fbpx

চ‌লে গে‌লেন রাজীব

চ‌লে গে‌লেন রাজীব না ফেরার দেশে

হাত হারানো রাজীব হোসেন মারা গেছেন

দুই বা‌সের প্রতি‌যো‌গিতায় ডান হাত হারানো রাজীব হোসেন মারা গেছেন। সোমবার দিবাগত রাত ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে ঢাকা মে‌ডি‌কেল ক‌লেজ হাসপাতা‌লে তিনি মারা যান।  রাজীবের দুজন স্বজন ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) বাচ্চু মিয়া বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। অবশ্য এ বিষয়ে এখনো চিকিৎসকেরা কোনো তথ্য জানাননি।

গত ৩ এপ্রিল সার্ক ফোয়ারার কা‌ছে দুর্ঘটনায় রাজী‌বের হাত ছিঁড়ে যায়। শম‌রিতা হাসপাতা‌লে প্রাথমিক চিকিৎসার পর রাজীব‌কে ঢাকা মে‌ডি‌কেল ক‌লে‌জে স্থানান্তর করা হয়। সাম‌য়িক উন্নতির পর গত সোমবার থে‌কে তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। রাজী‌বের মস্তিষ্ক অসাড় হ‌য়ে যায়। সে থে‌কে আর জ্ঞান ফে‌রে‌নি তাঁর।

নিহত রাজীবের মামা জাহিদুল ইসলাম  বলেন রাত ১২টা ৪০ মিনিটে তাঁদের অনুমতি নিয়ে চিকিৎসকেরা রাজীবের লাইফ সাপোর্ট খুলে নেন। জাহিদুল কাঁদছিলেন আর বলছিলেন, ‘সবাই মিলে অনেক চেষ্টা করেও বাঁচানো গেল না রাজীবকে।’

উপপরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, ‘মারা গেছেন রাজীব হোসেন। রাত ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে মারা যান তিনি। রাজীবের স্বজনেরা কান্নাকাটি করছেন।’

সোমবার দিবাগত রাত ১২টা ৪৫ মিনিটে রাজী‌ব মারা গে‌ছেন ব‌লে  জানান তাঁর খালা জাহানারা বেগম।

৩ এপ্রিল বিআরটিসি বাস:

৩ এপ্রিল বিআরটিসির একটি দোতলা বাসের পেছনের ফটকে দাঁড়িয়ে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন রাজধানীর মহাখালীর সরকারি তিতুমীর কলেজের স্নাতকের (বাণিজ্য) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাজীব হোসেন (২১)। হাতটি বেরিয়ে ছিল সামান্য বাইরে। হঠাৎই পেছন থেকে একটি বাস বিআরটিসির বাসটিকে পেরিয়ে যাওয়ার বা ওভারটেক করার জন্য বাঁ দিকে গা ঘেঁষে পড়ে। দুই বাসের প্রবল চাপে রাজীবের হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। দু-তিনজন পথচারী দ্রুত তাঁকে পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসকেরা চেষ্টা করেও বিচ্ছিন্ন সে হাতটি রাজীবের শরীরে আর জুড়ে দিতে পারেননি

তৃতীয় শ্রে‌ণি‌তে পড়ার সময় রাজীব মা আক‌লিমা খানম‌কে হারান। বাবা শো‌কে অপ্রকৃতিস্থ হ‌য়ে প‌ড়েন। ছি‌লেন নিরু‌দ্দেশ। রাজীব ও তার ছোট দুই ভাই পটুয়াখালীর বাউফলে নানার বা‌ড়ি‌তে ছি‌লেন। প‌রে ঢাকায় এসে পোস্টঅ‌ফিস হাই স্কু‌লে ভ‌র্তি হন। খালার বা‌ড়ি‌ থে‌কে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর রাজীব যাত্রাবাড়ীর মে‌সে গি‌য়ে ওঠেনি। নি‌জের পা‌য়ে দাঁড়াতে কম্পিউটার কম্পোজ, গ্রাফিকস ডিজাইনের কাজ শিখ‌ছি‌লেন। ছাত্র পড়া‌তেন। দম ফেলার ফুরসত পাননি। লক্ষ্য ছিল একটাই, নি‌জের পা‌য়ে দাঁড়া‌নো, ভাই দু‌টির দা‌য়িত্ব নেওয়া।

রাজী‌বের সব স্বপ্ন গতকাল রা‌তে শেষ হ‌য়ে যায়। প্রায় সাত দিন অচেতন অবস্থায় প‌ড়ে থে‌কে একেবারে চ‌লে গে‌লেন রাজীব।

রাজী‌বের স্বজনরা যেকোনো মূল্যে গাড়ি চাল‌কের সর্বোচ্চ শাস্তি চান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *