fbpx

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে বসার বিষয়ে মতামত জানতে চান প্রধানমন্ত্রী। মন্ত্রিসভার সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত দেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক মন্ত্রী সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।রোববার জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে অর্থবহ সংলাপের জন্য প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি দেন ড. কামাল হোসেন। সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতেই আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত হয়।

এদিকে,সোমবার আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে জানিয়ে দিতে চাই যে, আওয়ামী লীগ তাদের সঙ্গে সংলাপে বসবে। এই সংলাপে আমাদের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।

সংলাপের দিন সময় ও স্থান পরবর্তীতে তাদের জানিয়ে দেয়া হবে- জানান ওবায়দুল কাদের।সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ আমি আপনাদের এবং পুরো জাতিকে সারপ্রাইজ দেব। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার সম্মতিক্রমে একটি সুখবর জানাব। এ খবরে রাজনীতির মাঠে শান্তির বাতাস বইবে বলে মনে করি।

পরে তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেন একটি চিঠি দিয়েছেন। আজ মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী ও সভাপতি শেখ হাসিনা উপস্থিত নেতাদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করেন। অনির্ধারিত এ বৈঠকে আলোচনা শেষে সর্বসম্মতিক্রমে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংলাপে বসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।কারণ শেখ হাসিনার দরজা কারও জন্য বন্ধ থাকে না- বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

মন্ত্রিসভার বৈঠক সূত্রে আরও জানা যায়, অধিকাংশ সদস্যই আলোচনার পক্ষে ছিলেন। তবে কয়েকজন আলোচনার বিপক্ষে মত দেন। তাদের যুক্তি ছিল, এতদিন আমরা কারও সঙ্গে কোনো আলোচনা হবে না বলে এসেছি। তাহলে এখন কীভাবে আলোচনায় বসবো ?

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৩ সালে আলোচনার জন্য বিএনপিকে আমি প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা সেটা গ্রহণ করেনি। এবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিজ থেকে আলোচনার জন্য আমার নিকট সময় চেয়েছে। কেউ যদি আমার বাড়িতে আসতে চায় তাহলে আমি কীভাবে তাদের না করি।তিনি বলেন, আলোচনা তো বিএনপির সঙ্গে হচ্ছে না। আলোচনা হচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে।

গতকাল রোববার প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো চিঠিতে ড. কামাল হোসেন উল্লেখ করেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এক দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা।যেসব মহান আদর্শ ও মূল্যবোধ আমাদের জনগণকে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে উজ্জীবিত ও আত্মত্যাগের উদ্বুদ্ধ করেছিল- তার অন্যতম হচ্ছে গণতন্ত্র।গণতন্ত্রের প্রথম শর্তই হচ্ছে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান। জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ জনগণের পক্ষে জনগণের ক্ষমতা প্রয়োগ করবে এবং জনগণকে শোষণ থেকে মুক্তির লক্ষ্যে- রাষ্ট্রের আইন প্রণয়ন ও শাসনকার্য পরিচালনা করবে- এটাই আমাদের সাংবিধানিক অঙ্গীকার।

চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে আরও বলা হয়, আপনি নিশ্চয়ই একমত হবেন যে, বাংলাদেশের জনগণ নির্বাচনকে একটি মহোৎসব মনে করে। ব্যক্তির এক ভোট এর বিধান জনগণের জন্য বঙ্গবন্ধুই নিশ্চিত করেছেন- যা রক্ষা করা আমাদের সবার সাংবিধানিক দায়িত্ব।

ইতিবাচক রাজনীতি একটা জাতিকে কীভাবে ঐক্যবদ্ধ করে জনগণের ন্যায়সংগত অধিকারসমূহ আদায়ের মূলশক্তিতে পরিণত করে-তা বঙ্গবন্ধু আমাদের শিখিয়েছেন। নেতিবাচক রুগ্ন-রাজনীতি কীভাবে আমাদের জাতিকে বিভক্ত ও মহাসঙ্কটের মধ্যে ফেলে দিয়েছে, তাও আমাদের অজানা নয়। এ সঙ্কট থেকে উত্তরণ ঘটানো আজ আমাদের জাতীয় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট ৭ দফা দাবি ও ১১ দফার লক্ষ্য ঘোষণা করেছে। একটি শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সবার অংশগ্রহণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে -জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে একটি অর্থবহ সংলাপের তাগিদ অনুভব করছে এবং সে লক্ষ্যে কার্যকর উদ্যোগ প্রত্যাশা করছি।

currentbdnews24.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *