এক ম্যাচে এতো রেকর্ড……………..!
সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড, এক ম্যাচে ৪ সেঞ্চুরি, ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে দোলেশ্বর হারল ২০ রানে।এক ম্যাচে এতো রেকর্ড……………..!
স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শিরোপার অন্যতম দাবিদার আবাহনী লিমিটেড সুপার লীগের প্রথম ম্যাচে ৭৩ রানে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে হারিয়ে শুরু করেছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের কাছে ২৬ রানে হেরে যায়। সেই হারের বেদনা ভুলতেই হয়তো শুক্রবার বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে ঝলসে উঠল ঐতিহ্যবাহী দলটি। দেশের লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড গড়ে। ওয়ালটন ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে (ডিপিএল) এনামুল হক বিজয় ও নাজমুল হোসেন শান্তর জোড়া সেঞ্চুরিতে ৪ উইকেটে ৩৯৩ রান তুলেছিল তারা। পরে বৃষ্টির কারণে অবশ্য প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব পুরো ওভার খেলতে পারেনি। তবে ফজলে মাহমুদ ও মার্শাল আইয়ুবের জোড়া শতকে ৩৪.১ ওভারে ৩ উইকেটে ২৪৪ রান তুলে ফেলেছিল তারা। শেষ পর্যন্ত ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে আবাহনী জিতেছে মাত্র ২০ রানে। তবে জয়ের ধারায় ফিরে সুপার লীগের ৩ ম্যাচ খেলা আবাহনী সবমিলিয়ে ২০ পয়েন্ট নিয়ে এককভাবে শীর্ষেই আছে।
টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামে আবাহনী। উদ্বোধনী জুটিতেই দোলেশ্বর বোলারদের ঘাম ঝরান দুই ওপেনার বিজয় ও শান্ত। ২৩৬ রানের যে জুটি গড়েন সেটি এবারের প্রিমিয়ার লীগে যে কোন উইকেট জুটির সেরা। বিজয় ১২৬ বলে ৭ চার, ৬ ছক্কায় ১২৮ রান করার পর রানআউট হলে এই জুটি ভাঙ্গে। তবে দ্বিতীয় উইকেটে শান্ত ও ভারতীয় ক্রিকেটার হানুমা বিহারী আরও ৬৪ রান যোগ করেন। দারুণ আক্রমণাত্মক শান্ত ১০৬ বলে ১২ চার, ২ ছক্কায় ১২১ রানে সাজঘরে ফিরে যান। কিন্তু বিহারী ও মোহাম্মদ মিঠুনের ব্যাটিং তা-বে প্রায় চার শ’ ছুঁয়ে ফেলে আবাহনীর ইনিংস। বিহারী মাত্র ৩৬ বলে ৭ চার, ২ ছক্কায় ৬৬ রান করেন। আর মিঠুন অপরাজিত থাকেন ২৪ বলে ৫ চার, ২ ছক্কায় ৪৭ রানে। শেষ পর্যন্ত ৪ উইকেটে ৩৯৩ রানের বিশাল সংগ্রহ নিয়ে শেষ হয় আবাহনীর ইনিংস। এটি বাংলাদেশের লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে সর্বোচ্চ দলীয় রানের রেকর্ড। এর আগেও আবাহনীর দখলেই ছিল পূর্বের রেকর্ডটা। ২০১৬ সালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডানের বিপক্ষে ৫ উইকেটে ৩৭১ রান করেছিল তারা। তৃতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহও আবাহনীর। গত বছর আবার মোহামেডানের বিপক্ষে ৫ উইকেটে ৩৬৬ রান তুলেছিল দলটি। এদিন আবাহনী ব্যাটসম্যানদের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দোলেশ্বর বোলারদের বোলিং বিশ্লেষণটা ভদ্রোচিত থাকেনি। সালাউদ্দিন সাকিল ২ উইকেট নিয়ে সফলতম হলেও তিনি ১০ ওভারে ৮১ রান দিয়েছেন। অপর উইকেট পাওয়া ফরহাদ রেজা ৯ ওভারে খরচা করেছেন ৮০ রান। তবে এর মধ্যেই দারুণ ইকোনমি ছিল শরীফুল্লাহর, তিনি ১০ ওভারে ৪৮ রান দেন।
জবাব দিতে নেমে মাত্র ৩৩ রানে দুই উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়েছিল দোলেশ্বর। কিন্তু তৃতীয় উইকেটে দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে দলকে জয়ের পথেই রাখেন ফজলে ও মার্শাল। তারা ২০৭ রানের জুটি গড়েন। ৮৭ বলে ৯ চার, ৪ ছক্কায় ১০০ রান করে ফজলে তাসকিন আহমেদের শিকার হলে হাফ ছেড়ে বাঁচে আবাহনী। তবে তখনও মার্শাল উইকেটে ছিলেন। তিনিও ৮৮ বলে ৯ চার, ৩ ছক্কায় ১০৮ রান করে ফেলেন। তবে ৩৪.১ ওভারে ৩ উইকেটে ২৪৪ রান তোলার পর বৃষ্টিতে আর খেলা হয়নি। শেষ পর্যন্ত আবাহনীকে বৃষ্টি আইনে জয়ী ঘোষণা করা হয় ২০ রানে। পতন ঘটা ৩টি উইকেটই শিকার করেছেন তাসকিন, তবে ৬ ওভারে ৬২ রান দিয়েছেন তিনি। মাশরাফি উইকেট নিতে না পারলেও ৭ ওভারে মাত্র ৩৪ রান দিয়ে সবচেয়ে মিতব্যয়ী ছিলেন আবাহনী বোলারদের মধ্যে।
স্কোর ॥ আবাহনী ইনিংস ॥ ৩৯৩/৪; ৫০ ওভার (বিজয় ১২৮, শান্ত ১২১, বিহারী ৬৬, মিঠুন ৪৭*; শাকিল ২/৮১, ফরহাদ ১/৮০)।
দোলেশ্বর ইনিংস ॥ ২৪৪/৩; ৩৪.১ ওভার (মার্শাল ১০৮*, ফজলে ১০০; তাসকিন ৩/৬২)।
ফল ॥ ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে আবাহনী ২০ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা ॥ এনামুল হক বিজয় (আবাহনী)।