রডের বদলে বাঁশ
সেতুতে রডের বদলে বাঁশ ব্যবহার
ঢালাইয়ের ভিতর থেকে বাঁশ বেরিয়ে আসতে দেখেন স্থানীয় মানুষ
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় নির্মাণের এক বছরের মাথায় ফাটল দেখা দেওয়া একটি সেতুতে রডের বদলে বাঁশ ব্যবহার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সম্প্রতি সেতুর এপ্রোচের গোড়ায় ফাটল দেখা দিলে আরসিসি ঢালাইয়ের ভিতর থেকে বাঁশ বেরিয়ে আসতে দেখেন স্থানীয় মানুষ। বীরগাঁও-হাঁসকুঁড়ি সড়কের ওপর নির্মিত এই সেতুর নির্মাণ কাজে নিম্নমানের কাঁচামাল ব্যবহারেরও অভিযোগ এলাকাবাসীর।
জানা যায়, ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ কর্মসূচির আওতায় প্রায় ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নের বীরগাঁও-হাঁসকুঁড়ি সড়কে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ওই সেতুটি নির্মাণের কার্যাদেশ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স স্মার্ট এন্টারপ্রাইজ।
গত বছর হাওরে অকাল বন্যা চলাকালে স্থানীয়রা যখন ধান তুলতে ব্যতিব্যস্ত তখন অধিক লাভের আশায় তড়িঘড়ি করে উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা অফিসের অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় দায়সাড়াভাবে সেতুটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। স্থানীয় বাসিন্দা দোলন মিয়া জানান, নির্মাণ কাজে ঠিকাদারের অনিয়মের আমরা বাধা দিলেও তারা আমাদের কথা আমলে নেয়নি। তাই অল্প দিনে সেতুর গোড়ায় ফাটল দেখা দিয়েছে। এখন দেখছি রডেল বদলে বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান মো. নূর কালাম বলেন, নির্মাণ কাজে অনিয়মের ব্যাপারে কাজ চলাকালীন স্থানীয় ওয়ার্ডের সদস্য জুবায়ের আহমদ প্রতিবাদ করলে তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলার হুমকি দেন ঠিকাদার। এই অনিয়মের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সেতুর নির্মাণ শ্রমিক:
এদিকে, সেতুর নির্মাণ শ্রমিক রফিক আলী রডের বদলে বাঁশ ব্যবহারের কথা সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেছেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স স্মার্ট এন্টারপ্রাইজের মালিক মুজাহিদ মিয়ার বক্তব্য জানতে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন দাবি করেন, সেতুতে রডের বদলে বাঁশ নয়, সাপোর্ট হিসেবে বাঁশের টুকরো ব্যবহার করা হয়েছে। রবিবার সেতুর ওই অংশ প্রশাসন ও স্থানীয় জনগণের উপস্থিতিতে ভেঙে ফেলা হবে বলে জানান তিনি। সেতুর নিম্নমানের কাজের ব্যাপারে পিআইও বলেন, বন্যার সময় কাজ করায় সেতুর কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া সেতুটি ভালোই আছে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একটি মহল এমন প্রচারণা চালাচ্ছে বলে দাবি তার। দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান হাজী আবুল কালাম বলেন, সেতু নির্মাণে অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।