fbpx

আফিফের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ও তৌহিদ হৃদয়ের ব্যাটিং-এ ভর করে বাংলাদেশের যুবাদের জয়

ব্যাটে-বলে আফিফ হোসেন ছাড়িয়ে গেলেন তৌহিদ হৃদয়কে। নিউজিল্যান্ডে যুব বিশ্বকাপ ক্রিকেটে আফিফের অলরাউন্ড নৈপুণ্যেই নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে কানাডাকে হারিয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। অথচ তৌহিদ হৃদয় দলের বিপর্যয়ের মুখে খেলেছিলেন ১২২ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস; আফিফ এক ফিফটিতে তৌহিদকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছিলেন। এই দুইয়ের ব্যাটে ভর করেই স্কোরবোর্ডে ৮ উইকেটে ২৬৪ রান তুলেছিল বাংলাদেশ যুব দল। কিন্তু দিন শেষ তাঁর অফস্পিন দিয়ে তৌহিদের আলোটা পুরোপুরি নিজের দিকেই টেনে নিলেন। ৪৩ রানে ৫ উইকেট নিয়ে দেশকে এনে দিয়েছেন ৬৬ রানের প্রত্যাশিত জয়।
২৬৫ রান তাড়া করতে নেমে কানাডা কিন্তু পাল্টা আক্রমণটা ভালোই করেছে। ভারতীয় ও পাকিস্তানি বংশোদ্ভূতদের নিয়ে গঠিত দলটির মিডল অর্ডার একপর্যায়ে ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশের অধিনায়ক সাইফ হাসানের। আরসালান খান করেছেন ৬৩। এ ছাড়া আকাশ গিল ২২ আর কেভিন সিং ও কেভিন নারিস (অপরাজিত) করেছেন যাথাক্রমে ২৪ ও ২৬ রান। ওপেনার প্রণব শর্মার ব্যাট থেকে এসেছে ৩৪ রান। আফিফ বাংলাদেশকে চোখ রাঙানো প্রণব ও আরসালান—দুজনকেই ফিরিয়েছেন। ৩৩ রানের ওপেনিং জুটির পর বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন ওই আফিফই—তাঁর বলেই রণধীর সান্ধুকে স্টাম্পিং করেন উইকেটরক্ষক মাহিদুল ইসলাম।
আফিফের পাশাপাশি উইকেটরক্ষক মাহিদুলকে কিন্তু বড় কৃতিত্ব দিতে হচ্ছে। চারটি ডিসমিসাল তাঁর। এর মধ্যে ক্যাচ তিনটি, স্টাম্পিং একটি। আফিফের বাকি দুই উইকেট  আরান পাথমানাথান ও ফয়সাল জামখান্দি। সাইফ পেয়েছেন গিলেন উইকেট। পেসার কাজী অনীক কেভিন সিংয়ের। আরেক পেসার হাসান মাহমুদ তুলে নেন ঋষিভ যোশী ও রোমেল শাহজাদের উইকেট।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমেই শঙ্কা জেগেছিল। ওপেনার পিনাক ঘোষ ফিরেছিলেন স্কোরারকে ব্যতিব্যস্ত না করেই। দলীয় সংগ্রহ তখন মাত্র ১। অধিনায়ক সাইফ হাসান নামিবিয়ার বিপক্ষে খেলেছেন ম্যাচজয়ী ইনিংস। কিন্তু আজ তিনি তেমন কিছুই করতে পারলেন না। মাত্র ১৭ রান করেই ফয়সাল জামখান্দির বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন। ২৯ রানেই ২ উইকেট নিয়েই ম্যাচটা শুরু করেছিল বাংলাদেশ।
‘কানাডা’ বলতেই দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা ফিরে যান আজ থেকে প্রায় ১৫ বছর আগে। ২০০৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে ডারবানে এই কানাডার কাছেই হেরে বসেছিল বাংলাদেশ জাতীয় দল। পিনাক, সাইফের পর মোহাম্মদ নাঈম যখন তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে দলীয় সংগ্রহ ১০০ পেরোনোর আগেই ড্রেসিংরুমের পথ ধরলেন, তখন দর্শকমাত্রেরই ১৫ বছর আগের স্মৃতি ফিরে আসাটা অস্বাভাবিক নয়।
কিন্তু বাংলাদেশের যুবারা সেই শঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছে সাফল্যের সঙ্গেই। নির্দিষ্ট করে বললে, মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান তৌহিদ হৃদয় অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করেই উল্টো চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন। ১২৬ বল খেলে ৯টি চার ও ১টি ছক্কায় তৌহিদ খেলেছেন ১২২ রানের ইনিংস। আফিফ  ৫০ রান করেন ৫৯ বলে; ৫টি চার ও ১টি ছক্কায়। ১১১ রানের এই জুটিই বাংলাদেশকে পথ দেখিয়েছে, নিয়ে গেছে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহের দিকে। এরপরে আমিনুল ইসলামের ১৯ রানের একটি ক্যামি ও ইনিংসে নির্ধারিত ৫০ ওভারে দলের সংগ্রহ গিয়ে পৌঁছায় ৮ উইকেটে ২৬৪ রানে। আমিনুলের ১৯ আসে ১৬ বলে।
কানাডার পক্ষে দারুণ বোলিং করেছেন ফয়সাল জামখান্দি। ৪৮ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন। একটি করে উইকেট নিয়েছেন যোশী, গিল ও রোমেল শাহজাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *