নতুন চাকরি আর হলোনা, হলো লাশ
বেরিয়ে ছিলেন চাকরির জন্য ফিরে আসলেন লাশ হয়ে
ভালো আরেকটি চাকরির জন্য বেরিয়ে ছিলেন পথে হামলার শিকার হন
সিলেট নগরের মদিনা মার্কেট এলাকার মাহিদ আল সালাম একটি চাকরি করতেন। ভালো আরেকটি চাকরির জন্য ঢাকা থেকে ডাকা হয়েছিল সাক্ষাৎকার দিতে। ঢাকায় যাওয়ার জন্য গত রোববার রাতে বাসা থেকে বেরিয়েছিলেন বাস টার্মিনালের উদ্দেশে। পথে হামলার শিকার হন তিনি। রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন তাঁকে।
মাহিদের পরিবার জানিয়েছে, তাঁর বা তাদের কোনো শত্রু আছে বলে তাদের জানা নেই। কাজেই এ হত্যাকাণ্ডের কোনো উদ্দেশ্য খুঁজে পাচ্ছে না তারা। তবে পুলিশের ধারণা, মাহিদ সম্ভবত ছিনতাইকারীর কবলে পড়েছিলেন।
মদিনা মার্কেট এলাকার প্রয়াত আইনজীবী মো. আবদুস সালামের ছেলে মাহিদ চার ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট। তিনি শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর করেছেন গত বছর। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আবৃত্তি সংগঠন এবং সাসটেইন সাইক্লিস্ট নামের একটি সংগঠনের সদস্য ছিলেন তিনি।
পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, একটি বেসরকারি মুঠোফোন কোম্পানিতে চাকরি করতেন মাহিদ। আরও ভালো চাকরির সন্ধানে ছিলেন তিনি। একটি চাকরির সাক্ষাৎকার দিতে ঢাকা যাচ্ছিলেন রোববার রাতে। রাত ১২টার দিকে বাসা থেকে বেরিয়ে রিকশা নেন। দেড়টায় বাসে ওঠার কথা ছিল কদমতলী বাস টার্মিনাল থেকে। কিন্তু রাত একটার দিকে দক্ষিণ সুরমার কদমতলী এলাকায় রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে পড়ে থাকতে দেখেন এক রিকশাচালক। তাঁকে রিকশায় তুলে কিনব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে পুলিশের টহল দলের সামনে পড়েন ওই চালক। এরপর পুলিশ মাহিদকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। রাত দেড়টার দিকে হাসপাতালে পৌঁছালে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
মাহিদের চাচার বরাতঃ
মাহিদের চাচা সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ টি এম হাসান জেবুল বলেন, ‘ঘটনাটি কী জন্য ঘটেছে, আমরা নিশ্চিত নই। রাতে মাহিদ বাসা থেকে ঢাকার উদ্দেশে বেরিয়েছিল। এরপর লাশ হয়ে বাসায় ফিরেছে।’
দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ফজল প্রাথমিকভাবে তাঁরা ধারণা করছেন, ছিনতাইকারীরা মাহিদকে ছুরিকাঘাত করেছে। তাঁর মুঠোফোন, মানিব্যাগ ও ল্যাপটপ খোয়া গেছে।
গতকাল সোমবার বেলা একটার দিকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহমদ মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদনের
বরাত দিয়ে বলেন, মাহিদের ডান ঊরুতে ছুরিকাঘাতের গভীর ক্ষত রয়েছে। সেখান থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
মাহিদের খালু সিলেটের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি শামসুল ইসলাম বলেন, মাহিদের বোন ও ভাই যুক্তরাজ্য থেকে ফেরার পর মঙ্গলবার (আজ) লাশ দাফন সম্পন্ন হবে। এরপর মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হবে।