fbpx

নিখোঁজ হয়েছেন’

১৪০ জন শিয়ামতাবলম্বী নিখোঁজ হয়েছেন’

১৪০ জন শিয়ামতাবলম্বী নিখোঁজ

পাকিস্তানের শিয়া অধিকারকর্মীরা বলছেন, তাঁদের অনেক সদস্যকেই গুম করা হচ্ছে। তাঁদের অভিযোগ, গত দুই বছরে ১৪০ জনের মতো শিয়ামতাবলম্বী নিখোঁজ হয়েছেন। তবে সন্দেহের এ তির দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর থাকলেও তারা তা অস্বীকার করছে।

কেন শিয়াদের গুম করা হচ্ছে, এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছে বিবিসি। এ ব্যাপারে শিয়া নেতাদের বক্তব্য হলো, সেসব ব্যক্তিই এ পর্যন্ত নিখোঁজ হয়েছেন, যাঁরা সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদের সমর্থনে যুদ্ধ করতে গিয়েছিল। নেতাদের মতে, নিখোঁজ ব্যক্তিরা সিরিয়ার গোপন মিলিশিয়া গ্রুপ জয়নাবিয়ান ব্রিগেডের সদস্য।

শিয়া নেতারা জানিয়েছেন, ওই ব্রিগেডে হাজারখানেক পাকিস্তানি শিয়া রয়েছে। নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নাতনি জায়নাব বিনতে আলীর নামে ওই ব্রিগেডের নাম রাখা হয়েছে। সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে জায়নাবের সমাধি। ধারণা করা হচ্ছে, উগ্র সুন্নিদের আক্রমণ থেকে এ সমাধিকে রক্ষা করার জন্যই এই গোপন মিলিশিয়া বাহিনী লড়াই করে থাকে। পাশাপাশি এই ব্রিগেডের সদস্যরা আলেপ্পোসহ সিরিয়ার আরও কয়েকটি স্থানে লড়াই করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

শিয়া নেতাদের বক্তব্যে কিছু সত্যতা মেলে আটক হওয়ার পর মুক্তি পাওয়া এক তরুণের বক্তব্য থেকে। তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তাঁকে একটি ছোট অন্ধকার ঘরে রাখা হয়েছিল। সেখানে তাঁকে বৈদ্যুতিক শকসহ নানাভাবে নির্যাতন করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তারা বারবার তাঁকে জয়নাবিয়ান মিলিশিয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিল।

নিখোঁজ শিয়াদের সন্ধান দাবিতে পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন চলছে আসছে। তেমনই একজন আন্দোলনকারী হলেন রাশিদ রিজভি। তিনি করাচিতে এ আন্দোলনের প্রধান হিসেবে রয়েছেন। এ আন্দোলনকারীদের বক্তব্য হলো, শিয়াদের মধ্যে যাদের গুম করা হচ্ছে, তাদের হয় মুক্তি দেওয়া, নচেৎ নিয়ম মেনে আদালতে তোলা হোক। রাশিদ রিজভি বিবিসিকে বলেন, এ পর্যন্ত যেসব ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে, তার বেশির ভাগই মধ্যপ্রাচ্যফেরত। তারা সেখানে গিয়েছিল ধর্মীয় আচার-আচরণ পালন করার জন্য।

রাশেদ রিজভি পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের কিছু সদস্য আমার কাছে এসেছিল। তারা আমাদের আন্দোলন থেকে বিরত করতে বিভিন্নভাবে বোঝাতে চেষ্টা করেছে। আমি বলেছিলাম, তোমরা কেন তাদের উঠিয়ে নিয়ে গেলে? জবাবে তারা বলেছিল, আমরা মনে করি ওসব লোক সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট (আইএস) ও আল-কায়েদার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়েছিল।’

তবে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। দেশটির সরকারি হিসাবমতে, ১ হাজার ৫০০টির বেশি নিখোঁজের ঘটনার কোনো সমাধানই হয়নি। নিখোঁজ ব্যক্তিদের এই তালিকায় সন্দেহভাজন সুন্নি জিহাদি, জাতীয়তাবাদী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নেতা ও সামরিক বাহিনীর সমালোচনাকারী ধর্মনিরপেক্ষ ব্যক্তিরা রয়েছেন।

বিবিসি তাদের প্রতিবেদনটি একটি ঘটনা দিয়ে শুরু করে। সেখানে ২০১৬ সালের ১৬ নভেম্বর রাতে করাচির এক যুবককে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা বর্ণনা করা হয়। নাঈম হায়দার (৪০) নামের ওই যুবককে পেছনে হাত বেঁধে মুখোশ পরা কিছু অস্ত্রধারী তুলে নিয়ে যায়। দৃশ্যটি পার্শ্ববর্তী একটি মসজিদের সিসি টিভিতে দেখা যায়। কিন্তু পরে যোগাযোগ করা হলে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ ব্যাপারে কিছু জানে না বলে মন্তব্য করে। সেদিন থেকে এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন হায়দার। শিয়া অধিকারকর্মীরা বলছেন, নিখোঁজ হওয়া সব ব্যক্তির ঘটনার বিবরণ প্রায় একই। শুধু করাচি থেকেই তুলে নেওয়া হয়েছে অন্তত ২৫ জনকে।

https://currentbdnews24.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *