রেকর্ড :
টানা দশ ম্যাচে গোলের রেকর্ড
চ্যাম্পিয়নস লিগে কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে জুভেন্টাসের বিপক্ষে ৩-০ গোলের বড় জয় পেয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। টানা দশ ম্যাচে গোলের রেকর্ড রোনালদো।
জুভেন্টাসের মাঠে রিয়াল-রোনালদোর খেলা দেখে মনে হলো রাতটা তাদেরই। একের পর এক সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি জুভেন্টাস। সেমিফাইনালের পথে এক পা এগিয়েই থাকল স্প্যানিশ জায়ান্টরা। ম্যাচের প্রথমার্ধে তৃতীয় মিনিটেই (২ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড) ইসকোর কাছ থেকে দুর্দান্ত পাস পেয়ে জুভেন্টাসের জালে বল জড়ান রোনালদো। এই গোলের মাধ্যমে চ্যাম্পিয়নস লিগে টানা দশ ম্যাচে গোলের রেকর্ড করেন এই রিয়াল তারকা। ক্লাব এবং দেশের হয়ে এটি ছিল তার ৬৪৮ নম্বর গোল। এরপর রিয়াল কেন জানি রক্ষণাত্মক হয়ে পড়ে খানিকটা।
একের পর এক আক্রমণ করে জুভেন্টাস। কিন্তু জুভেন্টাসের তৈরি করা সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারেনি হিগুয়েইনরা। ৬ মিনিটে ভালো সুযোগ তৈরি করে জুভেন্টাসের আক্রমণভাগের সেনারা। দিবালার শট, এ যাত্রায় রামোসের দুর্দান্ত ট্যাকলে রক্ষা পায় রিয়াল মাদ্রিদ। ১৩ মিনিটে আবারও ভালো সুযোগ তৈরি করে জুভেন্টাস।
কিন্তু অফসাইডের ফাঁদে পড়ে গোছানো আক্রমণ কাজে লাগাতে পারেননি হিগুয়েইন। ২১তম মিনিটে জুভেন্টাসের কস্তা-হিগুয়েইন-দিবালার গোছানো আক্রমণও রুখে দেয় রিয়ালের রক্ষণভাগ। ২৩ তম মিনিটে হিগুয়েইনের দুর্দান্ত হেড আটকে দেয় রিয়াল মাদ্রিদ গোলরক্ষক নাভাস। প্রথমার্ধে গোলমুখে জুভেন্টাসের ৪ শট আর রিয়ালের ২ শট। রিয়াল বারবার পাল্টা আক্রমণে উঠে আসার চেষ্টা করে। গোলমুখে এলোমেলো শটও নেয়। তবে ৩৬ মিনিটে টনি ক্রুসের বিদ্যুৎ গতির শটটি ছিল দেখার মতো। একটু এদিক-সেদিক হলেই কিন্তু গোল সংখ্যা বেড়ে যেত রিয়ালের।
৩৮ তম মিনিটে দিবালার কর্নার কিক থেকে সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি কিয়েলিনি। ৪৫ তম মিনিটে ডাইভ দিয়ে হলুদ কার্ড দেখেন জুভেন্টাসের দিবালা। এরপর ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধের খেলা শেষ করে রিয়াল মাদ্রিদ। দ্বিতীয়ার্ধে খোলস পাল্টে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে রিয়াল। ৫০ মিনিটে বেনজেমা-রোনালদো বক্সের ভেতর সুযোগ পেয়ে গোল সংখ্যা বাড়াতে পারেননি। ৫২ মিনিটে বিপজ্জনক জায়গায় ফ্রি-কিক পায় স্বাগতিকেরা। কিন্তু দিবালার শট রিয়ালের রক্ষণদেয়ালে লেগে কর্নারে পরিণত হয়।
ম্যাচে করিম বেনজেমা যেন নিজেকেই খুঁজে ফিরছিলেন। ৫৮ তম মিনিটে বেনজেমাকে তুলে লুকাস ভাসকেসকে মাঠে নামান জিদান। এরপর দুয়েকটা ভালো আক্রমণ করলেও গোলের দেখা পাচ্ছিল না জুভেন্টাস। বরং তাদের চেপে ধরা শুরু করেছে রিয়াল। ম্যাচের ৬৪ তম মিনিটে বুফন এগিয়ে এসে বল আটকাতে ব্যর্থ হন। ইতালিয়ান এই তারকাকে একা পেয়েও গোল দিতে পারেননি পর্তুগিজ সেনা। কারণ ওই জায়গা থেকে গোল দেওয়া অসম্ভব। ফাঁকায় দাঁড়ানো ভাসকেজকে বল পাস করেন রোনালদো। ভাসকেজের শট ফিস্ট করেন বুফন। বল পান রোনালদো।
এবারও ঠিক বেকায়দায়। কিন্তু শূণ্যে ভেসে যে ব্যাকভলি করলেন, সেটা এতটা অবিশ্বাস্য যে স্বয়ং জিদানেরও বিশ্বাস হচ্ছিল না। ২-০ গোলে এগিয়ে আরও জ্বলে ওঠে জিদান শিষ্যরা। ৭১ মিনিটে হ্যাটট্রিকের সুযোগ নষ্ট করেন রোনালদো।
৭২ মিনিটে রোনালদোর পাস থেকে দলের তিন নম্বর গোল করেন মার্সেলো (৩-০)। এরপর খেই হারিয়ে ফেলে জুভেন্টাস। একের পর এক আক্রমণ করে রিয়াল মাদ্রিদ। ৯০ তম মিনিটে বুফন দেয়াল হয়ে না দাঁড়ালে হ্যাটট্রিকটা হয়েই যেত রোনালদোর। যোগ হওয়া সময়ের দ্বিতীয় মিনিটেও সুযোগ পান রোনালদো, এবারও মিস। এরপর যোগ হওয়া সময়ের শেষ মিনিটে শেষ সুযোগটা পায় জুভেন্টাস। কিন্তু ওই যে রাতটা যে তাদের ছিল না। ছিল রিয়ালের, ছিল রোনালদোর। নিজেদের মাঠে ০-৩ গোলের হার নিয়েই মাঠ ছাড়ে জুভেন্টাস।