আসামে পাঁচ বাঙালিকে গুলি করে হত্যা
উত্তর-পূর্ব ভারতীয় রাজ্য আসামের তিনসুকিয়াতে গুলি করে পাঁচ বাংলাভাষীকে হত্যা করা হয়েছে।
১ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার রাতে তিনসুকিয়া এলাকার খেরবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন—শ্যামলাল বিশ্বাস, অনন্ত বিশ্বাস, অবিনাশ বিশ্বাস, সুবল দাস এবং ধনঞ্জয় নমঃশূদ্র।
একই সময় গুলিতে আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন।
পুলিশ জানায়, অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা সামরিক পোশাক পরে গ্রামটিতে হাজির হয়। পরে শ্যামলাল বিশ্বাসের দোকানের সামনেই তাকে গুলি করে হত্যা করে। নিহত বাকি ব্যক্তিরা ওই দোকানের আশপাশেই ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ৪০ থেকে ৫০ রাউন্ড গুলি চালায় হামলাকারীরা।
পুলিশের দাবি, অন্তত ছয় জন দুষ্কৃতকারী দুটি দলে ভাগ হয়ে এই হামলা চালায়।
এদিকে আসামের বাঙালি সংগঠনগুলোর ধারণা, আলফা (স্বাধীন গোষ্ঠী) এই হামলা চালিয়ে থাকতে পারে।
জাতীয় নাগরিক পঞ্জি হালনাগাদ করা এবং নাগরিকত্ব আইন পরিবর্তন করে ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের পরেও যেসব বাংলাভাষী আসামে এসেছেন, বিশেষত বাংলাদেশ থেকে, তাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ইস্যুতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই অসমিয়া এবং বাঙালিদের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে চলছিল।
অসমিয়া জাতীয়তাবাদী সংগঠনগুলো এর মধ্যে এ নিয়ে একটা বনধ্ও করেছে। এ ছাড়া বাঙালিরা নাগরিকত্বের দাবিতে গুয়াহাটিতে তাদের প্রস্তাবিত সমাবেশ করতে গেলে শারীরিক আঘাত করা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছিল।
এদিকে হত্যার ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং, আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল এবং পশ্চিবমঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী।
যদিও আসামের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের বক্তব্য, তারা আগেই সরকারকে সাবধান করেছিল, যেভাবে মেরুকরণ করা হচ্ছে ভোটের রাজনীতির জন্য, তার ফলে সংঘাত বাধতে পারে। আজকের ঘটনায় সেটাই প্রমাণিত হলো।
ঘটনার প্রতিবাদে সারা আসাম বাঙালি ছাত্র যুব ফেডারেশন শুক্রবার ১২ ঘণ্টার তিনসুকিয়া বনধের ডাক দিয়েছে। এ ছাড়া দুষ্কৃতকারীদের আটক করা না হলে শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের বনধ্ চলবে বলেও ঘোষণা দেয় যুব ফেডারেশন।