‘শক্তিবর্ধক দাওয়াই’ খেয়ে চাচা-ভাতিজার মৃত্যু
ঢাকার আশুলিয়ায় নিজেদের তৈরি ‘শক্তিবর্ধক দাওয়াই’ খেয়ে চাচা-ভাতিজা মারা গেছেন
ঢাকার আশুলিয়ায় নিজেদের তৈরি ‘শক্তিবর্ধক দাওয়াই’ খেয়ে চাচা-ভাতিজা মারা গেছেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আরও দুজন সাভারের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে ভাদাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের মোতালেব হোসেন (২৬) ও তাঁর ভাতিজা জিল্লুর রহমান (২৪)।
ঢাকার একটি বিশেষজ্ঞ দল বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। দলটি ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য নিয়ে গেছে।
নিহত ব্যক্তিদের স্বজন ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মোতালেব হোসেনের ভাই নাসির উদ্দিন ও ভাতিজা জিল্লুর রহমানসহ তাঁদের দুই আত্মীয় ফরিদ উদ্দিন ও শামীম হোসেন ভাদাইল এলাকার একটি কলোনিতে বাড়ি ভাড়া করে থাকতেন। তাঁরা সবাই বিভিন্ন পোশাক কারখানায় চাকরি করেন।
পুলিশ জানায়, বেশ কিছুদিন ধরে নাসির উদ্দিন চাকরির পাশাপাশি ‘কবিরাজি চিকিৎসা’ করে আসছিলেন। কয়েক দিন আগে তিনি পরীক্ষামূলকভাবে ‘শক্তিবর্ধক দাওয়াই’ তৈরি করেন। গত বুধবার রাতে মোতালেব, জিল্লুর, শামীম ও ফরিদ ওই দাওয়াই খান। তখন নাসির বাসায় ছিলেন না। দাওয়াই খাওয়ার কিছু সময় পর তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্থানীয় লোকজন চিকিৎসার জন্য তাঁদের সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঘটনার দিন রাত দেড়টার দিকে মোতালেব মারা যান। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান জিল্লুর রহমান। শামীম ও ফরিদকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ওই বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক নূরুল হক বলেন, বুধবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে চারজন একসঙ্গে অসুস্থ হয়ে পড়েন। দাওয়াই খাওয়ার পর অসুস্থবোধ করতে থাকেন বলে তাঁরা তাঁকে (নূরুল) জানিয়েছিলেন। দাওয়াই খাওয়ার পরপরই তাঁদের বুক জ্বালাপোড়া শুরু করে।
সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আমজাদুর হক বলেন, দাওয়াই থেকে বিষক্রিয়ার কারণে দুজন মারা গেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। তিনি বলেন, খবর পেয়ে মহাখালীর রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) একটি বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পরীক্ষার জন্য ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গেছে দলটি।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল আউয়াল বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঘটনার পর কথিত কবিরাজ নাসির এলাকা থেকে চলে যাওয়ায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব হয়নি।