার)
(লিটন দাস ০, ইমরুল কায়েস ১১৫, সৌম্য সরকার ১১৭, মুশফিকুর রহিম ২৮*, মোহাম্মদ মিথুন ৭*; কাইল জারভিস ১/৪৭, রিচার্ড এনগারাভা ০/৪৪, ডোনাল্ড তিরিপানো ০/৩৩, সিকান্দার রাজা ০/৪৭, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ১/৭১, শন উইলিয়ামস ০/৪৩, হ্যামিলটন মাসাকাদজা ১/৩)।
প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ: সৌম্য সরকার (বাংলাদেশ)।
প্লেয়ার অব দ্য সিরিজ: ইমরুল কায়েস (বাংলাদেশ)।