fbpx

বাংলাদেশের কোচ হতে এ সপ্তাহেই আসছেন স্টিভ রোডস

এখনও কোন কোচ নিয়োগ দিতে পারেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড

এবার বোধহয় আট মাস অতিবাহিত হওয়ার পর একটা নিশ্চিত সিদ্ধান্তে আসতে যাচ্ছে বিসিবি। ইংল্যান্ডের সাবেক উইকেটরক্ষক স্টিভ রোডসের দিকে ঝুঁকছে বিসিবি। এমনও হতে পারে হাতুরাসিংহের স্থলাভিষিক্ত হিসেবে রোডসকেই বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচের দায়িত্বে দেখা যেতে পারে। তিন ফরমেটেই মাশরাফি, সাকিবদের কোচ হতে পারেন রোডস।

বাংলাদেশের কোচ হতে এ সপ্তাহেই আসছেন স্টিভ রোডস। শুক্রবার তার ঢাকায় আসার কথা। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান কোচের পদে সাক্ষাতকার দিতে আসছেন এ ব্রিটিশ কোচ। বিসিবি প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী মঙ্গলবার এই খবর নিশ্চিত করেন। যতদূর জানা গেছে, প্রধান কোচের জন্য রোডসের নাম অনেকটা চূড়ান্তই হয়ে আছে। রোডসের সাক্ষাতকার নিতে এবং এ কোচের জন্য সুপারিশ করেছেন যে বিসিবির কোচ নিয়োগ পরামর্শক গ্যারি কার্স্টেন। সিইও নিজামউদ্দিন বলেন, ‘স্টিভ রোডস আমাদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় আছেন।

আমরা আশা করছি দুই-তিনদিনের মধ্যে তিনি এসে আমাদের সঙ্গে দেখা করবেন। আপনারা আগেও দেখেছেন রিচার্ড পাইবাস ও ফিল সিমন্স যেভাবে এসেছিলেন তিনিও সে প্রক্রিয়ায় দেখা করবেন।’বাংলাদেশের প্রধান কোচ খোঁজ দিতে গ্যারি কার্স্টেনকে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেয় বিসিবি।

কার্স্টেন আইপিএলে নিজের দল ব্যাঙ্গালুরুর মিশন শেষে ঢাকায় আসেন। ঢাকায় এসে তিনদিনের সফরে বিসিবি সভাপতি, ক্রিকেটার, ঘরোয়া কোচ, নির্বাচকদের সঙ্গে সভা করেন। সভা করে তিনি চলে যান। জেনে যান, বাংলাদেশ দলের জন্য কেমন কোচ প্রয়োজন। দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক এ ব্যাটসম্যান দেশে গিয়ে এ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করেন। কোচ খোঁজেন। শেষ পর্যন্ত রোডসের দিকে ঝুঁকেন। নিজামউদ্দিন জানান, তাদের দেয়া তালিকা নিয়ে কাজ করে চূড়ান্ত পর্যায়ে এসেছে কার্স্টেন, ‘আপনারা জানেন বেশ কিছু দিন থেকেই আমাদের কোচিং স্টাফে স্বল্পতা ছিল।

আমাদের কাছে যে তালিকা ছিল সেটা আমরা গ্যারি কার্স্টেনকে দিয়েছি এবং উনি সেটা নিয়েই কাজ করেছেন। বলা যায় এটা একটা যৌথ চেষ্টা।’কাউন্টি দল ওরচেস্টারশায়ারের দায়িত্ব পালন করা এই কোচ ইংল্যান্ডের হয়ে খেলেছেন ১১ টেস্ট আর ৯ ওয়ানডে। ক্রিকেট ক্যারিয়ার খুব বেশি বর্ণাঢ্য নয়। তবে কোচ হিসেবে নাম ডাক ভালই আছে। সাকিব আল হাসান ওরচেস্টারশায়ারে খেলার সময়ও পেয়েছিলেন রোডসকে। ২০১০ ও ২০১১ সালে কাউন্টি দল ওরচেস্টারশায়ারে খেলার সময়ই রোডসকে কাছ থেকে দেখেছেন সাকিব।

দলটির ‘ডিরেক্টর অব ক্রিকেট’ ছিলেন রোডস। টম মুডি দায়িত্ব ছাড়ার পর ২০০৫ সালের মে’তে ওরচেস্টারশায়ারের কোচ হিসেবে নিয়োগ পান। এরপর ২০০৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছেন ক্লাবের ক্রিকেট ডিরেক্টর হয়ে। যদিও এক অপ্রীতিকর ঘটনায় ওরচেস্টারশায়ারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। সামনে যেহেতু ২০১৯ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপ আছে। সেই বিশ্বকাপ হবে ইংল্যান্ড এ্যান্ড ওয়েলসে। তাই এই রোডসের দিকেই বেশি ঝুঁকছে বিসিবি। সিইও জানান, কোচ নিয়োগে বিসিবি গুরুত্ব দিচ্ছে দুই বিষয়কে। এক অভিজ্ঞতা ও সামনের বিশ্বকাপ। যার দুটি ফ্যাক্টরেই এগিয়ে আছেন এই ইংলিশ কোচ, ‘আমরা অভিজ্ঞতাকে প্রাধান্য দিয়েছি।

আমরা প্রাথমিকভাবে বেশ কয়েকজন কোচের সঙ্গে কথা বলেছি, বড় নাম ও অভিজ্ঞতা দুটোই ছিল। কিন্তু বিভিন্ন কারণে হয়তো উনাদের পাওয়া যায়নি, বা ফ্যামিলি কমিটমেন্টের কারণে হয়তো উনারা আসতে পারেননি।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘এ মুহূর্তে যে ক’জন কোচ পাওয়া গেছে তার মধ্যে সে (রোডস) অভিজ্ঞদের একজন। মূলত আমরা অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দিচ্ছি। আপনারা জানেন আগামী বিশ্বকাপ ইংল্যান্ডে হবে, এ জন্য এটাও বিবেচ্য বিষয়। ওই ধরনের কন্ডিশনের কাউকে যদি দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা যায়, তাহলে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যেতে পারে।’ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের আগে নতুন কোচ আসবে বলে জানিয়েছিল বিসিবি। সেই পথেই এগিয়ে যাচ্ছে বিসিবি।

বিসিবি আগামী ১৫ জুনের মধ্যে প্রধান কোচ নিয়োগ দিতে চায়। ৮ জুন হচ্ছে শুক্রবার। এদিন রোডস সাক্ষাতকার দেবেন। সিইও নিজামউদ্দিন জানান, ‘রোডস নিজের পরিকল্পনাগুলো তুলে ধরবেন। আমরা তার কাছে আগামী বিশ্বকাপ ও টি২০ বিশ্বকাপ নিয়ে পরিকল্পনা জানতে চাইব।’ স্টিভ রোডসও বিসিবির সঙ্গে আলোচনার কথা জানিয়েছেন। ক্রিকইনফোকে তিনি জানান, ‘আমি নিশ্চিত করতে চাই আমার সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে।

এমন মর্যাদাপূর্ণ ভূমিকায় কাজ করতে আগ্রহী। তবে এই পর্যায়ে এখনই কিছু চূড়ান্ত নয়। তাই আগে থেকে অনুমান করাও যুক্তিযুক্ত নয়।’ সাবেক ইংলিশ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান ক্যারিয়ারের লম্বা সময় পার করেছেন কাউন্টি ক্লাব ওরচেস্টারশায়ারে। খেলেছেন ইয়র্কশায়ারের হয়েও।

ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে ১২টি সেঞ্চুরি করেন রোডস। শুক্রবার আসার পর যদি সব ঠিক থাকে তাহলে হয়তো স্টিভ রোডসের অধীনেই চলতি মাসের শেষদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজে যাত্রা করবেন বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ দিয়েই রোডসেরও বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ততা শুরু হয়ে যাবে। বাংলাদেশ দলও স্থায়ী কোচ পেয়ে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *