ব্রেকিং নিউজঃ
টাইগারদের অবিশ্বাস্য জয়
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের জয়? সে তো বোধ হয় অন্য জনমের কথা। টাইগারদের অবিশ্বাস্য জয়
আব্দুর রাজ্জাক সুইট- সহ-ক্রীড়া বার্তা সম্পাদক ঃ টেস্ট, ওয়ানডেতে ভালো কিছু দেখা গেলেও টি-টোয়েন্টি মানেই যেন হারের মহাকাব্য। আজও প্রথম ওভারের পর আরেকটি হারের গল্প লেখা হবে বলেই মনে হচ্ছিল।টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ছয় উইকেট হারিয়ে ২১৪ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা। দলের পক্ষে কুসল মেন্ডিস ৩০ বল খেলে করেন ৫৭ রান। ৪৮ বল খেলে ৭৪ রান করেন কুসল পেরেরা। ১৫ বল খেলে ৩২ রান করে অপরাজিত থাকেন উপুল থারাঙ্গা। দুই বল খেলে ৬ রান করে অপরাজিত থাকেন জীভন মেন্ডিস। তাসকিনের প্রথম ওভারেই ১৩ রান তোলা শ্রীলঙ্কা শেষ পর্যন্ত করল ২১৪ রান। রান তাড়া করে যে দলের জয়ের রেকর্ড ১৬৫ রানের সে বাংলাদেশের তাই আজ জয়ের আশাটা ছেড়ে দেওয়াটাই ছিল যুক্তিযুক্ত।
কিন্তু লিটন দাস ও তামিম ইকবাল আশা ছাড়েননি। প্রথম ওভারে মাত্র একটা চার, তবু ১০ রান । পরের ওভারে ১ চার ও ১ ছক্কা, এবারও ১০। এভাবেই চার, ছক্কা চলল। রানের চাকাও গড়াল না শুধু, দৌড়াল। ২৫ বলে ৫০ পেরোল বাংলাদেশ। স্কোরটা ১০০ হতে অবশ্য একটু সময় লাগল বাংলাদেশের। তবুও ৯.২ ওভারেই টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের স্কোর ১০০ হতে দেখা গেছে শেষ কবে!
এর মধ্যেই অবশ্য লিটন ফিরে গেছেন। তবে ১৯ বলের এক ইনিংসে (৪৩) চোখ জুড়ানো যে পাঁচটি ছক্কা মেরেছেন, তাতেই দলের আত্মবিশ্বাসটা টইটম্বুর হয়ে উঠল। দল ১০০ ছোঁয়ার পরের বলেই তামিম (২৯ বলে ৪৭) আউট হওয়ার পরও দলের বিশ্বাস টলল না। আজ যে সবাই বিশ্বাস নিয়েই নেমেছেন, আজ জিতবই এ কারণেই পরিস্থিতির সঙ্গে বেমানান সৌম্যের ইনিংসটির (২২ বলে ২৪) পরও বাংলাদেশ দেড় শ করে ফেলল ১৪ ওভারেই। ৬ ওভারে ৬৫ রান দরকার, বাংলাদেশ কি পারবে?
পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৭৪ রান করার পরও বিশ্বাস হচ্ছিল না। কারণ, এই বাংলাদেশই যে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ৩ বলে ১ রান তুলতে না পারার এক বিস্ময় জন্ম দিয়েছিল। উইকেটেও কেমন করে যেন সে ম্যাচের দুই কুশীলব, মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ! দলকে ২২ রান দুরে রেখে ভারত ম্যাচের মতোই প্রায় কাছাকাছি জায়গায় ক্যাচ দিয়ে মাহমুদউল্লাহ ফিরতেই মনে কু ডাকা শুরু। আবারও কি ‘কাছে তবু কত দূরের’ কষ্টে পুড়বে বাংলাদেশ? ১০ বলে ১৮ রানের দূরত্বে রেখে হাস্যকরভাবে সাব্বিরের রান আউটের পর তো মনে হচ্ছিল টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবারের মতো দুই শ রান করাটাই আজকের দিনের সান্ত্বনা হয়ে থাকবে।
কিন্তু একজন মুশফিক যে ছিলেন উইকেটে। ২৪ বলে ফিফটি ছুঁয়েই আর দায়িত্ব সাড়েননি। ১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে ম্যাচ যখন হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে, ঠিক তখনই এক ছক্কা।
শেষ ওভারে ৯ রান দূরত্বে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ, স্ট্রাইকে মুশফিক। প্রথম বলে ২ রান, ৫ বলে ৭! গ্যালারি স্তব্ধ,
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: পাঁচ উইকেটে জয়ী বাংলাদেশ।
শ্রীলঙ্কা ইনিংস: ২১৪/৬ (২০ ওভার)
(দানুশকা গুনাথিলাকা ২৬, কুসল মেন্ডিস ৫৭, কুসল পেরেরা ৭৪, দাসুন শানাকা ০, দিনেশ চান্দিমাল ২, উপুল থারাঙ্গা ৩২*, থিসারা পেরেরা ০, জীভন মেন্ডিস ৬*; তাসকিন আহমেদ ১/৪০, মোস্তাফিজুর রহমান ৩/৪৮, রুবেল হোসেন ০/৪৫, মেহেদী হাসান মিরাজ ০/৩১, নাজমুল ইসলাম অপু ০/২০, সৌম্য সরকার ০/১১, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ২/১৫)।
বাংলাদেশ ইনিংস: ২১৫/৫ (১৯.৪ ওভার)
(তামিম ইকবাল ৪৭, লিটন দাস ৪৩, সৌম্য সরকার ২৪, মুশফিকুর রহিম ৭২*, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ২০, সাব্বির রহমান ০, মেহেদী হাসান মিরাজ ০*; দুশমান্থ চামিরা ১/৪৪, আকিলা ধনঞ্জয়া ০/৩৬, নুয়ান প্রদীপ ২/৩৭, দানুশকা গুনাথিলাকা ০/২২, থিসারা পেরেরা ১/৩৬, জীভন মেন্ডিস ০/২৫, দাসুন শানাকা ০/১২)।
প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ: মুশফিকুর রহিম (বাংলাদেশ)।