fbpx

ইসরায়েলি সৈন্যকে চড়-মারা সেই ফিলিস্তিনি তরুণী ঘরে ফিরেছেন

একজন ইসরায়েলি সৈন্যকে লাথি ও চড় মারার দায়ে আট মাস কারাভোগের পর মুক্তি পেয়েছেন ফিলিস্তিনি তরুণী আহেদ তামিমি।

ওই ঘটনার পরপরই গ্রেফতার হয়েছিলেন তামিমি ও তার মা। আর ওই ঘটনার ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে যায় সারা পৃথিবীতে। এই কারণে তার বিচার এবং শাস্তি হয়ে ওঠে সবার আলোচনার বিষয়।

আট মাসের কারাভোগের সময় এই ১৭ বছরের তরুণী পরিণত হন ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনের নতুন প্রতীকে। তামিমির মুক্তির মুহূর্তটির জন্যেই অপেক্ষায় ছিলেন আহেদ তামিমির পরিবারসহ ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষ। তাকে স্বাগত জানানোর জন্য জেলের বাইরে জনতার ভিড় জমে যায়। পরিচিতজনরা তাকে সাদরে বরণ করে নেন, জড়িয়ে ধরেন, শুভেচ্ছা জানান।

এ সময় অনেকে ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধ আন্দোলনের পক্ষে শ্লোগান দিচ্ছিলেন। সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে আহেদ তামিমিকে ছোট একটি বক্তৃতাও দিতে হয়।

বাড়ি ফিরে নিকট আত্মীয়দের সঙ্গে তামিমির কুশল বিনিময়। ছবি: সংগৃহীত
বাড়ি ফিরে নিকট আত্মীয়দের সঙ্গে তামিমির কুশল বিনিময়। ছবি: সংগৃহীত

আহেদ তামিমি বলেন, ‘আজ যারা এখানে সমবেত হয়েছেন তাদের সবাইকে আমি ধন্যবাদ দিচ্ছি। আমি আশা করি সবাই সংবাদ সম্মেলনে আসবেন, যেখানে আমি আমার বার্তা তুলে ধরব। শুধু তাই নয়, আমি কারাগারের অন্য যারা নারী বন্দী ছিলেন তাদের বার্তাও তুলে ধরব। তারা চেয়েছেন যেন আমি তাদের হয়ে কথা বলি।’

গত বছর ডিসেম্বর মাসে সেই ইসরায়েলি সৈন্যকে চড় মারার ঘটনা আহেদ তামিমিকে সারা দুনিয়ায় বিখ্যাত করে তোলে। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন তার মা নারিম্যান তামিমি। তাদের বাড়ির বাইরেই ঘটেছিল ওই ঘটনাটি।

ঘটনার ঠিক ঘণ্টাখানেক আগে ওই সৈন্যরাই আহেদ আমিমির ১৫ বছর বয়সী চাচাতো ভাইয়ের মাথায় রাবার বুলেট দিয়ে গুলি করে। ওই ঘটনার পর থেকে ফিলিস্তিনিদের চোখে রীতিমত একজন বীরে পরিণত হন আহেদ তামিমি।

তবে ইসরায়েলিরা তার এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে প্রচারণা চালানোর অভিযোগ আনে। আহেদ তামিমির বাবা বাসেম তামিমিকেও একজন ফিলিস্তিনি আন্দোলনকারী বলা হলেও তিনি একথা অস্বীকার করেছেন।

বাসেম তামিমি বলেন, ‘প্রতিরোধ করাই তো স্বাভাবিক। প্রতিরোধ না করাটাই বরং অস্বাভাবিক। আপনি যদি দখলদারির বিরুদ্ধে চুপ করে থাকেন, তাহলে আপনার মনে অপরাধবোধ তৈরি হতে বাধ্য। আমরা আমাদের মর্যাদা আর অধিকারের জন্য যুদ্ধ করছি।’

ইসরায়েলি সৈন্যকে চড় দেওয়ার সেই ঘটনাটি। ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েলি সৈন্যকে চড় দেওয়ার সেই ঘটনাটির ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। ছবি: সংগৃহীত

তিনি কী চান যে তার মেয়ে এখন ঘরের মধ্যে নিরাপদে থাক, এ প্রশ্নের জবাবে বাসেম তামিমি বলেন, ‘ঘর কি নিরাপদ? আমার তো মনে হয় না। ফিলিস্তিনে নিরাপদ জায়গা কোথায়? আমি জানি না।’

আহেদরা যেখানে থাকেন সেই গ্রামের নাম নাবি সালেহ। গ্রামটিতে দীর্ঘদিন ধরেই ইসরাযেলি-ফিলিস্তিনি সংঘাত চলছে।

ওই গ্রামেরই ফিলিস্তিনিদের জমির ওপর তৈরি করা হয়েছে একটি ইসরায়েলি বসতি, এবং এখানকার ফিলিস্তিনি বাসিন্দারা প্রতি সপ্তাহেই বিক্ষোভের আয়োজন করেন।

বিবিসির সংবাদদাতা নিদা ইব্রাহিম জানান, আহেদ এবং তার মা জেলে থাকার সময় বাসেম তামিমি তার বাড়িটির কিছু অংশ পুনঃনির্মাণ করেছেন তাদের মুক্তির প্রস্তুতি হিসেবে। আহেদ ফিরে এসেছেন নতুন বাড়িতে এক নতুন বাস্তবতায়। এখন তিনি ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনের এক নতুন মুখ, নতুন প্রতীক।

https://currentbdnews24.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *