ডানহাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান
আফতাব আহমেদ, একটি ঝরে পড়া তারা….
আফতাব আহমেদ চৌধুরী (জন্ম নভেম্বর ১০, ১৯৮৫, চট্টগ্রাম) বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ডানহাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান এবং ডানহাতি স্লো মিডিয়াম পেস বোলার। টেস্ট খেলায় তার অভিষেক হয় ২০০৪ সালে চট্টগ্রামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। আর একদিনের খেলায় অভিষেক হয় একই বছর বার্মিংহামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে।
প্রাথমিক জীবন
আফতাবের জন্ম ও শৈশব কেটেছে চট্টগ্রামে। তার প্রথম বিদ্যালয় সেন্ট মেরি স্কুল। শুরুর দিকে আফতাবের আন্তর্জাতিক খেলার প্রতি তেমন টান ছিল না, এমনকি তিনি এটাকে নির্যাতন বলেও মনে করতেন। পরিবার ও বন্ধুবান্ধব থেকে দূরে থাকতে হবে ভেবে তিনি বিকেএসপিতে ভর্তি হতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। কিন্তু তার পিতা ক্রীড়ামোদী ছিলেন এবং তার ছেলেকে ক্রিকেটার বানাতে অত্যন্ত উৎসাহী ছিলেন। তিনি তার ক্রিকেটীয় জীবন সম্পর্কে উৎসাহী ছিলেননা এবং তার ক্রিকেট ক্যাম্প থেকে পালিয়ে আসার ঘটনাও রয়েছে। দলে সুযোগ না পাওয়ার কারণে তার মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হয়েছিল। তিনি বলেন, “আমি অনেক বার ক্যাম্পে ডাক পেয়েছিলাম, কিন্তু কখনো দলে ঢুকতে পারিনি”। শেষ পর্যন্ত প্রতীক্ষার অবসান ঘটে এবং তিনি দলে সুযোগ পান। তার পিতা ১৯৯৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ চলাকালে মারা যান।
আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার
ক্যারিয়ার রেকর্ড
টেস্ট
- টেস্ট অভিষেক: বিপক্ষ নিউজিল্যান্ড, এম এ আজিজ স্টেডিয়াম, ২০০৪
- টেস্টে সর্বোচ্চ রান ৮২*, বিপক্ষ ইংল্যান্ড, চেস্টারলি স্ট্রীট, ২০০৫
একদিনের আন্তর্জাতিক
একদিনের খেলায় অভিষেক: বিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা, বার্মিংহাম, ২০০৪-২০০৫
- একদিনের আন্তর্জাতিকে সর্বোচ্চ রান ৮১*, বিপক্ষ জিম্বাবুয়ে, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম, ২০০৪-২০০৫
- সেরা বোলিং ৩১ রানে ৫ উইকেট (৫/৩১), বিপক্ষ নিউজিল্যান্ড, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম
আইসিএলে ঢাকা ওয়ারিয়রস দলের হয়ে একটি মৌসুম খেলার পর তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং তার আবেদনের প্রেক্ষিতে বিসিবি তার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। ফিরে এসে দেশের মাটিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে ডাক পান। তিনটি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে তার সংগ্রহ ছিল যথাক্রমে ২, ৪, ৪৬। ৮০ বলে ৪৬ রানের ইনিংসটিই ছিল লাল-সবুজের জার্সি গায়ে তার সর্বশেষ ওডিআই ইনিংস। সর্বশেষ টেস্টও খেলেন এই ইংল্যান্ড সিরিজেই। এরপর ২০১০ সালের ৫ মে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে জাতীয় দলের হয়ে শেষবার মাঠে নামেন এই অলরাউন্ডার।
অনেক দিন দলের বাইরে থাকায় ব্যাটে মরচে ধরে গিয়েছিল। ঠিক আগের মত মারকুটে ফর্মটা ফিরে পাচ্ছিলেন না, নতুন নতুন ট্যালেন্টের ভিরে জাতীয় দলের একাদশেও জায়গা মিলছিল না। ২০১৪ এর আগস্টে তিনি ২০১৪-১৫ মৌসুম শেষে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর নেবার ঘোষণা দেন। সর্বশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ব্রাদার্স ইউনিয়নের হয়ে খেলে ক্যারিয়ারের ইতি টানেন। স্বল্পদৈর্ঘ্যের ক্যারিয়ারে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপিয়ে আফতাব আহমেদ খেলেছেন ৮৫টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ, খেলেছেন ১৬টি টেস্ট ও ১১টি টি২০।
এখন কেমন আছেন তিনি?
আছেন ক্রিকেট নিয়েই। ফিরে গেছেন নিজের শহরে, ২০১৫ এর ফেব্রুয়ারিতে খুলেছেন নিজের আফতাব আহমেদ ক্রিকেট অ্যাকাডেমি। ব্যাটিং ইমপ্রুভমেন্ট, বোলিং মেশিন, ফিটনেস ডেভেলপমেন্ট ও ভিডিও অ্যানালাইসিসসহ অত্যাধুনিক সব সুযোগ-সুবিধাই আছে এই ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে। সেখানে কিশোরদের কাছে বেশ জনপ্রিয় আফতাব ভাই। এখন তিনি বয়সভিত্তিক কোচিং দিয়ে ভালো কিছু খেলোয়াড় গড়ে তোলে দেশের ক্রিকেটকে আরও সমৃদ্ধ করতে চান। ভবিষ্যতে জাতীয় দলের ব্যাটিং কোচ হবার ইচ্ছেও রয়েছে তার।
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
|