fbpx

গেঁটে বাত(Gout)-এর লক্ষণ ও প্রতিরোধে করনীয়

‘গেঁটে বাত’ বা গাউট এমনই একটা রোগ, যা অসুস্থতা নির্ণয়ের পাশাপাশি বুঝিয়ে দেয় রোগীর আর্থিক সামর্থ্য কতটুকু।

কারণ সোজাসাপ্টা কথা, না খাওয়া, অভাবী বা অপুষ্টির শিকার কোনো মানুষেরই কখনও গেঁটে বাত রোগটি হয় না। তাই বলা যায়, এ রোগটি তথাকথিত একটি রোগ। গেঁটে বাত কিন্তু মহিলাদের চেয়ে পুরুষদেরই বেশি হয়। এবং সাধারণত মধ্য বয়সে এ রোগটির আবির্ভাব ঘটে। এমনকি ষাট-সত্তর বছর বয়সেও এ রোগ হতে পারে।

এই তথ্যগুলোর ওপর ভিত্তি করে বাতকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়।

ক) প্রাইমারি বাত বা গাউট: যা প্রধানত ছেলেদের হয় এবং প্রদাহজনিত কারণই এই রোগ সৃষ্টির মূল কারণ। সাধারণত ৪০ বছর বয়সের উপরে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি।

খ) সেকেন্ডারি গাউট : এটি মূলত কিডনি বিকলতার কারণে অথবা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় হয়ে থাকে। এটি অবশ্য মহিলাদের ক্ষেত্রে বেশি এবং সাধারণত ৬৫ বছরের বেশি বয়সে দেখা যায়।যেসব স্হানে হয় ঃ

ক) গোড়ালির জয়েন্ট; 

খ) মধ্য পায়ের জয়েন্ট;

গ) হাঁটুর জয়েন্ট;

ঘ) হাতের ছোট ছোট জয়েন্ট;

ঙ) কব্জির জয়েন্ট;

চ) কনুইর জয়েন্ট।

 

 

প্রধান প্রধান লক্ষণ বা উপসর্গসমুহ নিম্নে বর্ণনা করা হলঃ

  • হঠাৎ ব্যথা শুরু হয়ে ২ থেকে ৬ ঘন্টার মধ্যে তীব্র আকার ধারণ করতে পারে।
  • প্রায়শই ভোরবেলায় তীব্র ব্যথায় রোগীর ঘুম ভেঙ্গে যেতে পারে।
  • এর সাথে জ্বর ও অবসাদগ্রস্ততা থাকতে পারে।
  • ব্যথা কমে গেলে আক্রান্ত স্থান চুলকায় ও চামড়া উঠে যেতে পারে।
  • ব্যথা এতই তীব্র হয় যে রোগী পায়ে মোজা পরতে পারেনা, আক্রান্ত জয়েন্ট বেশ ফুলে যায় এবং চামড়া চকচকে লাল হয়ে যায়।
  • ৫ থেকে ৬ দিন পর এমনিতেই ভালো হয়ে যায়।
  • কেউ কেউ একবার আক্রান্ত হবার পর দ্বিতীয়বার আর আক্রান্ত হয় না আবার অনেকেই কয়েক বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হতে পারে।
  • এক বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হলে সেক্ষেত্রে ক্রনিক গাউটে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং এতে জয়েন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হবার আশঙ্কা থাকে।
  • দীর্ঘদিন রক্তে ইউরিক এসিডের মাত্রা বেশি থাকলে কিডনিতে পাথর হতে পারে।
  • জয়েন্ট ও এর আশেপাশের টিস্যুতে ক্রিস্টাল জমা হয়ে নডিউল বা দলা বা টোফাস তৈরি করতে পারে। আবার টোফাসে ঘা হতে পারে, সংক্রমণ হতে পারে কিংবা প্রদাহের ফলে পুঁজ বের হতে পারে।
  •                                                                                                                                                                         প্রতিরোধে করনীয়

    (ক) মদ না খাওয়া, ডায়েটিং করার নামে খাওয়া দাওয়া একেবারে ছেড়ে না দেওয়া। প্রচুর পরিমাণে নিয়মিত পানি পান করা যাতে অন্তত কিডনি স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারে। নিয়মিত ব্যয়াম করলে অনেক সময় এই গেঁটে বাত রোগ হতে বাঁচতে পারা যায়।

    (খ) বেশি তেল-মশলা যুক্ত এবং বেশি প্রোটিন যুক্ত খাবার পরিহার করা।

    গ) ওজন কমানোর জন্য বা অন্য কোনো কারণে দীর্ঘমেয়াদি উপোস থাকা উচিত নয়।

    ঘ) প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়া দরকার প্রতিদিন। অবশ্য যারা হার্ট কিংবা কিডনির রোগে ভুগছেন তাদের জন্য এ পরামর্শ নয়।

    ঙ) খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে। যে সব খাদ্য শরীরে মেদ বা ওজন বাড়ায়, তা একেবারেই বর্জন করতে হবে।

    চ) রেড মিট মানে অতি লাল মাংস, শুকনো সিম, মটরশুটি, কচু, লাল পুঁইশাক এবং সি-ফুড পরিহার করা উচিত।

    ছ) একেবারে ২৪ ঘণ্টা শুয়ে-বসে থাকলে চলবে না। পরিমিত ব্যায়াম করতে হব

    currentbdnews24.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *