‘লোকটি হঠাৎ করে আমার জামার ভিতর হাত ঢুকিয়ে দেয়’
দাবানলের মতো সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে #মিটু আন্দোলন। শুরুটা হয়েছিল হলিউডে। বিশ্বের জনপ্রিয় নির্মাতা, প্রযোজক, অভিনেতা ও বিনোদন সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আনেন হলিউডের নামিদামি মডেল ও অভিনেত্রীরা। এরপর #মিটু আন্দোলনের হাওয়া লাগে অন্যান্য দেশেও। সেই হাওয়াতে উত্তাল ভারতের বলিউড ইন্ডাস্ট্রিও। এই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্ব প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের বেশ কজন অভিনয়শিল্পীও।
যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদ জানিয়ে মুখ খুলেছেন মিস আয়ারল্যান্ডখ্যাত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মডেল ও অভিনেত্রী মাকসুদা আক্তার প্রিয়তি। ২০১৫ সালের কথা, তখন তিনি সবে মিস আয়ারল্যান্ড খেতাবে ভূষিত হয়েছেন। সে সময়ে রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম তার ওপর যৌন নির্যাতন চালান বলে অভিযোগ তুলেছেন প্রিয়তি।
বিষয়টি সম্পর্কে ৩০ অক্টোবর প্রিয়তি তার ফেসবুকে একটি পোস্টে লিখেন, ‘এই লোকটি তার অফিসে হঠাৎ করে টেবিল থেকে উঠে এসে আমার জামার ভিতর হাত ঢুকিয়ে আমার বক্ষে চাপ দেয়, ২০১৫ সালের মে মাসে তাদের প্রোডাক্ট প্রমেক্স-এর বিজ্ঞাপনের পেমেন্ট আনতে গিয়ে ( এই পেমেন্ট যদিও আমি পাইনি)। সাঈদা যেমিরান জামান লোপা আপু, আপনার নিশ্চয়ই মনে আছে, আপনাকে রুম থেকে বের করে দিয়েছিল আমার সাথে প্রাইভেট কথা আছে এই কথা বলে। আর রুম থেকে বের হয়ে আমি আপনার কাছে কান্না করেছিলাম এই পিশাচের এই কর্মকাণ্ডে, মনে আছে আপু , নাকি অস্বীকার করবেন? খালেদ হোসাইন সুজন, তোমার কি মনে আছে এ ঘটনার পর আমি তোমাকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে কান্না করেছিলাম এই অপমান সহ্য করতে না পেরে কিন্তু আমরা নিরুপায় ছিলাম তাদের ক্ষমতার কাছে। আমি কিন্তু তখন কারেন্ট মিস আয়ারল্যান্ড ছিলাম।’
প্রিয়তি তার ওই পোস্টে আরও লিখেন, ‘বাংলাদেশে #মি_টু এর মুভমেন্ট কীভাবে হবে? এই লোককে নিয়ে কেউ কোনো নিউজ করবে না, কারণ গণমাধ্যম তাদের ভয় পায়, সাংবাদিকদের চাকরি চলে যাবে। কারণ বেশিরভাগ টিভি চ্যানেল ও পত্রিকা তাদের হাতের মুঠোয়। কীভাবে খুলবে মেয়েরা মুখ? যেখানে জানবে তাদের কিছুই হবে না। এই লোকটির নাম রফিকুল ইসলাম , রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং বসুন্ধরা গ্রুপের ডান হাত। এই পোস্টের পর হয়তো আমার নামে মানহানির মামলা হবে , না হয় বলবে অসৎ উদ্দেশ্য আছে আমার ইত্যাদি ইত্যাদি। বাংলাদেশের মেয়েরা ততদিন মুখ খুলবে না, #মি_টু ও হবে না, ভারতের মতো যতদিন ওরা অনুভব করবে তাদের জন্য বাংলাদেশের গণমাধ্যম স্বাধীন এবং তাদের পাশে থাকবে সে যত উপরের মানুষই হোক না কেন। আমি শুধু এতটুকু বলতে চাই, পুরো ঘটনাটি লজ্জায় লিখতে পারিনি কারণ ঘটনা এর চেয়ে ভয়াবহ ছিল। তাদের ওয়েবসাইট
প্রিয়তির পোস্টে থাকা রংধনু গ্রুপের ওয়েব সাইটে প্রবেশ করা যাচ্ছে না। এ বিষয়ের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামকেও ফোনে পাওয়া যায়নি। ওই ঘটনার দিন উপস্থিত ছিলেন মডেল খালেদ হোসাইন সুজন, তার সঙ্গেও এ বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য যোগাযোগ করা হলে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।