‘ঘর থেকে বেরিয়ে দেখি দাউ দাউ করে জ্বলছে মায়ের শরীর’
‘ঘুম ভেঙে গেলে উঠে পাশের ঘরে গিয়ে দেখি, মা বিছানায় নেই। মাকে খুঁজতে ঘর থেকে বেরিয়ে শৌচাগারের সামনে আসতেই দেখি দাউ দাউ করে জ্বলছে মায়ের পুরো শরীর। চোখের সামনে মাকে জ্বলতে দেখে চিৎকার করে ওঠি।’
সোমবার রাতে কলকাতার রাজাবাগান থানা এলাকার লেনিন রোডে নিহতের মেয়ে বৃথিকা এ তথ্য জানান। নিহতের মায়ের নাম পদ্ম সাহা (৪৯)। খবর আনন্দবাজারের।
পুলিশ সূত্র জানায়, জেড-৩৯ লেনিন রোডের ছোট্ট ঘরে ৭০ বছরের মা, স্ত্রী পদ্ম এবং মেয়ে বৃথিকাকে নিয়ে থাকেন বিজয় কুমার সাহা। তিনি পেশায় ভ্যানচালক।
সম্প্রতি যক্ষ্মায় আক্রান্ত হওয়ায় বিজয় বাবু আর ভ্যান চালাতে পারতেন না। ফলে আর্থিক অনটন দেখা দিয়েছিল সংসারে। আর তা নিয়েই চিন্তায় থাকতেন পদ্ম দেবী। পরিস্থিতি এমন অবস্থায় পৌঁছায় যে, পদ্ম দেবী অবসাদে চলে গিয়েছিলেন।
নিহতের পরিবার জানায়, সোমবার রাত ১১টার দিকে পদ্ম দেবী তার স্বামী ও শাশুড়ির সঙ্গে একই ঘরে শুতে যান। রাত সোয়া ৩টা নাগাদ মেয়ে বৃথিকার ঘুম ভেঙে গেলে তিনি ওঠে পাশের ঘরে গিয়ে দেখেন, মা বিছানায় নেই। মাকে খুঁজতে ঘর থেকে বেরিয়ে শৌচাগারের সামনে আসতেই তিনি দেখেন, পদ্ম দেবীর গোটা শরীর দাউ দাউ করে জ্বলছে। চোখের সামনে মাকে জ্বলতে দেখে চিৎকার করে ওঠেন মেয়ে। সেই শব্দে ঘুম ভেঙে যায় বিজয় বাবু ও তার বৃদ্ধা মায়ের। চিৎকার শুনে ছুটে আসেন পড়শীরাও।
তাদের সাহায্যে পদ্ম দেবীকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু ততক্ষণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানায়, পদ্ম দেবী আত্মঘাতী হয়েছেন। তবে মৃত্যুর পেছনে অন্য কোনো রহস্য রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে লালবাজারের গোয়েন্দা দফতরের সায়েন্টিফিক উইংয়ের পাশাপাশি ফরেনসিক পরীক্ষার জন্যও আবেদন করা হয়েছে। দেহ পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তে। রিপোর্ট পেলেই সঠিক তথ্য জানা যাবে