কোমর ব্যথার কারণ ও প্রতিকার
এমন মানুষ হয়ত পৃথিবীতে পাবেন না যিনি তার জীবনে একবারও কোমরে ব্যথা অনুভব করেননি।
মেরুদণ্ডের নিচের হাড়ের মধ্যবর্তী তরুণাস্থি বা ডিস্কের বার্ধক্যজনিত পরিবর্তনের ফলে এ ব্যথার সুত্রপাত হয়। তরুণাস্থির এই পরিবর্তনের সাথে সাথে মেরুদণ্ডের নিচের দিকে সংবেদনশীলতার পরিবর্তন হয়। সাধারণত এ পরিবর্তন ৩০ বছর বয়স থেকে শুরু হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এ রোগের কোনো উপসর্গ থাকে না। তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে রোগের উপসর্গও বাড়তে থাকে
ব্যথার কারণঃ
কোমরের ব্যথার নানাবিধ কারণ রয়েছে এর মধ্যে অন্যতম হলোঃ
- হাড়ের রোগ
- মেরুদন্ডের কশেরুকার মাঝখানের ডিস্কের ডিজেনারেশন বা ক্ষয়প্রাপ্তি
- ত্রুটিপুর্ণ দৈহিক গঠন
- যে কোনভাবে আঘাত বা ঝাঁকুনি প্রাপ্তি
- অপ্রত্যাশিত ওজন বৃদ্ধি
- অধিক সময় ধরে একনাগাড়ে বসে থাকা বা দাড়িয়ে থাকা
- বেশি বেশি যান বাহনে ভ্রমন করা
- নরমাল বিছানায় শোয়া
- মোভিং(রিভল্ভিং) চেয়ারে বসা
- উঁচু হিলের জুতা পরা
- ঠান্ডা ও স্যাতস্যাতে জায়গায় বাস করা
- অধিক সময় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে অবস্থান করা
- অপরিমিত রতিক্রিয়া
- বিশৃঙ্খল জীবন যাপন করা
- কোন ভারি জিনিস হাতে ঝুলিয়ে বহন বা উত্তোলন করা ।
কোমর ব্যথার লক্ষণসমূহ
- দাঁড়ানো বা বসা অবস্থায় কোমর ব্যথা অনুভূত হওয়া
- কোমর থেকে উৎপন্ন ব্যথা পায়ে ছড়িয়ে পড়া
- নিতম্ব ও পায়ের মাংসপেশীতে ব্যথা
- পায়ের বিভিন্ন অংশে ঝিনঝিন, শিন শিন করা
- পায়ের বোধশক্তি কমে আসা, পর্যায়ক্রমে পায়ের অসারতা
- ধীরে ধীরে পা দুর্বল হয়ে পায়ের কার্যক্ষমতা লোপ পাওয়া
- চুড়ান্ত পর্যায়ে পঙ্গুত্ববরণ করা
প্রতিকারঃ
- পরিকল্পিত ও পরিমিত মৃদু ব্যায়াম করা
- ওজন নিয়ন্ত্রণে এবং প্রয়োজনে ওজন হ্রাস করা
- ব্যথার স্থানে কুশুম গরম পানি ঢালা
- মেরুদন্ড সোজা করে বসার অভ্যাস করা
- কোনকিছু মাটি থেকে তুলতে কোমর বাঁকা না করে হাঁটু ভাঁজ করে তোলা
- অবসর সময়ে বিছানায় আরাম করে শুয়ে হট ওয়াটার ব্যাগ দিয়ে ব্যথার স্থানে স্যাক নেয়া
- একনাগাড়ে অনেক্ষন হাঁটাহাটিঁ না করা
- কর্মস্থলে একনাগাড়ে বসে না থেকে কিছুক্ষন পরপর একটু হালকা হাটাহাটি বা নড়াচড়া করা
- শক্ত বিছানায় ঘুমানোর অভ্যাস করা
- অলিভ অয়েল কুশুম গরম করে ব্যথার স্থানে মৃদুভাবে মালিশ করা
- সুশৃঙ্খল জীবন যাপন করা
- কোমরে বেল্ট বেঁধে চলা ফেরা করা, যাতে কোনভাবেই কোমরে ঝাঁকুনি না লাগে
- ভরা বালতি বা ভারী বাজারের ব্যাগ হাতে ঝুলিয়ে বহন না করা ।
ব্যাথার রোগীর খাবারঃ
ব্যথা হ্রাস বৃদ্ধিতে খাবারের ভূমিকা অনেক । তাই ব্যথার রোগীদের নিম্ন বর্ণিত খাবারের প্রতি যত্নবান হওয়া উচিতঃ
*আমাদের নিত্যকার খাবারের মধ্যে সবুজ শাক-সব্জি ও ফলমূল অন্যতম । এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন এ, সি, ডি ও সাইট্রাস সমৃদ্ধ উপাদান । এগুলো অস্থিকে মজবুত ও অস্থির ক্ষয় রোধে সহায়তা করে । তাই খাবারের ব্যাপারে আমাদের বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে এবং বেশি সবুজ শাক-সব্জি ও ফলমূল খেতে হবে । তাছাড়া প্রতিদিনের খাবার হবে সহজ পাচ্য ও কম মসলাযুক্ত ।
চিকিৎসাঃ
কোমরের ব্যথায় সুনির্বাচিত আয়ুর্বেদিক ঔষধ বেশ ফলপ্রসু — যা বহুল পরিক্ষিত । লক্ষণসমষ্টি নির্ণয় করে রোগের হ্রাস-বৃদ্ধি ও ধাতুগত দিক বিবেচনায় রেখে নিম্নলিখিত ওষুধগুলো ব্যবহার করা যেতে পারেঃ ট্যাবলেট আরগোনিপ, ক্যাপসুল ম্যাক্সবোন-ডি,ক্যাপসুল ম্যাক্সজয়েন ।
Currentbdnews24.com