চ্যাম্পিয়নস লিগে ৩–০ গোলে হেরে বিদায় নিয়েছে বার্সেলোনা
চ্যাম্পিয়নস লিগে ৩–০ গোলে হেরে বিদায় নিয়েছে বার্সেলোনা। ইতিহাসে এই প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিতে উঠল রোমা। মঙ্গলবার রাতে ইতালিয়ান এই ক্লাব নিজেদের মাঠে দ্বিতীয় লেগের খেলায় বার্সেলোনাকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে।
স্ট্যাডিও অলিম্পিকোর মাঠে রোমা-বার্সেলোনার ম্যাচে শুরু থেকেই বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে থাকে বার্সেলোনা। ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে মেসির শট গোলপোস্টের ওপর দিয়ে চলে যায়। এরপর আবারও মেসি-সুয়ারেজের সমন্বয়ে ভালো আক্রমণ তৈরি করে বার্সা। কিন্তু পরক্ষণেই বার্সার দুর্বল রক্ষণের সুযোগ নিয়ে পাল্টা-আক্রমণ থেকে গোল খেয়ে বসে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটে ডেনিয়েল রোসির লম্বা ক্রস থেকে বল পেয়ে যান রোমার জেকো।
বার্সার জালে বল জড়াতে জোকোর কোনো সমস্যা হয়নি (১-০)। চ্যাম্পিয়নস লিগে বার্সেলোনার বিপক্ষে এ নিয়ে শেষ তিন ম্যাচে তিন গোল করেন জেকো। ম্যাচের শুরুতেই গোল হজমের ধকল সামলাতে বার্সাকে বেশ সময় নিতে হয়েছে। অন্যদিকে, ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে রোমা অনেকটা উজ্জীবিত হয়ে খেলে। বেশ কয়েকটা ভালো সুযোগও তৈরি করে তারা।
২১তম মিনিটে ফ্লোরিনজার ক্রস হেডে ক্লিয়ার করেন বার্সা খেলোয়াড় উমতিতি। ২৬তম মিনিটে জেকোর পাস কার্লোভের কাছে পৌঁছানোর আগে ক্লিয়ার করেন বার্সার রক্ষণে থাকা জেরার্ড পিকে। ম্যাচের ২৯তম মিনিটে বেশ ভালো সুযোগ পায় রোমা।
ফ্যাজিওর দুর্দান্ত ক্রস থেকে প্যাটট্রক শিক ঠিকঠাক মাথা ছোঁয়াতে পারলেই রোমা ২-০–তে এগিয়ে যেত। কিন্তু সেটা হয়নি। তাঁর হেড ঠিকানা খুঁজে না পেলে ১-০–তেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় স্বাগতিকদের। ৩২তম মিনিটে আবারও ভালো সুযোগ পায় রোমা। এবার পিকের স্লাইডিং ট্যাকলে রক্ষা পায় কাতালানরা।
৩৭তম মিনিটে আর্জেন্টাইন তারকা ফ্লোরেনজির ক্রস থেকে দ্বিতীয় গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন জেকো। পরের মিনিটে পাল্টা আক্রমণে উঠে আসে বার্সেলোনা। লুইস সুয়ারেজকে ফাউল করলে ফ্রি কিক পায় বার্সেলোনা। কিন্তু ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া মেসির শট বারের ওপর দিয়ে চলে গেলে সমতায় ফিরতে ব্যর্থ হন ভালভার্দের শিষ্যরা।
এরপর আর গোল পায়নি কোনো দল। প্রথমার্ধে বারবার ভেঙে পড়ছিল বার্সার রক্ষণভাগ। মেসিও নিজের ছায়া হয়েই ঘুরছিলেন। অন্যদিকে, সুযোগ পেয়েও গোলসংখ্যা বাড়াতে পারেনি রোমা।দ্বিতীয়ার্ধে নিজেদের আর ফিরে পায়নি বার্সা। উল্টো দুই গোল হজম করে বসেন মেসি–সুয়ারেজরা। রোমার পক্ষে ৫৮তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করেন ডেনিয়েল ডি রোসি। রোমার ফরোয়ার্ড জেকোকে ফাউল করেন বার্সার রক্ষণ সামাল দেওয়া জেরার্ড পিকে। পেনাল্টি থেকে গোলসংখ্যা বাড়ান রোসি (২-০)।
এই রোসিই প্রথম লেগে আত্মঘাতী গোল করেছিলেন। এরপর ৮২তম মিনিটে বার্সার কফিনে শেষ পেরেক ঠোকেন মানোলাস (৩-০)। মজার ব্যাপার হচ্ছে, প্রথম লেগে মানোলাসও আত্মঘাতী গোল করেছিলেন। রোমার তৃতীয় গোলের পর বার্সার সেমিতে ওঠার স্বপ্নও বুঝি শেষ হয়ে গেল। কারণ, এরপর আর ম্যাচে ফিরে আসতে পারেনি বার্সেলোনা। প্রথম লেগে ৪-১ গোলের জয় আর দ্বিতীয় লেগে ৩-০ গোলের হার। অ্যাওয়ে গোলের হিসাবে চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বিদায় নিল বার্সেলোনা।