fbpx

ম্যাচ হারার পেছনের কারন জানলে অবাক হবেন !!

সেই একই প্রশ্ন। কেমন এমন হচ্ছে, কেন এমন হার? ভারতের কাছে এমন অসহায় হারের কারন জানলে অবাক হবেন ! ২০ ওভারের ম্যাচে প্রায় ১০ ওভারই ডট বল।

 আব্দুর রাজ্জাক সুইট- সহ-ক্রীড়া বার্তা সম্পাদক ঃ এ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর উপায়বা কী। মুখে হাসি নিয়েই মাহমুদ উল্লাহ বললেন,‘ আসলে দায় দেব ব্যাটসম্যানদেরই। কারণ, এত ভালো উইকেটে ভালো একটি পুঁজি বোলারদের দিতে পারিনি। বোলাররা অনেক চেষ্টা করেছে। রবেল, তাসকিন, মুস্তাফিজ ভালো করেছে। এটা ইতিবাচক দিক। এখন ব্যাটসম্যানরা একটু দায়িত্ব নিয়ে ভালো করতে হবে।’

‘আমার মনে হয়, ১৭০-১৮০ রানের উইকেট ছিল। আমরা নিজেরাই ভালো করতে পারিনি। উইকেট নিয়ে কোনো অভিযাগ নেই। ব্যাটসম্যনরাই কাজে লাগাতে পারিনি।’

২০ ওভারের ম্যাচে ৫৭টি ডট বল। চার ১২টি ছ্ক্কা মাত্র ৩টি। ব্যাটসম্যানরা কতটা সাহসী ছিলেন তা এই পরিসংখ্যানই পরিষ্কার করে দেয়। এত বেশি ডটবলকেই সবচেয়ে বড় সর্বনাশ মনে করছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

তিনি বলেন,‘টি-টোয়েন্টিতে মাঝের ওভারগুলোতে আমরা ধুঁকছি। অনেক বেশি ডট বল খেলছি, তার পরও উইকেট বিলিয়ে আসছি। আজকেও আমরা ভালোই শুরু করেছিলাম, কিন্তু পরে নিয়মিত উইকেট হারিয়েছি।টি-টোয়েন্টিতে মাঝের ওভারগুলোতে একটু পিছিয়ে আছি আমরা। বরাবরই এখানে খেই হারিয়ে ফেলি। সিঙ্গেল নিতে পারছি না, ডাবলসও না। পাশাপাশি বাউন্ডারিও হচ্ছিল না আজ। একই সঙ্গে উইকেটও দিয়ে এসেছি।’

গত কমাস ধরে টানা খারাপ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দল। চাপ এবং সংশয় যেন ব্যাটসম্যানদের পেয়ে বসেছে। এই সংশয়ের কারণই কী এত বেশি ডট বল? রিয়াদ বললেন,‘আমার মনে হয়, হ্যাঁ সংশয় ছিল। ডট বলগুলোতে সেটিরই প্রমাণ মিলেছে। আমি নিজেই যেমন মনে হয় ৭টি ডট বল খেলেছি। তার পর আউট হয়ে গেছি। এই জায়গাটায় আমাদের কাজ করতেই হবে। এত ডট বল খেলে এগিয়ে যাওয়া কঠিন। শুধু বাউন্ডারির ওপর নির্ভর করে চলবে না। সিঙ্গেলের পাশাপাশি বাউন্ডারি হলে ব্যাটসম্যানরা চাপে থাকে না

টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিং করার আমন্ত্রণ জানান ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা।

১ম ইনিংস বাংলাদেশ

উইকেট পতন: ১-২০ (সৌম্য, ২.৪ ওভার), ২-৩৫ (তামিম, ৪.৬), ৩-৬৬ (মুশফিকুর, ৮.৫), ৪-৭২ (মাহমুদউল্লাহ, ১০.৫), ৫-১০৭ (লিটন, ১৫.১), ৬-১১৮ (মেহেদি, ১৬.৪), ৭-১৩৪ (সাব্বির, ১৮.৫), ৮-১৩৫ (রুবেল, ১৯.২)

বাংলাদেশের ইনিংসের বিস্তারিত পড়ুন এখানে :

১ম উইকেটঃ ব্যাটিংয়ে নেমেই প্রথম ওভারের শেষ বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে টপ এজ সৌম্য সরকার। বল যায় থার্ড ম্যান অঞ্চলে। দৌড়েও বল তালুবন্দি করতে পারেননি ওয়াশিংটন সুন্দর। পয়েন্ট থেকে মনিশ পান্ডেও দৌড় দিয়েছিলেন। কিন্তু বল তারও নাগালের বাইরে ছিলো। এরপর উনাদকাতের করা দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বল স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কা হাঁকান সৌম্য সরকার। দুই বল পরই প্রতিশোধ নেন ভারতীয় পেসার। এবার একটু স্লো বলে সৌম্য আউট। একই শট খেলতে গিয়ে দলীয় ২০ রানে শর্ট ফাইন লেগে চাহালের হাতে ক্যাচ দেন সৌম্য সরকার (১৪)।

২য় উইকেটঃ  দুই ওভার পর শার্দুল ঠাকুরের স্ট্যাম্পের ওপরের বল সরে এসে লেগ সাইডে খেলতে চেয়েছিলেন তামিম। বল আঘাত করে প্যাডে। আম্পায়ার রানমোরে মার্টিনেজ বোলারের আবেদনে আঙুল তুলে তামিমকে এলবি দিলেও রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান দেশসেরা ওপেনার। বল উইকেটে আঘাত করলেও, বল আউট সাইড অফ দ্য স্ট্যাম্প পিচ করেছিল। কিন্তু রিভিউ নিয়ে বাঁচলেও বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি তামিমের ইনিংস। শার্দুল ঠাকুরকে পরপর দুই বলে দুটি বাউন্ডারি মারলেও তৃতীয় বলে আউট তামিম। পঞ্চম ওভারের শেষ বল পুল করতে গিয়ে সৌম্যর মতই দলীয় ৩৫ রানে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ দেন তামিম ইকবার (১৫)।

৩য় উইকেটঃ তামিম ফিরে যাওয়ার পর বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন মুশফিকুর রহিম। উইকেটের চারপাশে শট খেলে রান পাচ্ছিলেন। কিন্তু উইকেটে টিকে থাকতে পারেননি বেশিক্ষণ। বিজয় শংকরের বলে এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দেন। আম্পায়ার আঙুল না তুললে রোহিত শর্মা রিভিউয়ের আবেদন করেন। তাতেই সাফল্য পায় ভারত। এটি ছিল বিজয় শংকরের প্রথম আন্তর্জাতিক উইকেট। তখন দলীয় রান ৬৬।

৪থ উইকেটঃ মুশফিকের আউটের পর অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ ব্যাটিংয়ে নামলেও নিজেকে মেলে ধরতে ব্যর্থ। ৮ বলে ১ রান করে সাজঘরে ফেরেন বিজয় শংকরের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হয়ে। অফস্টাম্পের বাইরের বল তুলে মারতে গিয়ে কভারে ক্যাচ দেন অধিনায়ক।

৫ম উইকেটঃ পেসার বিজয় শংকর নিজের প্রথম ওভারেই দুটি সুযোগ তৈরি করেছিলেন, দুটিই হাতছাড়া হয়েছে ফিল্ডারদের ব্যর্থতায়। ৭ রানে থাকা লিটনের ক্যাচ মিড অফে ছাড়েন সুরেশ রায়না। ৮ রানে ফাইন লেগে আবারো লিটনের ক্যাচ মিস করেন ওয়াশিংটন সুন্দর। তিনে ব্যাটিং করলেও শুরু থেকেই নড়বড়ে ছিলেন লিটন। বড় মঞ্চে বড় রান করার সুযোগ পেয়েছিলেন লিটন কুমার দাস। কিন্তু এখানেও লিটন ব্যর্থ। ব্যর্থ হলেও দলের জন্য প্রয়োজনীয় রান করেছেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ৩০ বলে ৩৪ রানের ইনিংস আসে তার উইলো থেকে। চাহালের বলে এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে দলীয় ১০৭ রানে লং অফে ক্যাচ দেন লিটন।

