মাদকাসক্ত স্বামীর ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল কিশোরীর
মাদকাসক্ত স্বামীর ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল কিশোরী তানিয়ার
৯ মাস আগেই ভালোবেসে পালিয়ে বিয়ে করে তানিয়া আক্তার (১৬)। নবম শ্রেণিতে পড়ত। কিন্তু মাদকাসক্ত স্বামীর মারধর শুরু হয় কিছুদিনের মধ্যেই। বাবার বাড়িতে এসেও মুক্তি পায়নি তানিয়া। স্বামী আল আমিন (২৭) ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মারা যায় তানিয়া।
আজ রোববার রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর মুসলিমবাগ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মেয়ে তানিয়াকে বাঁচাতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন তানিয়ার মা আনোয়ারা বেগম (৪৫)।
তানিয়ার স্বজনরা জানিয়েছেন আজ রোববার বিকেল ৪টার দিকে স্বামী আল আমিনের ছুরিকাঘাতে আহত হয় সে। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৮টার দিকে মারা যায় তানিয়া।
তানিয়ার বড় ভাই মোহম্মদ রুবেল জানান, স্থানীয় একটি স্কুলের ৯ম শ্রেণিতে পড়াশোনা করত তানিয়া। গত ৮-৯ মাস আগে পুরান ঢাকার ইসলামবাগের আল আমিন (২৭) নামের এক ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে তানিয়া। কয়েকদিন পালিয়ে থাকার পর বাড়িতে ফিরে এলে উভয়ের পরিবার বিয়ে মেনে নেয়। কিছুদিন ভালো থাকলেও আল আমিনের মাদকাসক্তি ও কোনো কাজ না করার জন্য আস্তে আস্তে উভয়ের সস্পর্কের অবনতি হতে থাকে। প্রায়ই টাকা পয়সাসহ বিভিন্ন কারণে তাদের মধ্যে ঝগড়া সৃষ্টি হতে থাকে। প্রায় সময়ই তানিয়াকে মারধর করত আল আমিন।
রুবেল জানান, গত ৯দিন আগে স্বামীর সাথে আবার ঝগড়া বাধলে তানিয়া স্বামীর বাসা থেকে কামরাঙ্গীরচর মুসলিমবাগে তার বাবার বাসায় চলে আসে। এরপর স্বামী আল আমিনের সাথে আর সংসার করবে না বললে স্বামী ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। এরই জের ধরে আজ বিকেলে কামরাঙ্গীরচর তানিয়ার কাছে আসে আল আমিন। কেন তানিয়া আল আমিনের সাথে সংসার করবে না তা নিয়ে ঝগড়া শুরু করে। একপর্যায়ে মুসলিমবাগের তাদের বাসার সামনের রাস্তায় ছুরি দিয়ে তানিয়ার পেটে দুইটি আঘাত করে। এ সময় থামাতে গেলে শাশুড়ি আনোয়ারা বেগমকেও চোখের পাশে আঘাত করে পালিয়ে যায় আল আমিন।
পরে তানিয়াকে উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
তিন ভাইবোনের মধ্যে ছোট তানিয়া। তার বাবা আবু তালেব পেশায় বাবুর্চি এবং মা আনোয়ারা অন্যের বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করেন।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের উপপরিদর্শক (এসআই) বাচ্চু মিয়া জানান, ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানায় জানানো হয়েছে।