করোনার আণবিক রহস্য ভেদ করার দাবি কলকাতার চার গবেষকের
চীনের উহান থেকে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সারা বিশ্ব। এ পর্যন্ত ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছে ১৮ লাখ ৫৭ হাজার ৩৫৪ জন।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারজন গবেষকের টিম করোনাভাইরাসের আণবিক রহস্য এবং বিভিন্ন দেশে বা ভৌগোলিক অবস্থানের পার্থক্যে ভাইরাসের ভিন্নরূপে বিবর্তনের রহস্য অনেকটাই উন্মোচিত করেছেন বলে ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম দাবি করা হয়েছে।
জীববিদ্যা বিষয়ক গবেষণার বিশিষ্ট সংগ্রহশালা বায়ো আর্কাইভে প্রি-প্রিন্ট অবস্থায় গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
ডিকোডিং দ্য লেথাল ইফেক্ট অব সার্স-কভ-২ (নভেল করোনাভাইরাস) স্ট্রেইনস ফ্রম গ্লোবাল পার্সপেক্টিভ: মলিকুলার প্যাথোজেনেসিস অ্যান্ড এভোলিউশনারি দিভার্জেন্স নামে ওই গবেষণা পত্রটি বের হয়েছে।
এতে প্রধান গবেষক শুভম ব্যানার্জির সঙ্গে কাজ করেছেন পৃথা ভট্টাচার্য, শিরিঞ্জনা ধর, সন্দীপ ভট্টাচার্য।
গবেষণাপত্রটির প্রধান শুভম ব্যানার্জি বলেন, আমরা দেখেছি যে করোনাভাইরাসের চার থেকে পাঁচটি স্ট্রেন রয়েছে। চীন বলেছিল দুটি। কিন্তু তখন তাদের দেশেই শুধু ঘোরাফেরা করছিল ভাইরাস। সে অনুযায়ী তাদের কথা সঠিক। কিন্তু বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ার পর বিষয়টি নিয়ে আমরা গবেষণা শুরু করলে চার পাঁচ ধরনের স্ট্রেন খুঁজে পাই।
তিনি বলেন, আমরা গবেষণা করতে গিয়ে দেখেছি যে বিভিন্ন দেশে এর বিভিন্ন চরিত্র। সেগুলোকে ভাগ করে দেখা যাচ্ছে, ইতালি, স্পেন, আমেরিকায় এর মৃত্যু হার সবচেয়ে বেশি, ১৪ শতাংশ। চীন-জাপান এসব দেশে এর শক্তি কম, ৬-৮ শতাংশ। আবার ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইসরাইল, নেপাল, ভিয়েতনামে এর ক্ষমতা সব থেকে কম, ২-২.৫ শতাংশ।
গবেষণা থেকে জানা গেছে, মূলত তিনটি বিষয়ের ওপর করোনাভাইরাসে মৃত্যুর হার নির্ভর করছে। মিউটেশনের সংখ্যা, রেয়ারিটি অব দ্য অ্যালেয়িক ভেরিয়েশন আর ফাংশনাল কনসিকোয়েন্স অব দ্য মিউটেশন অ্যাট প্রোটিন লেভেল। এরপরে তারা এই তিন ধরনের কোভিড১৯-এর মিউটেশন নিয়ে গবেষণা করেন।
শুভম ব্যানার্জি বলেন, এর থেকেই স্পষ্ট তিন ধরনের মৃত্যু হার বিশিষ্ট দেশে তিন ধরনের ভ্যাকসিন লাগবে। যেটা ইতালিতে কাজ করবে সেটা চীনে কাজ করবে না। আবার যেটা চীনে কাজ করবে সেটা ভারতে কাজ করবে না। কিন্তু ভারতে যেটা কাজ করবে সেটা অস্ট্রেলিয়া, ভিয়েতনামে কাজ করবে। ইতালির ভ্যাকসিন কাজ করবে আমেরিকায়।
তিনি জানিয়েছেন, বিশ্বজুড়ে এ নিয়ে কাজ হচ্ছে কিন্তু এই প্রাথমিক বিষয়টা এখনও কেউ বলেনি। আমাদের গবেষণা সেই পথ দেখিয়েছে। আমরা এখন এর প্রোটিন স্ট্রাকচার নিয়ে কাজ করছি। এর পরে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাব।
সূত্র: কলকাতা টুয়েন্টিফোর