৬ষ্ঠ উইকেটঃ এরপর ক্রিজে এসে উনাদকাতের বলে তুলে মারতে গিয়ে লং অনে নিজস্ব ৩ রান ও দলীয় ১১৮ তে ক্যাচ দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তার ক্যাচ সহজেই তালুবন্দি করেন মনিশ পান্ডে।

৭ম উইকেটঃ ২২ গজের চাপ নিতে ব্যর্থ সাব্বির বিজয় শংকরের বলে এলোমেলো শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেন মিড উইকেটে। বোলার নিজেই দৌড়ে গেলেন বল ধরতে। ড্রাইভ দিয়ে বল তালুবন্দি করেছিলেন। কিন্তু ধরে রাখতে পারিনি। বল বেরিয়ে যায় দুই হাত থেকে। ৯ রানে সাব্বির জীবন পান। ৯ রানে জীবন পাওয়া সাব্বির শেষ দিকে রাখলেন অবদান। উনাদকাতের তৃতীয় শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ২৬ বলে ৩০ রান করেন সাব্বির রহমান। তার ব্যাটে দেড়শর স্বপ্নও দেখছিল বাংলাদেশ। কিন্তু তার আউটের সময় বাংলাদেশের রান ৭ উইকেটে ১৩৪। ইনিংস শেষ হওয়ার ৭ বল আগে আউট হন সাব্বির।

৮ম উইকেটঃ এরপর তাসকিনের ডাকে সাড়া দিয়ে দুই রান নিতে চেয়েছিলেন রুবেল হোসেনের। কিন্তু লং অন থেকে সুরেশ রায়নার থ্রো থেকে বাঁচতে পারেননি রুবেল। রান আউটে সাজঘরে ফিরেন শূন্য রানে।

২য় ইনিংস ভারত

উইকেট পতন: ১-২৮ (রোহিত, ৩.৩ ওভার), ২-৪০ (পন্ত ৫.১), ৩-১০৮ (রায়না ১৪.১), ৪-১২৩ (ধাওয়ান ১৬.৪)

ভারতের ইনিংসের বিস্তারিত পড়ুন এখানে :

১ম উইকেটঃ বাংলাদেশের প্রথম সাফল্য ধরা দেয় মুস্তাফিজের হাতে। দলীয় ২৮ রানে রোহিত শর্মাকে সরাসরি বোল্ড করে ভারত শিবিরে প্রথম ধাক্কা দেন।

২য় উইকেটঃ এরপর দলীয় ৪০ রানে ভারত শিবিরে দ্বিতীয় আঘাত হানেন রুবেল হোসেন। এক্ষেত্রে ব্যাটসম্যান রিশভ পান্ত (৭)।

৩য় উইকেটঃ দলীয় ১০৮ রানে রুবেল রায়নাকে মিরাজের ক্যাচ বানিয়ে ফেরানোর আগে ২৭ বলে ২৮ রানের ছোট্ট একটি ইনিংস খেলেন। ম্যাচে এটি ছিল রুবেলের দ্বিতীয় শিকার।

৩য় উইকেটঃ এরপর দলীয় ১২৩ রানে অর্ধশত রান করা শিখর ধাওয়ানকে লিটন দাসের ক্যাচ বানিয়ে ফেরত পাঠান অনেকদিন পর দলে ফেরা তাসকিন আহমেদ। যদিও তার আগে ৪৩ বলে ৫ চার ও ২ ছয়ে ৫৫ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেন তিনি। এরপর আর বেশি বেগ পেতে হয়নি ভারতকে।

শেষ দিকে মনিশ পান্ডে ১৯ বলে ৩ চারের সাহায্যে ২৭ রান করলে সহজেই জয়ের বন্দরে পৌছে যায় ভারত। দিনেশ কার্তিক ২ রানে অপরাজিত থাকেন। বাংলাদেশের পক্ষে রুবেল ২টি, মুস্তাফিজ ও তাসকিন একটি উইকেট লাভ করেন।

ম্যাচের ফলাফলঃ ভারত ৬ উইকেটে জয়ী।

ম্যাচ সেরা: বিজয় শঙ্কর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *