দক্ষিণ আফ্রিকা-অস্ট্রেলিয়ার এই টেস্ট সিরিজ মনে রাখতে রসদের কোনো অভাব নেই
দক্ষিণ আফ্রিকা-অস্ট্রেলিয়ার এই টেস্ট সিরিজ মনে রাখতে রসদের কোনো অভাব নেই! কেপটাউন টেস্টের বল টেম্পারিং দিয়ে শুরু করা যায়।
স্টিভ স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার ও ক্যামেরন ব্যানক্রফট যে কারণে কলঙ্কিত হয়ে নিষিদ্ধ। প্রতিক্রিয়া হিসেবে তাঁদের কোচের পদ ছেড়েছেন ড্যারেন লেম্যানও। তারপরও কলঙ্কের ছাপ লেগে থাকবে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটের বেদিতে।
তবে জোহানেসবার্গ টেস্ট কিন্তু কেপটাউনের বল টেম্পারিং বিতর্কেরই উপজাত। একটি ঘটনার যে এমন প্রভাব পড়তে পারে একটা দলের পারফরম্যান্সে, সেটা না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না! নইলে টেস্টের শেষ দিনে হার এড়াতে নেমে অস্ট্রেলিয়া কি ৯০ মিনিটে অলআউট হয়ে যাওয়ার মতো দল? তবে বিতর্ক নয়, যাঁরা শুধু ক্রিকেট নিয়ে ভাবতে ভালোবাসেন তাঁদের জন্য কিন্তু জোহানেসবার্গ টেস্ট স্মরণীয়। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে এটিই মরনে মরকেলের শেষ টেস্ট।
নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার পর ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম সিরিজ জয়ের ইতিহাসও প্রোটিয়ারা এই টেস্ট জিতেই লিখল। আসলে লিখলেন তো ভারনন ফিল্যান্ডার। আজ সকালের সেশনে কী আগুনে স্পেলই না করলেন! সকালের সেশনে ৩২ বলের এক স্পেলে ৩ রানে তিনি নিয়েছেন ৬ উইকেট! ৬১২ রানের পাহাড়ে উঠতে গিয়ে ১১৯ রানেই শেষ অস্ট্রেলিয়া। দক্ষিণ আফ্রিকার ৪৯২ রানের এই জয়ে সব মিলিয়ে ফিল্যান্ডারের অবদান ১৩-৫-২১-৬। টেস্টে তাঁর ক্যারিয়ার সেরা বোলিং।
ক্যারিয়ারের ৫৪তম টেস্টে এসে দুই শ উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়েছেন ফিল্যান্ডার। উইকেটপ্রতি রান দেওয়ার হিসেবে ফিল্যান্ডার কিন্তু এখনই রিচার্ড হ্যাডলি, মাইকেল হোল্ডিং, ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনিসদের চেয়েও কিপটে! শুধু রানের হিসেবে এই জয় প্রোটিয়াদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যবধানের। এটি আবার অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট ইতিহাসে রানের হিসেবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবধানের হার।
১৯২৮ ব্রিসবেন টেস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৬৭৫ রানে হেরেছিল অস্ট্রেলিয়া। সেই ম্যাচেও চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল তাঁরা। ৭৪২ রানের পেছনে ছুটতে গিয়ে জ্যাক রাইডারের দল অলআউট হয়েছিল মাত্র ৬৬ রানে! শুধু ইংল্যান্ডের জন্যই নয় টেস্ট ইতিহাসেও রানের হিসেবে তা সর্বোচ্চ ব্যবধানের জয়। জোহানেসবার্গে ৪৯২ রানের জয় দিয়ে এই সংস্করণে সর্বোচ্চ ব্যবধানের জয়ে চারে উঠে এল দক্ষিণ আফ্রিকা। আশ্চর্যের বিষয় হলো, দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে অস্ট্রেলিয়ার কোনো ব্যাটসম্যানই সেঞ্চুরি পাননি।
১৯৭০ সালের পর এমন নজির এই প্রথম। কাকতালীয় ব্যাপার, ১৯৭০ সালেই ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজ জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। এই হারে টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের চারেও নেমে গেল অস্ট্রেলিয়া। প্রায় দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে ঘরের বাইরে কোনো টেস্ট সিরিজ জিততে পারছে না দলটি।