ভেরিকোস ভেইন প্রতিরোধের উপায়
শিরা হচ্ছে সে সকল রক্তনালী যারা সারা শরীর থেকে দূষিত রক্তকে পরিশোধিত করার জন্য হৃদপিণ্ডে নিয়ে যায়।
যখন এই কাজে বাঁধার সৃষ্টি হয় তখন রক্ত স্থির হয়ে থাকে এবং রক্তনালী ফুলে ওঠে। এই স্ফীত শিরাগুলোকেই ভেরিকোস ভেইন বলে। এরা শরীরের যেকোন স্থানেই হতে পারে, তবে পা ও উরুতেই বেশি দেখা যায়। এই সমস্যাটি দূর হতে বেশ সময় লাগে। যেহেতু পা হৃদপিণ্ড থেকে বেশ দূরে থাকে এবং মধ্যাকর্ষণ এর বিপরীতে রক্ত প্রবাহিত হতে অতিরিক্ত প্রচেষ্টা চালাতে হয়। তাই শরীরের অন্যান্য অংশের চেয়ে পায়েই রক্ত স্থির হয়ে থাকে বেশি। কিছু প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে এই সমস্যাটির সমাধান করা যায়। আজকের ফিচারে আমরা ভেরিকোস ভেইন এর সমস্যাটি সমাধানের কিছু প্রাকৃতিক উপাদানের কথা জানবো।
১। ম্যাসাজ
আক্রান্ত স্থানটি যতোটা সম্ভব উপরের দিকে উঠিয়ে রাখুন, এতে রক্ত চলাচলে সুবিধা হবে। যদিও এটি করা সব সময় সম্ভব হয়না। তাই আক্রান্ত স্থানে ম্যাসাজ করা আপনাকে সাহায্য করবে রক্তকে সঠিক পথে প্রবাহিত করতে এবং রক্তনালীতে স্থান তৈরি করতে।
২। ডায়েট নিয়ন্ত্রণ করা
হোমোসিস্টিন নামক একটি অ্যামাইনো এসিড হৃদরোগের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে। শরীরে এর উচ্চমাত্রার উপস্থিতি রক্তনালীর প্রান্তগুলোর ক্ষতি করতে পারে এবং ভেরিকোস ভেইন হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে। এছাড়া ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এর ঘাটতির কারণেও হোমোসিস্টিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। তাই ভিটামিন, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ফলিক এসিড, ফোলেট সমৃদ্ধ খাদ্য যা পাওয়া যায় কলা, ব্রোকলি, আলু, ডিম, অ্যাভোকাডো এবং সূর্যমুখীর বীজে, তা গ্রহণ করলে এই সমস্যা মোকাবেলায় সাহায্য করবে।
৩। ব্যায়াম
শারীরিকভাবে শক্তিশালী থাকলে রক্ত চলাচল ভালোভাবে হয় যা ভেরিকোস ভেইন নিরাময়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে পায়ের কাফ মাসলের নড়াচড়া হওয়া প্রয়োজন। অলসভাবে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে।
৪। অলিভ অয়েল
আক্রান্ত স্থানে অলিভ অয়েল ব্যবহার করলেও রক্ত চলাচলের উন্নতি ঘটে এবং প্রসারণের ফলে সৃষ্ট ইনফ্লামেশন কমাতে সাহায্য করে। অলিভ অয়েলকে সামান্য গরম করে নিন এবং ভিটামিন ই এর সাথে যোগ করে ব্যবহার করুন।
৫। রসুন
রসুনের তীব্র গন্ধ ছাড়া এর সকল উপাদানই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এটি শুধু ইনফ্লামেশনই কমাতে পারে না বরং শরীরকে বিষমুক্ত হতেও সাহায্য করে বলে রক্ত চলাচল সহজ হয়। রসুনের ৩ টি কোয়ার রসের সাথে অলিভ অয়েল মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগালে দ্রুত ফল পাবেন।
৬। বাঁধাকপি
বাঁধাকপি ভিটামিন ও খনিজে সমৃদ্ধ। বাঁধাকপি সালফারে সমৃদ্ধ ফলে ব্যথা থেকে মুক্ত হওয়া যায়। আক্রান্ত স্থানে এটি প্রয়োগ করে বা খেয়ে দেখতে পারেন, অনেক পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন।
৭। অ্যাপল সাইডার ভিনেগার
অ্যাপল সাইডার ভিনেগার রক্ত চলাচলের উন্নতি ঘটায় এবং শিরার স্ফীতি কমায়। পানির সাথে ২ চামচ অ্যাপল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে পান করতে পারেন বা আক্রান্ত স্থানে লাগাতে পারেন।