শিরোপা খাতা খুলেছেন গার্দিওলা
‘এ তো গার্দিওলার বার্সেলোনা’—এখনো মেসি, ইনিয়েস্তারা অতি মায়াবী ফুটবল খেললে অনেকেরই মুখ ফসকে বের হয়ে যায় কথাটি।
অথচ গার্দিওলা বার্সেলোনার কোচের দায়িত্ব ছেড়েছেন অনেক দিন হতে চলল। আসলে বার্সেলোনার কোচ হিসেবে গার্দিওলা যে কীর্তি রেখে এসেছেন, সে কারণেই মেসি-ইনিয়েস্তাদের সঙ্গে তাঁর নামটা এমন মিলেমিশে গেছে। টানা তিনটি স্প্যানিশ লিগ শিরোপার পাশাপাশি যদি কোনো কোচ দুটি চ্যাম্পিনস লিগ জেতেন, তাহলে তিনি এমনিতেই অমর হয়ে থাকেন ইতিহাসে। কিন্তু তিনি এতে কখনোই সন্তুষ্ট হতে পারেননি। নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে চেয়েছেন। সে কারণেই বার্সেলোনা ছেড়েছেন, গেছেন জার্মানিতে, হয়েছেন বায়ার্ন মিউনিখের কোচ, সেখান থেকে এসেছেন ইংল্যান্ডে, ম্যানচেস্টার সিটিতে।
বায়ার্নের হয়ে শিরোপা জিতেছেন, ইংল্যান্ডে আসার পর সেটিই বাকি ছিল। কাল প্রথম ইংলিশ-শিরোপাটিও জিতে নিলেন তিনি। লিগ কাপে আর্সেনালকে ৩-০ গোলে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েই ম্যানচেস্টার সিটি গার্দিওলাকে উপহার দিয়েছে ইংল্যান্ডের মাটিতে প্রথম শিরোপা।
ওয়েম্বলিতে কাল ম্যানচেস্টার সিটির সামনে দাঁড়াতেই পারেনি আর্সেন ওয়েঙ্গারের আর্সেনাল। প্রথমার্ধে সার্জিও আগুয়েরোর গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে একটি করে গোল করেছেন ভিনসেন্ট কম্পানি ও ডেভিড সিলভা।
১৮ মিনিটেই আগুয়েরোর গোলে এগিয়ে যায় ম্যানচেস্টার সিটি। গোলরক্ষক ব্রাভোর নেওয়া লম্বা শট নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডি-বক্সের বাইরে থেকে ডান পায়ের শটে বল জালে জড়ান আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার। ৫৮ মিনিটে ব্যবধান ২-০ করেন ডিফেন্ডার কোম্পানি। কেভিন ডি ব্রুইনের নিচু কর্নারে বক্সের বাইরে থেকে শট নেন জার্মান মিডফিল্ডার ইলকাই গিনদোয়ান। গোলমুখ থেকে পা বাড়িয়ে শুধু বলের দিকটা গোলের দিকে পাল্টে দিয়েছেন কম্পানি। সাত মিনিট পর ৩-০ করেছেন সিলভা। দানিলোর বাড়ানো বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে কোণ থেকে বাঁ পায়ের শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন স্প্যানিশ এই মিডফিল্ডার। এই গোলের পরেই শুরু হয়ে যায় সিটির শিরোপা উৎসব।
গার্দিওলা যেখানে প্রথম শিরোপা ঘরে তুলেছেন, ওয়েঙ্গার সেখানে তৃতীয়বার খালি হাতে ফিরলেন ফাইনাল থেকে।
ম্যাচ শেষে নিজের প্রতিক্রিয়ায় উচ্ছ্বাসই ঝরেছে গার্দিওলার কণ্ঠে, ‘শিরোপাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমরা খুবই খুশি এটি জিততে পেরে। ম্যানচেস্টার সিটির সবাইকে শুভেচ্ছা জানাতে চাই।’
তবে লিগের কাপের শিরোপাটিকে কিছুতেই নিজের বলে মানতে চাননি এই স্প্যানিশ কোচ, ‘এটি পুরোপুরি ম্যানচেস্টার সিটির শিরোপা। এই শিরোপা খেলোয়াড়দের, সমর্থকদের। আমার হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’