৩ জনের যাবজ্জীবন
রাবি ছাত্রসহ দুজনের ফাঁসি, ৩ জনের যাবজ্জীবন
তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত
স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইংরেজী বিভাগের অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যা মামলায় দুই আসামির ফাঁসি এবং তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে সবার ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ডেরও আদেশ দেয়া হয়। মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শিরিন কবিতা আখতার এ রায় ঘোষণা করেন।
ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিরা হলো, রাবির ইংরেজী বিভাগের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম ও বগুড়ার মাসকাওয়াত হোসেন সাকিব ওরফে আবদুল্লাহ। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো রাবির ছাত্র রহমতুল্লাহ ও খুনীদের আশ্রয়দাতা রাজশাহীর পবা নারকেলবাড়িয়া পূর্বপাড়া গ্রামের আব্দুস সাত্তার ও তার কলেজ পড়ুয়া ছেলে রিপন আলী।
তাদের মধ্যে শরিফুল পলাতক। আর জামিনে রয়েছে আব্দুস সাত্তার। বাকি তিন আসামিকে দুপুরে কড়া নিরাপত্তায় রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
এর আগে গত বছরের ৬ নবেম্বর জেএমবির আট সদস্যকে অভিযুক্ত করে ড. রেজাউল হত্যা মামলার চার্জশীট দাখিল করেন রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক রেজাউস সাদিক। তবে হত্যা মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে জেএমবি সদস্য খাইরুল ইসলাম বাধন, নজরুল ওরফে বাইক হাসান ও ওসমান আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়।
দেশব্যাপী ব্লগার, মুক্তমনা, প্রগতিশীল ব্যক্তিদের টার্গেট কিলিংয়ের অংশ হিসেবে অধ্যাপক রেজাউল করিমকে হত্যা করে জঙ্গীরা। মামলার তদন্তে এই তথ্য পাওয়া গেছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ২৩ এপ্রিল সকালে রাজশাহী মহানগরীর শালবাগান এলাকায় নিজ বাসা থেকে একটু দূরে রাবির ইংরেজী বিভাগের অধ্যাপক ড. এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে কুপিয়ে হত্যা করে জঙ্গীরা।
এদিকে আলোচিত এই মামলার রায় ঘোষণা কেন্দ্র করে সকাল থেকেই রাজশাহীর আদালত চত্বরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ড. রেজাউলের পরিবার। আদালতে তার মেয়ে রিজওয়ানা হাসিন শতভি বলেন, এখন আদালতের এ রায়ের দ্রুত কার্যকর চান তারা। একই সঙ্গে এ মামলায় পলাতক আসামিদের অবিলম্বে গ্রেফতার দাবি করেন তিনি।
ইংরেজী বিভাগের সন্তুষ্টি প্রকাশ ॥ রাবি ইংরেজী বিভাগের অধ্যাপক রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যা মামলায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে ইংরেজী বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অধ্যাপক রেজাউলের পরিবার।
ইংরেজী বিভাগের সভাপতি ড. এএফএম মাসউদ আখতার বলেন, ইংরেজী বিভাগের সেন্টিমেন্ট অনুযায়ী আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট। বিজ্ঞ আদালত এই হত্যা মামলার সুষ্ঠু রায় ঘোষণা করেছে। এখন আমাদের দাবি, অবিলম্বে যেন এই সাজা কার্যকর করা হয়। মামলার রায় যেন বহাল থাকে সেজন্য আমরা উচ্চ আদালতে আপীল করব। আমাদের বিশ্বাস, সেখানেও আমরা ন্যায়বিচার পাব। আদালতের রায়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা। একই সঙ্গে পলাতক আসামি শরিফুলকে গ্রেফতার করে সকলের শাস্তি নিশ্চিতের জোর দাবি জানান তিনি।