fbpx

একুশে পদক পাচ্ছেন ইলিয়াস কাঞ্চন

একুশে পদক পাচ্ছেন ইলিয়াস কাঞ্চন

১৯৯৩ সালের ২২ অক্টোবর এক সড়ক দুর্ঘটনায় চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের স্ত্রী মারা যান। পরে ওই বছর ২৭ নভেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ নামে একটি সংগঠন গঠন করেন। সেই থেকে চলচ্চিত্রের পাশাপাশি সমাজসেবা করছেন জনপ্রিয় এই চিত্রনায়ক। সমাজসেবায় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এ বছর একুশে পদক পাচ্ছেন তিনি। আজ শুক্রবার সকালে তিনি কথা বলেছেন প্রথম আলোর সঙ্গে।

আপনাকে অভিনন্দন। একুশে পদক পাচ্ছেন। আপনার অনুভূতি জানতে চাই। মানুষ যেকোনো অর্জনে খুশি হয়। আমিও খুশি হয়েছি। এর সঙ্গে যখন রাষ্ট্রীয় ব্যাপার যুক্ত হয়, তখন এটা বড় ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। ছোটবেলা থেকে একুশে ফেব্রুয়ারি লালন করছি। তখন আশপাশের বাগান থেকে ফুল সংগ্রহ করে মালা তৈরি করেছি। প্রভাতফেরিতে অংশ নিয়েছি। শহীদ মিনারে গিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছি। একুশে পদক অর্জন তো নিঃসন্দেহে ভীষণ আনন্দের।

২৪ বছর আগে যখন ‘নিরাপদ সড়ক চাই’

আন্দোলন শুরু করেছিলেন, তখন এমন স্বপ্ন দেখেছিলেন?
সমাজসেবার জন্য কখনো পুরস্কার পাব, ভাবতেও পারিনি। আমি শুরু করেছিলাম দায়িত্ব থেকে। আমার স্ত্রী আমাকে ভালোবাসতেন, তিনি দুর্ঘটনায় মারা যান। ভক্তরা আমাকে ভালোবাসেন। এই ভক্তদের জন্য আমি ইলিয়াস কাঞ্চন হয়েছি। প্রতিদিন সারা দেশে অনেক মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে একজনকেও যদি সচেতন করতে পারি—সেটাই বড় ব্যাপার। অনেককেই বলতে শুনি, দেশ আমাকে কী দিয়েছে। আমি তাদের বলতে চাই, এই দেশ আমাকে ভাষা দিয়েছে, স্বাধীনতা দিয়েছে, এই দেশ আমাকে ইলিয়াস কাঞ্চন বানিয়েছে। এই দেশ না থাকলে আমি ইলিয়াস কাঞ্চন হতে পারতাম না। এ কারণে আমার দায়িত্ব দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করা।

‘নিরাপদ সড়ক চাই’ সংগঠন থেকে সামনে কী করবেন?

আমরা এখন আমাদের কৌশল বদল করেছি। দেশের অনেক সমস্যা। সরকারেরও অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। সবকিছুকে পাশ কাটিয়ে কীভাবে এগিয়ে যাওয়া যায়, তা-ই দেখব। সড়ক দুর্ঘটনা এখন যে পর্যায়ে আছে, তা সচেতনতার মাধ্যমে আরও কীভাবে কমানো যায়, সেই চেষ্টা করব। পাশাপাশি আমার দেশ, দেশের স্বাধীনতা—এসব অক্ষুণ্ন রাখার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাব।

চলচ্চিত্রের জন্য আপনার অঙ্গীকার কী?

চলচ্চিত্রের সবার কাছে অনুরোধ করব, তাঁরা যেন এই পুরস্কারের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ হন। সবাই যেন এটাকে চলচ্চিত্র আর চলচ্চিত্রের মানুষদের অর্জন মনে করেন। আমার সাধ্যের মধ্যে যতটুকু সম্ভব, চলচ্চিত্রের জন্য কিছু করার চেষ্টা করব। চলচ্চিত্রে এখন যে অবস্থা, এখানে আমার একার পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়। সবাইকে নিয়ে কী করা যায়, সেটা দেখব। বাইরে থেকে দেখে মনে হয়, চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর মধ্যে চমৎকার সম্পর্ক। আসলে তা ভুল। সবাইকে হিংসা ভুলে যেতে হবে। যারা ভুল করবে, তাদের ভুল ধরিয়ে দিতে হবে। পেছনে কথা বলা বন্ধ করতে হবে।

আকাশ সংস্কৃতির এই যুগে মিশ্র সংস্কৃতির প্রভাব পড়েছে। তৈরি হচ্ছে ভিন্ন পরিবেশ।
এটা আমিও উপলব্ধি করছি। বিশ্বায়নের এই যুগে প্রযুক্তির দ্রুত পরিবর্তনের কারণে মিশ্র সংস্কৃতির প্রভাব পড়া খুব স্বাভাবিক ঘটনা। তা সবাইকে বুঝতে হবে। প্রথম প্রাধান্য দিতে হবে নিজের সংস্কৃতিকে।

সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য কী করতে হবে?

আমি বলব, এ ক্ষেত্রে পরিবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। একটা দেশের ভবিষ্যৎ ওই দেশের তরুণ প্রজন্মের ভাবনাচিন্তা আর কর্মকাণ্ডের ওপর নির্ভর করবে। তাই তাদের সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে হবে। বাবা-মা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আর শিক্ষকদের বড় ভূমিকা পালন করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *