‘আমি এক অবিবাহিত মুসলমান মায়ের অবৈধ সন্তান’
বলিউডের খ্যাতিমান নির্মাতা, পরিচালক ও প্রযোজক মহেশ ভাট সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তার জন্ম, পরিবার ও ব্যক্তিগত প্রসঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেন। তিনি জানান, তার মা ছিলেন একজন মুসলমান নারী। কিন্তু তার মা বিবাহিত ছিলেন না। নিজেকে অবৈধ সন্তান দাবি করে তিনি জানান, সন্তানের প্রতি একজন বাবার ভূমিকা কেমন হওয়া উচিত, তা জানেন না মহেশ ভাট।
হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মহেশ ভাট বলেন, ‘বাবা কেমন হন, তা আমি জানি না। বাস্তবে আমার বাবা ছিল না, বাবার সম্পর্ক মনে রাখার মতো আমার কোনো স্মৃতি নেই। তাই বাবার ভূমিকা কী হওয়া উচিত সে সম্বন্ধে কোনো ধারণা নেই। আমি এক অবিবাহিত মুসলমান মা শিরিন মোহাম্মদ আলির অবৈধ সন্তান।’
হিন্দুস্তান টাইমসের সাক্ষাৎকারের একটা বড় অংশ জুড়ে উঠে এসেছে মহেশ ভাটের ব্যক্তিগত সম্পর্কের বিষয়। তিনি বলেছেন, ‘অনেক চেস্টা করেও আমার মায়ের স্বপ্নের সন্তান আমি হতে পারিনি। আমি স্কুলে ভালোভাবে পড়াশোনা করিনি, ভালো চাকরি পাইনি। আমি কোনো কিছু করতে গেলেই ভুল করে ফেলতাম। তবে নিজের লুকানো বিষয়, যা আমাকে হতাশ করত, সেসব সম্পর্কে বলার সুযোগ পেয়েছি। আমার অনুপস্থিত বাবা থেকে শুরু করে সব সম্পর্কের বিষয় আমাকে আমি হয়ে উঠতে সাহায্য করেছে।’
এরপর তার নামের ‘ভাট’ পদবি নিয়ে প্রশ্ন করা হয় সাক্ষাৎকারে। মায়ের নামে তিনি পরিচিত নন। তাহলে ‘ভাট’ পদবি কীভাবে পেলেন চলচ্চিত্র পরিচালক? এই প্রশ্নের জবাবে মহেশ ভাট বলেন, ‘আমি মাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম আমার নামের অর্থ কী? তিনি বলেছিলেন, তোমার বাবার কাছ থেকে জানতে হবে। কারণ তিনিই তোমার নামকরণ করেছেন। এরপর বাবার আসলে তাকে নামের অর্থ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেছিলেন, মহেশ অর্থ ঈশ্বরদের ঈশ্বর।’
মহেশ ভাট এরপর বলেন, ‘সন্তানের শিরশ্ছেদ করা ঈশ্বরকে আমি পছন্দ করতাম না আমার শৈশবে। তার পরিবর্তে আমার গণেশ নাম পছন্দ ছিল। শৈশবে আমার বালিশের নিচে ছোট গণেশ মূর্তি রেখে ঘুমাতাম। তিনি আমার প্রিয় দেবতা ছিলেন। গণেশের বাবার মতোই, আমার বাবাও আমার কাছে আগন্তুক ছিলেন। তিনি অনুপস্থিত ছিলেন।’
মহেশ ভাটের একের পর এক সিনেমায় ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপোড়েনের গল্প উঠে এসেছে। মহেশ ভাটের বাবা নানাভাই ভাট চলচ্চিত্র নির্মাতা ছিলেন। ‘আর্থ’, ‘জখম’ সিনেমাগুলোয় তার জীবনের গল্প দেখেছেন দর্শকরা। এ ছাড়া ভারতীয় টিভি চ্যানেল স্টার প্লাসে প্রচারিত ‘নামকরণ’ ধারাবাহিক নাটকে তারই শৈশবের গল্প দেখানো হয়েছে। তার অন্যান্য সিনেমার মতো টিভি নাটকটিও জনপ্রিয়তা পেয়েছিল।