এক লাখ মানুষ মারা যায়!
তামাক ব্যবহারে দেশে বছরে এক লাখ মানুষ মারা যায়!
বছরে এক লাখ মানুষ মারা যায়
স্টাফ রিপোর্টারঃ বাংলাদেশের ২৫ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করে। আর এই দরিদ্র মানুষেরা সস্তায় তামাক পেয়ে ধূমপানে আরও বেশি আগ্রহী হয়। এর ফলে স্বাস্থ্যের ক্ষতির পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তামাক ব্যবহারের কারণে দেশে প্রতিবছর প্রায় এক লাখ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। আর পঙ্গুত্ব বরণ করছে তিন লাখ ৮২ হাজার মানুষ।
এছাড়াও প্রায় ১২ লাখ মানুষ বিভিন্ন রোগে ভুগে থাকেন বলেও জানায় মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা মানস। তাই তামাকের ব্যবহার কমাতে ২০১৭-১৮ বাজেটে তামাকের ওপর আরোপিত স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্য ১ শতাংশ থেকে ২ শতাংশ করাসহ কিছু সুপারিশ করেছে সংগঠনটি।
বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস সামনে রেখে মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিভিন্ন সংস্থার তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি একুশে পদকপ্রাপ্ত শব্দ সৈনিক অধ্যাপক ড. অরূপ রতন চৌধুরী। জাতীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বোর্ড এবং জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ টাস্কফোর্সের সদস্য অরূপ রতন চৌধুরী আরও বলেন, পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি তামাক ব্যবহারকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। এদেশে ৪৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ সিগারেট, বিড়ি এবং ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবন করেন। ধোঁয়াবিহীন তামাক সেবনে নারীরা এগিয়ে ২৮ শতাংশ আর পুরুষরা ২৬ শতাংশ। তামাক সেবনে বহু লোকের মৃত্যু ঘটে বলে জানান। যুক্তরাষ্ট্রের আইএইচএমই-এর ২০১৩ তথ্য অনুয়ায়ী তামাকের ব্যবহারজনিত অসুখে প্রতি বছর এক লাখ মানুষ মারা যাচ্ছে।
জিওয়াইটিএসঃ
গ্লোবাল ইয়ুথ টোব্যাকো সার্ভে (জিওয়াইটিএস) ২০১৩ অনুযায়ী বাংলাদেশের কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে তামাক আসক্তি উদ্বেগজনক। ১৩-১৫ বছরের প্রায় ৭ শতাংশ কিশোর-কিশোরী তামাকপণ্য ব্যবহার করে। গবেষণার তথ্য দিয়ে বলা হয়, দেশের ডিম, দুধের তুলনায় তামাকপণ্য অনেক সস্তা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে প্রতিবছর সারাবিশ্বে ২০ লাখ মানুষ তামাক ব্যবহারের কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। আর বাংলাদেশে যত মানুষ হৃদরোগে মারা যান তার ৩০ শতাংশ তামাক ব্যবহারের কারণে। এ সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। গবেষণার তথ্য-উপাত্ত দেখিয়ে বলা হয়, অধূমপায়ীদের তুলনায় ধূমপায়ীদের হার্ট এ্যাটাকের ঝুঁকি দ্বিগুণ, স্টোকের ঝুঁকি তিনগুণ ও বুকে ব্যথা ঝুঁকি ২০ গুণ। দিনে একটি করে সিগারেট খেলেও হৃদরোগের ঝুঁকি ৫০ শতাংশ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি ৩০ শতাংশ বেড়ে যায়। বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, বাংলাদেশে হৃদরোগজনিত মৃত্যুর ৩০ শতাংশের দায়ী ধূমপান তথা তামাক ব্যবহার। বাংলাদেশে তামাকের উচ্চ ব্যবহার ঝূঁকির মাত্রা আরও বাড়িয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
অধ্যাপক ড. অরূপ রতন চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে তামাকের ব্যবহার নির্মূল অর্থাৎ ৫ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন। সেই সঙ্গে একটি শক্তিশালী শুল্ক-নীতি গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করেছেন। এটির বাস্তবায়ন নিয়ে আশা প্রকাশ করেন তিনি।