মধ্যকর্ণের প্রদাহের কারণ ও প্রতিরোধে করণীয়
কানপাকা রোগ বলতে সাধারণভাবে মধ্যকর্ণের সংক্রমণকে বোঝায়৷
কানের পর্দার আড়ালে ছোট কুঠুরির মতো অংশটি মধ্যকর্ণ৷ মধ্যকর্ণে নানারকম রোগ জীবাণুর আক্রমণে কানপাকা রোগ দেখা যায়৷ সাধারণত সর্দি বা ঠান্ডা লাগলে এই রোগ বেশি হয়৷ শিশুদের মধ্যে কানপাকা রোগ বেশি হয়৷ যেসব শিশুরা বোতলে দুধ খায় তাদের মধ্যে এ রোগ বেশি দেখা যায়৷ অনেক সময় বোতলের দুধ টিউবের মধ্যে দিয়ে কানে চলে যায়৷ এছাড়া কানের পর্দা ফুটো হয়ে গেলে তখন বাইরে থেকে জীবাণু কানে পোঁছে সংক্রমণ ঘটাতে পারে৷ বিশেষ করে ডুব দিয়ে গোসল করার সময় যাদের কানে পানি যায় তাদের এ সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি। কানের ভেতরে সংক্রমণ হলে কানের ছোট ছোট ধমনীগুলো ফুলে যায়৷ এতে কানের ভেতরে নিঃসরণ বেড়ে যায় এবং পুঁজ জমে৷ সংক্রমণের ফলে কানে ব্যথা হয়৷ রোগী কানে কম শোনে।
কারণ:
• শ্বাসতন্ত্রের উপরিভাগের বার বার সংক্রমণ হলে।
• সাধারণ সর্দি এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা হলে।
• মুখ গহ্বরের গ্রন্থি বড় হয়ে গেলে।
• টনসিলের সংক্রমণ হলে। নাক ও গলার সংযোগ স্থলে টিউমার হলে বা অন্য কারণে অডিটরি টিউব বন্ধ হয়ে গেলে।
• হাম হলে।
• মুখ ও খুলির হাড়ের মাঝে অবস্থিত ফাঁকা অংশের ঘনঘন প্রদাহ হলে (সাইনোসাইটিস)
লক্ষণ:
• কানে ব্যথা, মাথা ব্যথা ও জ্বর হতে পারে।
• বাইরে থেকে কানের ভেতরে আলো ফেললে দেখা যাবে কানের পর্দা লাল হয়ে আছে। পর্দা ফেটে গেলে পুঁজ দেখা যায়।
• কানের পর্দা ফেটে গেলে কান দিয়ে পুঁজ পড়ে (এ সময় জ্বর ও কান ব্যথা কমে যায়)
• কানের পর্দা ফেটে যাওয়ার পর রোগী কানে কম শোনে।
চিকিৎসা:
• ব্যথা খুব তীব্র হলে পরিপূর্ণ বিশ্রাম নেয়া উচিত।
• সংক্রমণ রোধের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হবে।
• পুঁজ বের হলে সরু কাঠিতে পরিষ্কার তুলো পেঁচিয়ে পুঁজ পরিষ্কার করতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক ড্রপ দিতে হবে।
সতর্কতা:
• কানে আঙ্গুল বা কাঠি দিয়ে খোঁচানো উচিত নয়।
• পুকুরে বা নদীতে ডুব দিয়ে গোসল না করা, অথবা গোসল করার সময় কানে তুলা দিয়ে নেয়া উচিত।
• শিশুদের বসিয়ে তরল খাদ্য পান করানো।
• নাকের দুই ছিদ্র এক সঙ্গে সর্দি ঝাড়া উচিত নয়।