fbpx

১৫শ কোটি টাকা ঋণ চেয়েছে বিমান

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ায় প্রায় এক মাস ধরে ডানা গুটিয়ে বসে আছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। বহরে থাকা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিমান সংস্থার ১৮টি উড়োজাহাজ অলস বসে আছে। বসে থাকলেও উড়োজাহাজগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ খরচ, কমর্চারীদের বেতনসহ অন্যান্য খরচ রয়েই গেছে। তাই বিমানকে বাঁচাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ১৫শ কোটি ঋণের আবেদন করেছে বিমান কর্তৃপক্ষ।

আজ বৃহস্পতিবার এ কথা জানান বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক(এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো.মোকাব্বির হোসেন। তিনি বলেন, ‌‌’দুই মাস ধরে আমাদের কোনো আয় নেই। জানুয়ারি থেকে একের পর এক রুট বন্ধ হয়ে গেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত প্রায় ১৩শ কোটি টাকার আর্থিক চাপে পড়েছে বিমান। আমরা সার্বিক অবস্থা জানিয়েছি সরকারকে। তাই বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ১৫শ কোটি টাকা ঋণের জন্য আবেদন করা হয়েছে।’

বিমান সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাসের কারণে আমদানি-রপ্তানি কমে যাওয়া ও ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে ৯০ কোটি টাকা আয় করেছে তারা। এ সময় বিমানের যাত্রী কমে গেছে ৩৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এপ্রিলে এসে এই হার একেবারে শূন্য হয়েছে। কিন্তু বহরের ১৮টি বিমান রক্ষণাবেক্ষণেই প্রতিমাসে ব্যয় করতে হচ্ছে ২৬০ কোটি টাকা। ফ্লাইট চলাচল বন্ধ হয়েছে যাওয়ায় যাত্রীদের টিকিটের টাকা ফেরত দিতে হচ্ছে। এই অংকও কয়েক শ কোটি টাকা। বিমানের বিশাল কর্মী বহরের বেতন ও বিভিন্ন দেশে অফিস রক্ষণাবেক্ষণ খরচ মাসে ২০৩ কোটি টাকা। এসব কিছুর জন্য এপ্রিল মাসে খরচ ৫৩৭ কোটি টাকা।

ই ব্যয় কমাতে গত মার্চ মাসে বিমানের সব কর্মকর্তার ওভারটাইম ভাতা প্রদান বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে ষষ্ঠ থেকে তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাসহ ককপিট এবং কেবিন ক্রুদের মূল বেতনের ১০ শতাংশ হারে কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিমান কর্তৃপক্ষ। বিমান সূত্রে জানা গেছে, চলতি এপ্রিল মাসে বিমানের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মীদের মূল বেতনের একটি অংশ কাটা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে গ্রুপ ১ থেকে গ্রুপ ৪ এর মধ্যে যারা রয়েছেন, তাঁদের মূল বেতনের ২০ শতাংশ, গ্রুপ ৫ থেকে গ্রুপ ৭ এর মধ্যে তাঁদের মূল বেতনের ২৫ শতাংশ এবং গ্রুপ ৮ থেকে তদুর্ধ্বদের মূল বেতনের ৫০ শতাংশ কাটা হবে। এছাড়া ককপিট ক্রুদের মধ্যে যাঁদের চাকরির সময়সীমা ৫ বছর বা এর নিচে তাঁদের মূল বেতনের ২৫ শতাংশ, যাঁদের বেতন ৫ বছরের বেশি এবং ১০ বছরের কম তাঁদের মূল বেতনের ৫০ শতাংশ এবং যাঁদের চাকরি ১০ বছর বা এর বেশি হয়ে গেছ, তাঁদের মূল বেতনের ৮০ শতাংশ কেটে রাখা হতে পারে। এই সিদ্ধান্ত চলতি এপ্রিল মাস থেকে কার্যকর হতে পারে। অবশ্য বাড়িভাড়া, যাতায়াতসহ অন্যান্য সুবিধা কাটা হবে না। তবে ঋণ পাওয়ার ওপর এপ্রিল মাসের বেতন নির্ভর করছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিমানের এমডি ও সিইও মো. মোকাব্বির হোসেন বলেন, ‌আমাদের হাতে কোনো টাকা-পয়সা নেই। ঋণের আবেদন করেছি। ঋণ পেলে বেতনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *